প্রবাসের প্রসাদ-পাঁচালি

বাংলার বাইরে দুর্গাপুজোর ভোগের পরাতে আন্তরিকতার ছোঁয়া থাকে একই রকম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভোগের পদে কি ঘটছে বিবর্তন? প্রবাসে ভোগ রান্নার অভিজ্ঞতা থেকে তেমনই কিছু ভোগের পদ সাজালেন ফুড স্টাইলিস্ট ও কালিনারি এক্সপার্ট অনুরাধা দাস।

2 দোরগোড়ায় এসে গেলাম আমরা। বাংলার শহর-গ্রাম-মফস্সলে, পাড়ায়-পাড়ায় পুজোর প্রস্তুতিতে চলছে ফিনিশিং টাচ। এ ব্যাপারে কোনওকালেই পিছিয়ে থাকেন না প্রবাসী বাঙালিরাও। আয়োজনে যদি আড়ম্বর না-ও থাকে, দেবী-আরাধনায় তাঁদের আন্তরিকতার ঘাটতি হয় না মোটেই! নিষ্ঠা, ভক্তি এবং মনের শুদ্ধতায় একতিলও পরিবর্তন আসে না। পরিবর্তন— বা বলা ভাল, বিবর্তনঘটেছে ভোগের থালায়। চিরকালীন ভোগের পদের পাশাপাশিই সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে চিলি পনির বা স্টার অ্যানিস ফ্রায়েড রাইস। পেঁয়াজ-রসুনের জায়গায় স্বাদ সৃষ্টি করছে আদা, কাঁচালঙ্কা, তিলবাটা, কর্ন বা গাজরের মতো সবজি। নিজেদের প্রিয় পদই রেঁধেবেড়ে দেবীকেও নিবেদন করছেন তাঁরা। আবার চিরাচরিত লাবড়া বা নাড়ু-পায়েসও বাদ যায় না। দশমীর ভোগে তামার পরাতে দেওয়া হয় আলোচালের ভাত আর কচুর শাক— মা যাতে হালকা কিছু খেয়ে ফেরার পথে রওনা দিতে পারেন, সে জন্য। তেমনই কিছু পদ রইল। হাঁটি-হাঁটি, পা-পা করে আরও একটা পুজোর -

কচুর শাক ও পান্তাভাত উপকরণ: গোবিন্দভোগ চালের ভাত পরিমাণমতো, কচুর শাক ২ আঁটি, মাঝারি নারকেল ১টা (কুরনো), কাঁচালঙ্কা ৪টে, সর্ষের তেল ৫০ গ্রাম, চিনি ১ টেবলচামচ, নুন /৩ চা-চামচ।

প্রণালী: গোবিন্দভোগ চালের ভাতে জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন আগের রাতে। কচুর শাক নুন দিয়ে সেদ্ধ করে, জল ঝরিয়ে রাখুন। সর্ষের তেল গরম করে, নারকেল আর কাঁচালঙ্কা ভেজে, লাল করে নিন। শাক দিন। নুন আর চিনি মেশান। নাড়াচাড়া করে রেঁধে, শুকনো করে নিলেই কচুর শাক তৈরি। এই রান্নায় সর্ষেদানা ব্যবহার করা হয় না। কারণ সর্ষেদানাকে তামসিক মনে করা হয় বলে, তা ভোগের রান্নায় যায় না।