বুদ্ধিতে সেরা বিজ্ঞানীরাই...

সমাজে একজন মানুষ আর একজনের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন, কেন হঠাৎ অদ্ভুত আচরণ করেন ? সেই থেকেই সাইকোলজি নিয়ে জানার ইচ্ছের শুরু। মানুষকে জানার চেষ্টা তাঁর আজও অব্যাহত। একইসঙ্গে যাঁরা নিজের মনের গোলকধাঁধায় হারিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের ফের দিশা দেখানোর কাজটাও করে যাচ্ছেন মনোবিদ ডঃ অমিত চক্রবর্তী। কথা বললেন বিশ্বজিৎ দাস।

• আপনার জন্ম কলকাতায় ? • হ্যাঁ, কলকাতায়। প্রথমে কিছুদিন উত্তর কলকাতায় ছিলাম। তারপর দক্ষিণে চলে আসি। পড়াশোনার একটা বড় অংশ নরেন্দ্রপুরে। তারপর সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে পড়াশোনা করি।

পড়াশোনা? ফিজিক্সে অনার্স নিয়েছিলাম। পড়তে পড়তেই সাইকোলজি নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়। সে কারণে অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি নিয়ে স্নাতকোত্তর পর্ব শেষ করি। অঙ্ক এবং স্ট্যাটিসটিক্স সঙ্গে থাকায় আমাকে ওরা অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি পড়তে দেয়। একটি পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হই। তারপর এমএসসিতে প্রথম হই। গোল্ড মেডেল পাই। ভালো মনে আছে, আমি ছিলাম '৭৪-এর ব্যাচ।

• কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিটের ক্যাম্পাস থেকে? •• না, না। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ। বিভাগ তখন নতুন । সদ্য চার-পাঁচ বছর হল শুরু হয়েছে। এমএসসি শেষ করে ইউজিসি ফেলোশিপ পাই। পাশাপাশি আবার আইআইএম জোকা থেকে ফেলোশিপও পেয়েছিলাম। আইআইএম-এ তখন সবে একটি প্রোগ্রামে ১২টি ফেলোশিপ শুরু হয়েছে। ১২টির মধ্যে একটি ছিল বিহেভিওরাল সায়েন্সেস। তা নিয়ে পড়তে জোকা গেলাম ।

• একটু অবাক লাগছে, ফিজিক্স পড়তে পড়তে সাইকোলজিতে চলে গেলেন? •• এর পিছনে একটি ইতিহাস আছে। বলা ভালো একজন মহিলা প্রধান শিক্ষিকার আমার জীবনে প্রচুর অবদান রয়েছে। তিনিই প্রথম সাইকোলজিতে আমার আগ্রহ তৈরি করেন। বইপত্র পড়া শুরু করি। আসলে শিক্ষিকা হওয়ার সুবাদে রোজ অসংখ্য ছাত্রছাত্রীর সংস্পর্শে আসতেন তিনি। তাঁদের কথাবার্তা, চলাফেরা সবটাই লক্ষ করতেন। প্রথম সাইকোলজির যে শাখায় আমার ভীষণ আগ্রহ তৈরি হল, সেটি হল সোশ্যাল সাইকোলজি। সমাজে একজন মানুষ আর একজনের সঙ্গে কেমন আচরণ করেন, কেন হঠাৎ অদ্ভুত আচরণ করেন? সেই থেকেই জানার ইচ্ছে শুরু। প্রথমে ফিজিক্সে আগ্রহ ছিল। তারপর সাইকোলজিতে আগ্রহ তৈরি হল। তখন সাইকোফিজিক্স বলে একটা ব্যাপার ছিল। মানে মানুষের বুদ্ধি কতটা, আবেগ কতটা তা টুলস-এর মাধ্যমে মেপে নেওয়া যেত। অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কার কতটা বুদ্ধি এইভাবে বলে দিতে পারব?