
নারী সম্পর্কে যত মধুর আর কোমল বিশেষণ প্রচলিত, তার সম্পূর্ণ বিপ্রতীপে এই দেবী। তাই প্রসাধিত, শোভন নাগরিক সমাজের বরাবর কালীকে নিয়ে অস্বস্তি। তাঁরা তাই শ্রীরামকৃষ্ণকে কালীপূজারি হিসেবে প্রাথমিক ভাবে অবজ্ঞা করেছেন। ভগিনী নিবেদিতা জনসমক্ষে কালীচর্চা করলে ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের মতো পাশ্চাত্য বিজ্ঞানে দীক্ষিত মানুষেরা হায় হায় করে উঠেছেন, ‘আমরা এই সকল কুসংস্কার দেশ থেবে তাড়াবার চেষ্টা করছি, আর আপনারা বিদেশিরা আবার সেই সব বিষয় প্রচার করতে উঠে পড়ে লেগেছেন!' সংস্কৃতিবান আদি ব্রাহ্মসমাজে যখন ভাটার টান, তখন তার নব্য প্রজন্মের সদস্যদের যে স্বাভাবিক আকর্ষণ ছিল বিবেকানন্দের প্রতি, সেখানেও একাত্ম হতে বাধা এই কালী এবং কালীপূজারি রামকৃষ্ণের প্রতি স্বামীজির আনুগত্য।
জীবনপণ করে সিদ্ধিলাভ বাস্তবিক, সাধক রামপ্রসাদকে মনে রেখেও বলি, আধুনিক ভারতবর্ষে কালী পূজন-ধারার ভগীরথ শ্রীরামকৃষ্ণ। আশ্চর্য আবেগ-বিহ্বল তাঁর কালী সাধন পর্ব।
প্রায় এক বছর ধরে তাঁর মুখে শুধু মা-মা-মা। কালীর পূজা, ধ্যান, ভজন, প্রার্থনায় সমস্ত দিন যেন এক ঘোরের মধ্যে কেটে যেত। সন্ধে হলে দারুণ আক্ষেপে তিনি ভেঙে পড়তেন, 'আরও এক দিন গেল, আজও তাঁর দেখা পেলাম না!' হৃদয় মোচড়ানো কান্নায় তিনি খানখান হতেন। এমন এক আবেগঘন মুহূর্তে একদিন জীবন বাজি রেখে তিনি দৌড়ে গেলেন দেবী মূর্তির হাতের খাঁড়াটির দিকে, আর রাখবেন না এই ব্যর্থ জীবন। কিন্তু সেটি স্পর্শ করার আগেই তিনি দেখতে পেলেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত মা কালীর বরাভয় রূপ। বারংবার পরাজয়ে মরিয়া হয়ে জীবনপণ এবং তার থেকেই সিদ্ধিলাভ—এই সময়ে দাঁড়িয়ে ভরসা জাগে, এ-ও তবে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার এক স্বীকৃত পথ। আর সেই জয় করায়ত্ব হয়েছিল কোথায়? রাসমণির কালীমন্দিরে। অব্রাহ্মণের দেবালয় প্রতিষ্ঠা সেই সময়ের প্রেক্ষিতে এক বিপ্লব। সেই বিপ্লবের জমিতেই শ্রীরামকৃষ্ণের কালী সাধনা। মনে রাখা দরকার, সেই বিপ্লবে তথাকথিত আধুনিক মানুষের বিচারবোধের সীমাবদ্ধতাকে পর্যুদস্ত করে অব্রাহ্মণ ভক্তের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিল কোনও পাশ্চাত্য শিক্ষার পাঠ নয়, আমাদেরই সনাতন শাস্ত্ৰশ্রীরামকৃষ্ণের অগ্রজ রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মুক্তমনা শাস্ত্র বিচার।
Diese Geschichte stammt aus der November 02, 2024-Ausgabe von Desh.
Starten Sie Ihre 7-tägige kostenlose Testversion von Magzter GOLD, um auf Tausende kuratierte Premium-Storys sowie über 8.000 Zeitschriften und Zeitungen zuzugreifen.
Bereits Abonnent ? Anmelden
Diese Geschichte stammt aus der November 02, 2024-Ausgabe von Desh.
Starten Sie Ihre 7-tägige kostenlose Testversion von Magzter GOLD, um auf Tausende kuratierte Premium-Storys sowie über 8.000 Zeitschriften und Zeitungen zuzugreifen.
Bereits Abonnent? Anmelden

এক অনন্য শিল্পী
উস্তাদ জাকির হুসেন তবলাকে শুধু বাজাননি, তিনি তবলাকে হৃদয়ের ভাষায় রূপান্তরিত করেছিলেন। তাঁর শিল্পীসত্তা ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত ও ফিউশন মিউজিকে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

আখ্যানের দর্পণে প্রতিবিম্বিত সমকাল
গল্পগুলির পাঠ-অভিজ্ঞতা এক অনাবিল আনন্দের সমুদ্রে অবগাহনের সঙ্গে তুলনীয়। ক্যালাইডোস্কোপের মধ্য দিয়ে যেমন রংবাহারি নকশার সৌন্দর্য দেখা যায়, তেমনই গল্পগুলির নতুনত্ব ও গভীরতা উন্মোচিত করে আলোর রোশনাই।

রায় এলেও প্রশ্ন রইল, সন্দেহও
অপরাধী যাতে মুখ খুলতে না পারে, যার ফলে ফেঁসে যেতে পারেন গণ্যমান্যেরা, সে জন্যই কি যেতে হল হাইকোর্টে?

কুম্ভের ক্যানভাসে সমগ্র দেশ দর্শন
শুধু পুণ্যসঞ্চয় নয়। মানুষের গতিপ্রকৃতি ও অন্তচেতনাকে ছুঁয়ে দেখার উদ্দেশে মানুষ চলে এসেছেন কুম্ভের পথে।

নতুন থিয়েটারের ডাক
স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনীতি বোধসম্পন্ন নাট্যকার, কিন্তু কোনও গণনাট্যের ব্যাকগ্রাউন্ড নেই তাঁর। নিজেই বার বার বলেছেন থিয়েটার করতে করতেই তাঁর নাটক লেখায় আসা।

আধুনিক জার্মান সাহিত্যের মশালবাহী
রিলকের কবিতার বিষয়বস্তু নিঃসন্দেহে আধুনিক। এর অভিমুখ আধুনিক সমস্যার আধুনিক সমাধানের দিকে। তাঁর অধিকাংশ কবিতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে অস্তিত্বের সংশয়, অস্তিত্বের সন্ধান আর উদ্বেগময় আকুতি।

বিশ্বশেষের আলো
সমকাল থেকে ১৯৮৪, ১৯৮৪ থেকে ১৯৪৭, সেখান থেকে উনিশ শতকে কাহিনি ফিরতে ফিরতে জাদু বাস্তবতার জাদুর উপাদানটি বেড়েই চলেছে, কোনটা অলীক কোনটা বাস্তব স্থির করা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।

উন্মাদনার স্পর্ধা
তাঁকে আবিষ্কারের প্রচেষ্টা জারি থাকবে আমাদের। কেবল তাঁর চলচ্চিত্র নয়, ঋত্বিকের ছোটগল্প, নাটক, ইংরেজি এবং বাংলা প্রবন্ধ, চিঠিপত্র, এমনকি কবিতাও সেই ল্যাবরেটরির উপাদান

তৃতীয় মৃত্যুর অপেক্ষায়
লুইজি পিরানদেল্লোর এই উপন্যাস ১৯০৪ সালে প্রকাশিত হলেও তার মূল রস ও আত্মা এতটুকুও অপ্রাসঙ্গিক নয়। বিশেষত, যে প্রথমবার পড়ছে তার কাছে কাহিনি, বিশ্লেষণ, ভাষা, সংলাপ, সমস্তই পরিপূর্ণ মনোগ্রাহী।

অবিসংবাদী এক লেখক
ছেলেবেলা থেকেই তাঁর ফুসফুস দুর্বল, এডিনবরার প্রবল শীত ও উত্তর সমুদ্রের ঝোড়ো হাওয়া সহ্য করা তাঁর পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ফলে, তাঁর স্বল্পায়ু জীবনে স্টিভেনসন প্রায়শই পরিযায়ী পাখিদের মতো দক্ষিণগামী।