রবীন্দ্র-অনুবাদে অনুভবী স্বর

অগস্টের শেষে কেমব্রিজের শুশ্রূষা সদনে (care-home) যখন তাঁর সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয়, তখনই তাঁকে বেশ কাহিল দেখাচ্ছিল। কথা বলছিলেন কম, খাওয়াদাওয়া নামমাত্র। আমার দেখা করার আধ ঘণ্টার মধ্যেই শোওয়ার ঘরে যেতে চাইছিলেন। উইলিয়াম রাদিচের অন্ত্রে ক্যান্সার হয়েছিল। ডাক্তাররা যা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তার চেয়ে অনেক বেশি দিনই বেঁচেছিলেন। কিন্তু ব্যাধি তার মাশুল নিয়ে ছাড়ল। ১০ নভেম্বর ২০২৪ তিনি আত্মসমর্পণ করলেন অসুখের কাছে।
ঘটনায় একটা বন্ধুত্বের পরিসমাপ্তি ঘটল, যার শুরু হয়েছিল শান্তিনিকেতনে, আটের দশকের শেষে। ১৯৮৫ সালে পেঙ্গুইন বুক্স থেকে প্রকাশিত হল তাঁর রবীন্দ্র-কবিতার অনুবাদ-সঙ্কলন, সিলেক্টেড পোয়েমস, যা সঙ্গে সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের সাহিত্য পরিমণ্ডলে তাঁকে পরিচিত করে তুলল। তিনি শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্র ভবনে এলেন তাঁর অনূদিত কবিতা পাঠ করতে। আমি তখন বইটা কিনে ফেলেছি এবং তা পড়ার পরে তাঁর কাছে হাজির হলাম বইটাতে তাঁর স্বাক্ষর নিতে। তবে তাঁকে ডেকে কথাবার্তা শুরু করতে আমি বেশ সঙ্কোচ বোধ করছিলাম। স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম তাঁকে সমীহ করতে ইচ্ছে করছে আমার।
সেই তখনই উইলিয়াম রাদিচে তাঁর স্মরণীয় কর্মজীবনে প্রথম পদপাত করে ফেলেছেন। তাঁর জন্ম সংস্কৃতিপ্রেমী পরিবারে। মা ছিলেন ল্যাটিনে বিদূষী, পেঙ্গুইন ক্লাসিক্স সিরিজের সম্পাদনা করেছেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের সোয়াস-এ (SOAS: School of Oriental and African Studies) উইলিয়াম প্রথমে ইংরেজি এবং পরে বাংলা পড়েছেন। সহজে ভাষা রপ্ত করার ব্যাপারে তাঁর ছিল অসন্দিগ্ধ প্রতিভা। সুতরাং, এটা একান্ত স্বাভাবিক ছিল যে, সোয়াস-এ তাঁর বাংলা শিক্ষক ড. তারাপদ মুখোপাধ্যায় অবসর নেওয়ার পর তিনি সেখানে বাংলার লেকচারার হয়ে যাবেন। তবে সঙ্গীতেও তাঁর প্রতিভা প্রসারিত ছিল—ছিলেন চোস্ত পিয়ানো-বাদক, ইংরেজির বিশিষ্ট কবি এবং জন্মসিদ্ধ শিক্ষক আর জনমোহিনী বক্তা।
This story is from the December 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the December 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In

পুলকেশীর রত্নভান্ডার
সবাই এসে ঘিরে ধরল ওকে। ছোটকাকা কলার ধরে তুলে আরও কয়েকটা কিল ঘুষি বসিয়ে দিল। মার খেতে খেতে পুলু দেখল ইভাকে। মেয়েটার চোখে খুনে চাহনি। ওকে কি সবাই মেরে ফেলবে!
পাশের বাড়ির মেয়ে
আমায় নাকি তাদের গাঁয়ের রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের কেষ্ট ঠাকুরের মতো দেখতে। কোনও রসিক নাগর তাকে বাড়ি থেকে ভাগিয়ে এনেছিল। ক'দিন ফুর্তি-ফার্তা করে দালালের হাতে বিক্রি করে কেটে পড়েছে।

প্রত্যাবর্তন
সে মাছ নিয়ে বাজারে বসা শুরু করে। কেননা সে লক্ষ করেছিল বাজারে বেশ কিছু মাছওয়ালা সকালে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরে মাছ বেচলেও, বিকেলে গলায় বগলে পাউডার মেখে হেভি ড্রেস দিয়ে বাইকে চেপে ঘোরে।

হারানোর পরের খোঁজ
আত্মীয়স্বজনের কাছে মা হেরে যেতে যেতেও জিতে গেছে, মা তো এখনও সবাইকে বলে, ‘আমার মিতুন ওই পাষণ্ড ছেলেটার কাছ থেকে এক পয়সা নেয়নি। এই জন্য আমরা খেয়ে না-খেয়ে মেয়েকে পড়িয়েছি।'

ছবির নিসর্গ
কত্তামা চোখে আগুন ঢেলে বললেন, “যা তো এখান থেকে। শুধু ছুকছুক করবে।” বড়বৌকে বললেন, “দরজাটা বন্ধ কর তো মা। এই সব আর নিজের কাছে রাখব না। কার্শিয়াং থেকে এসে সব লকারে দিয়ে দেব।”

আলো থরথর, গৃহ প্রতিপক্ষ
সে এদিকেই আসেনি। মাঝে মধ্যে রাতে দরজা খুলে আলো জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছে। বা সকালের আলোয় দেখেছে। দূর থেকে অবলোকন, না-গিয়ে। আজ মুখোমুখি হচ্ছে সে, মাতৃযোনিসদৃশ এক গহ্বরের।

মাত্রা ছাড়ানো দুর্নীতির পরিণতি
সীমাবদ্ধ দলীয় ভাবনার উপরে উঠে ভাবার সময় এসেছে। না হলে এ-রাজ্যে শিক্ষার মানের উপর আস্থা থাকবে না।

নদীর ছায়া
চেহারায় অদ্ভুত এক আবেদন রয়েছে, পড়ন্ত যৌবনের এক শান্ত দিঘি মনে হচ্ছে ওকে, একবার ডুব দিলেই নিস্তরঙ্গ জল আলোড়নে অস্থির হয়ে যাবে। বিপাশার আকর্ষণ তাকে টেনে নিয়ে এসেছে এখানে।

পদাঘাতের আমরা-ওরা
দুর্নীতির কবলে শিক্ষা। শিক্ষকরা প্রহৃত, লাথি মারছে পুলিশ। কবি ব্যস্ত লাথির তুলনায়।

সিঁড়ি
মুন্নাজ্যাঠার বগলে বালিশ বিছানা। আর কাঁধে কাঠের বাক্স। দোতলার বারান্দা থেকে দেখেছিল মোহনা। তারপর অসহায় আক্রোশে কাঁদতে শুরু করেছিল। হারমোনিয়ামটা থেকে গিয়েছিল মোহনাদের ফ্ল্যাটে।