মৃগী রোগ সারিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব

খিঁচুনির তীব্রতা, কতক্ষণ ধরে হল, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ সবই লিখে রাখা দরকার ডায়েরিতে। ডাক্তারবাবুর তাহলে রোগ নির্ণয় করতে অনেক সুবিধা হবে। লেখক রামকৃষ্ণ সেবা প্রতিষ্ঠানের নিউরোলজিস্ট ●

- ডাঃ অংশু সেন

মৃগী কী? ●● • মৃগী হল মস্তিষ্কের এক জটিল ব্যাধি। ‘চমকে চকিত ছন্দ’—হ্যাঁ, চকিতেই এই রোগ দেখা দিতে পারে, চমকে দিতে পারে। এটি এমন একটি স্নায়বিক রোগ (Neurological Disorder) যাতে খিঁচুনি হয়। ‘আমার তিন বছরের ছেলের জ্বর হলেই হাত পা ঝাঁকিয়ে মুখ বেঁকে যায়'—অনেক বাবা মা এই সমস্যা নিয়ে আসেন। কেউ আবার মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের পরে খিঁচুনি নিয়ে হাসপাতালে আসেন। আবার অল্পবয়সি কোনও ছেলের হয়তো ক্লাসরুমে বোর্ডের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে লিখতে লিখতে লেখা থেমে গিয়ে হাত থেকে পেন পড়ে গেল। এইরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে যা মৃগীরোগের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে। ●

মস্তিষ্কের কোষগুলি একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে পরস্পরের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে আমাদের সক্রিয় রাখে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখে। যখন মস্তিষ্কের উদ্দীপক ও নিবৃত্তিকারক রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য বজায় থাকে না, তখনই ছন্দপতন ঘটে। অত্যধিক বৈদ্যুতিক তরঙ্গ একই সময় উদ্দীপিত হয়ে মস্তিষ্কের এক অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়। শরীরের কর্মকাণ্ডগুলি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে, যার ফলে খিঁচুনি দেখা দেয়। একেই আমরা মৃগী রোগ বা এপিলেপ্সি বলি।

• রোগের লক্ষণগুলি কী কী? • মৃগীরোগের লক্ষণগুলি জানা আবশ্যিক। অকস্মাৎ হাত পায়ের ঝাঁকুনি ও মুখ বেঁকে যাওয়া, অচৈতন্য হয়ে যাওয়া রোগের লক্ষণ হতে পারে। কোনও জিনিস রোগীর হাত থেকে ছিটকে যেতে পারে অথবা অস্বাভাবিক আচার আচরণ দেখা দিতে পারে। এছাড়া চোখ স্থির হয়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে ফেনা

বের হওয়া, জিভ কেটে যাওয়া, শরীর শক্ত হয়ে গিয়ে হঠাৎ পড়ে যাওয়া সবই এক বা একাধিকভাবে এই রোগের উপসর্গ হতে পারে। এছাড়াও ভয় বা উদ্বেগ, যোগাযোগ ও বোঝার সমস্যা রোগের প্রতিফলন হতে পারে। অসুখ শনাক্তকরণের পর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা দরকার।