লিভার ভালো রাখার ভেষজ উপায়

প্রথম লেখক জে.বি.রায় ষ্টেট আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক। দ্বিতীয় লেখক চিকিৎসক এবং আলিগড় আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (উত্তরপ্রদেশ) সহ অধ্যাপক ও চিকিৎসক।

- ডাঃ আব্দুর রহমান ও ডাঃ শ্রীকান্ত পণ্ডিত

লিঃ ভার বা যকৃৎ হল মানব শরীরের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি ও অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে লিভারের ওজন হয় মোটামুটি ১ থেকে ১.৫ কেজি। যে কোনও যন্ত্রের মতো আমাদের শরীরও চলে শক্তির সাহায্যে। এই শক্তি আসে নানা ধরনের খাবার থেকে। আমরা যেভাবে খাবার খাই তা থেকে শরীর সরাসরি শক্তি উৎপন্ন হতে পারে না। বিভিন্ন খাবার যকৃতে প্রক্রিয়াজাত হয়ে শক্তি উৎপাদন করে ও শরীরের কোষে কোষে পৌঁছে দেয়। তাই যকৃৎকে বলা হয় শরীরের ‘পাওয়ার হাউস'।

আমরা যে সব খাবার খাই, এই যেমন— শর্করা, চর্বিজাতীয় পদার্থ, প্রোটিন, খনিজদ্রব্য ইত্যাদি সব ভেঙে প্রক্রিয়াজাত করে যকৃৎ। আবার এই প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উপাদানগুলোকে যকৃৎ শরীরের জন্য ব্যবহার উপযোগী করে তোলে ও নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সরবরাহ করে। মানুষের রক্তের মধ্যে কোয়াগুলেশন ফ্যাক্টর নামে প্রবাহিত অসংখ্য রাসায়নিক রয়েছে, যা রক্তকে সঞ্চালিত করে ও জমাট বাঁধতে দেয় না। এই সব ক’টি কোয়াগুলেশন ফ্যাক্টর শুধুমাত্র যকৃৎ থেকেই তৈরি হয়। তাই রক্তের সঞ্চালন এবং জমাট বাঁধার ক্ষমতা একমাত্র যকৃতের কার্যক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া আমরা যা কিছু খাই না কেন, সেই খাবারগুলোকে পরিপাকতন্ত্রে প্রাথমিক হজমের জন্য পিত্তরস হল অপরিহার্য। পিত্তরস ছাড়া খাদ্যবস্তু হজম করা সম্ভব নয় এবং এই পিত্তরস শুধুমাত্র যকৃত কোষ তৈরি করতে পারে।

আপদকালীন ব্যবহারের জন্য ভিটামিন এ, ডি, ই এবং ভিটামিন-কে যকৃতে জমা থাকে। তাছাড়া প্রয়োজনীয় খনিজ যেমন— আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদিও যকৃতে জমা থাকে। সর্বোপরি যকৃত এতসব কাজ করে থাকে যা বলে শেষ করা যায় না এবং আরও এমন সব কাজ করে যা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।