বার্তাবাহী পারাবত

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ‘দ্য মকার' নামে একটি পায়রা ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বীরের মর্যাদা পেয়ে বিখ্যাত হয়ে যায়।

- সুরজিৎ ধর

১ ৯৫২ সালে নিউইয়র্কে ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের প্রধান টেড কটের সেক্রেটারির কাছে সকালে এক সপ্রতিভ চাকরিপ্রার্থী যুবক হাজির হলেন। দেখতে শুনতে সুন্দর। হাতে তার একটি পাখির খাঁচা। তাতে একটি পায়রা জড়সড় হয়ে বসে আছে। যুবকটি কোনও কথা না বলে, সেই খাঁচাটি টেড কটের সেক্রেটারির সামনে রেখে গটগট করে চলে গেল।

যুবকের এ হেন আচরণে বিস্মিত কটের সেক্রেটারি খাঁচাটি খুলে, পায়রাটির পায়ে বাঁধা একটি কাগজ খুলে দেখেন তাতে লেখা, ‘সম্প্রতি আপনারা প্রোগ্রাম এগজিকিউটিভ পদের জন্য একজন উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন প্রার্থী চেয়েছেন। আমি তাঁর উপযুক্ত কি না এই কাগজে হ্যাঁ কিংবা না-এর উপরে একটি টিক দিয়ে পায়রাটি উড়িয়ে দিলেই আমি যথারীতি পেয়ে যাব।' বলাবাহুল্য সেই পায়রাটির দৌলতে যুবকটি ডাক পেয়ে ইন্টারভিউ ছাড়াই সরাসরি চাকরিটি পেয়ে যায়।

আসলে সভ্যতার সেই ঊষালগ্ন থেকেই মানুষ পায়রার এই আশ্চর্য ক্ষমতার কথা জানতে পেরেছিল। প্রাচীন রোমানরা যুদ্ধযাত্রার কালে তাদের সঙ্গে নিয়ে যেত পায়রার খাঁচা। গ্রিসের ওলিম্পিকের প্রতিযোগীতার ফলাফল বিভিন্ন দেশে চিঠি লিখে পায়রার পায়ে বেঁধে দিয়েই জানাত। শোনা যায় রাজা সলোমন এই কুরিয়ার পায়রার সাহায্যেই রানির সঙ্গে পত্র বিনিময় করতেন। ডাইওক্লিটিয়ান এদের

দিয়ে সে আমলে একটি ডাক ব্যবস্থা চালু করেছিল। ঊনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে ওলন্দাজ গভর্নমেন্টও বাগদাদ থেকে পায়রা সংগ্রহ করে, জাভা ও সুমাত্রার সমর বিভাগ এবং জনসাধারণের মধ্যে সংবাদ প্রেরণের ব্যবস্থা করে। ইরাকের শাসকেরাও তাঁদের বিশাল সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের খোঁজখবর রাখতেন পায়রার মাধ্যমে।