অবগাহনের পরে

আমরা অন্য ঘরে গিয়ে বসি। কাকুরা এখানে গল্প করুক। উত্তম সলজ্জ ভঙ্গিতে বলল— চলো।

- শ্রীপর্ণা দে

নাচ এসব করতে গিয়েই হাতে সময় থাকে না। তার উপর তিন মাস হল সাঁতার শিখছি। সদ্য জিমনাস্টিকে ভর্তি হয়েছি। আর কাকু তো সারাদিন খবরের কাগজ নিয়ে ব্যস্ত। মা মারা যাবার পর বাবা কলেজ আর ছাত্রছাত্রী নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের বাড়ির লোকের ব্যস্ততার শেষ নেই। তুমিও তো মামাকে নিয়ে যেতে পারো আমাদের লেকটাউনের বাড়িতে। সুরেন বললেন— এই এতক্ষণে তুই আমার ভাইজির মতো একটা কথা বলেছিস! বন্ধুত্বে গরিব-বড়োলোক বলে কথা হয় না। বুদ্ধর আর আমার বন্ধুত্ব সেই তোমার বিয়েরও আগে থেকে। হাবড়ায় যখন মামা থাকতেন তখন বুদ্ধর সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়। সে কি আজকের কথা, তখন আমরা দু'জনেই স্কুলে পড়ি।

রত্না ছদ্মরাগ দেখিয়ে বলল— আপনার সঙ্গে দাদা তর্ক-বিতর্কে পারা যাবে না। আমি বরং কিছু বানিয়ে নিয়ে আসি। এতদিন পর মেয়েটা এল। আপনি ঠাকুরঝির সঙ্গে গল্প করুন। অতিথি আপ্যায়নের উদ্দেশ্যে রত্না রান্নাঘরে চলে গেল। উত্তম মিলির দিকে কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। সদ্য যৌবনে পা দেওয়া মেয়ে মিলি। বাহ্যিক আড়ম্বর ব্যতীত দেখতে নিঃসন্দেহে সুন্দরী। তন্বী চেহারা। পরনে সাদা রঙের হাঁটু পর্যন্ত সুতির ট্রাউজার আর কালো স্লিভলেস টি-শার্ট। গায়ের রং ফর্সা তা সচেতন ভাবে জানান দেবার জন্যই বোধ হয় কালো পোশাক নির্বাচন। ভরাট গলায় একটা খুব সরু সোনার চেন। ভালো করে না দেখলে সহজে দৃষ্টিগোচর হবে না। বাঁ হাতের মধ্যমায় হিরে বসানো সোনার আংটি। উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চির কাছাকাছি। মুখাবয়বে অনাবিল সারল্য। এ সারল্য গ্রামীণ সারল্যের চেয়েও অধিক কিছু।