ঘুমপাড়ানি খাবার

কফি সম্পূর্ণরূপেই ঘুমের শত্রু। অনুরূপভাবে পান করা যাবে না চা।

- মৌপর্ণা ঘোষ

স্ট্রে সৈ শব্দটার সঙ্গে এখন আমরা সকলেই বিশেষ পরিচিত। অফিসের কাজ, ইঁদুর দৌড়, সন্তানের লেখাপড়া, সংসার, বাড়ি, গাড়ি, মোবাইলের ইএমআই— সব মিলিয়ে উদ্বেগ যেন আমাদের টুটি টিপে ধরছে। স্ট্রেস-এর সবচাইতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমাদের ঘুমে। বিছানায় শুয়ে দু’চোখের পাতা এক করলে কী হবে! ঘুম আসছে কই? রাতের পর রাত কাটিয়ে দিতে হচ্ছে টেনশনে ভুগে। শুধুমাত্র যে উৎকণ্ঠার কারণেই আমাদের ঘুমের সমস্যা হয় এমন নয়। মোবাইল, ল্যাপটপে গেম খেলা কিংবা ওয়েব সিরিজ দেখাও এই প্রজন্মের নিদ্রালোপের অন্যতম প্রধান কারণ। যে ব্যক্তি আগে রাত ১১টার সময় ঘুমিয়ে সকাল ৬টার সময় উঠতেন, তিনিই এখন রাত ১টা বা ২টা নাগাদ ঘুমাতে যান ও সকাল ৭ টায় ওঠেন! এইভাবে চলতে চলতে একসময় ওই ব্যক্তি ক্লান্তি কাটাতে পারেন না। ফলে ঘুম ভাঙতে থাকে আরও পরে। এইভাবে স্ট্রেস, মোবাইলল্যাপটপের বাহ্যিক প্রভাবে বেশিরভাগ মানুষের ঘুমের চক্রের পরিবর্তন ঘটে যায়। মুশকিল হল ঘুমের চক্রের পরিবর্তন ঘটলে শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়িটির কাজকর্মেও তার কু’প্রভাব পড়ে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের প্রত্যেকের শরীরেই রয়েছে একটি অভ্যন্তরীণ ঘড়ি। ওই ঘড়ির কারণেই সকালে আমাদের নিয়মমতো ঘুম ভাঙে ও রাতে ঘুম আসে। ঘড়িটিই বাকি অঙ্গগুলোকে চালিত করে ও সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট হর্মোন ও নিউরোট্রান্সমিটারগুলির ক্ষরণ করায়। এইভাবে আমাদের শরীর কর্মক্ষম থাকে। -

এখন আমরা যদি দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়ির নিয়মমতো না চলি তাহলে তার কু’প্রভাব পড়তে থাকে তা আমাদের শরীরে। কীভাবে? একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট করার আগেই আমাদের দেহে ইনসুলিন হর্মোনের ক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। ইনসুলিন হর্মোনটি বিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে। আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়িটি জানে, তার মালিক সকাল ৭টা নাগাদ জাগে। সুতরাং সে সেইরকমভাবেই নির্দিষ্ট সময়ে ইনসুলিন ক্ষরণ করতে শুরু করে।