কটু আগেই নেপালবাবু পাগল হয়ে গেলেন। ঘোষবাড়িতে খুশির এ রোল উঠল। ওঁর বড় মেয়ে রত্না আনন্দে প্রায় কেঁদে ফেলে আর কী। ছোট মেয়ে নীপা শীতলা মন্দিরে গেল ডাব দিতে, আর ছেলে কেষ্টা যে কিনা বউ ছেলে নিয়ে মুম্বইতে থাকে, সে খবর পেয়ে বলল, “গণপতি বাপ্পা, মোরিয়া!”
নেপালবাবুর বয়স চৌষট্টি। তাঁদের পরিবারের ছেলেদের যাটের পরই পাগল হয়ে যাওয়ার নিয়ম। ভদ্রলোকের দুই ভাই, যাঁরা তাঁদের পরিবার পরিজন নিয়ে বর্ধমানের মেমারিতে থাকেন। তাঁরা দু'জনেই নিয়মমতো ষাট পেরোতে না পেরোতেই বিন্দুমাত্র আপত্তি না জানিয়ে উন্মাদ হয়ে গেছেন। একজন নেপালবাবুর বড়, আর-একজন ছোট। এখন দেশের বাড়িতে দু’জনে দুটো ঘরে থাকেন, বিড়বিড় করেন আর থেকে থেকেই চুপিচুপি গিয়ে জ্বাল দেওয়া হচ্ছে এমন দুধে এক খাবলা করে নুন ফেলে আসেন।
অথচ এই ট্র্যাডিশন ফলো করতে নেপালবাবুর এত সময় লাগছে কেন, সে নিয়ে তাঁর পরিবারে বিস্তর অশান্তি গেছে গত চার বছর ধরে। ছেলে কেষ্টা তো এই বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে নিউরোলজিস্ট ঋতব্রত দামের কাছে গুছিয়ে দু'ঘা খেয়েও এসেছে। জানতে চেয়েছিল, “আচ্ছা, বাবাকে কোনওভাবে শক থেরাপির মাধ্যমে ঘেঁটে দেওয়া যায় না?” কথা তা নয়। ব্যাপার হচ্ছে, নেপালবাবুর ভাইদের ক্ষেত্রে তাঁদের পরিবারের লোকজন প্রথমত ঘটনাটা নাকি মানতে পারেনি, দ্বিতীয়ত মূর্খের মতো চিকিৎসা করাচ্ছে আর তৃতীয়ত চিন্তিত মুখে পাগল রোগীর সেবা করে যাচ্ছে। মানুষ বলদ হলে কী আর করা।
নেপালবাবুর বড় ভাই গোপালবাবুর ছেলে সুশোভন— যার কিনা মেমারি স্টেশনের বাইরে মোবাইলের দোকান আছে— রোজ বিকেলবেলা নাকি পাগল বাপের হাত ধরে আলের ধার দিয়ে দিয়ে হেঁটে বেড়ায়, পাড়ুইদের দিঘিতে বখতিয়ারের মাছ ধরা দেখায় আর দত্তদের ঠাকুরদালানে নিয়ে গিয়ে মনসাবাড়িতে দেবী দর্শন করিয়ে আনে। এখন, বুড়ো বাপের পছন্দ-অপছন্দ যদি এভাবে তাঁর ছেলেমেয়েরা খেয়াল রাখে তথা মেটাতে থাকে, সেক্ষেত্রে জাঁকিয়ে বসা কলিকে যে এক আধুলিও খাজনা দেওয়া হল না, এটা বলদগুলোকে বোঝাবে কে।
Esta historia es de la edición December 17, 2023 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor ? Conectar
Esta historia es de la edición December 17, 2023 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor? Conectar
ভূতের বাড়ি
প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।
চার দশকের মেট্রো
কলকাতায় মেট্রো রেলের চার দশক পূর্তি এই শহরের গতিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য এক মাইলস্টোন।
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত
ঘরের মাঠে এমন পর্যুদস্ত হওয়া নতুন হলেও প্রত্যাশা থাকুক, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারতীয় দল।
ফিরলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। তাঁর \"আমেরিকা ফার্স্ট\" নীতি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারত, চিন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আনবে তাঁর নতুন প্রশাসন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দর্পণে প্রতিবিম্বিত তাসের ঘর
ওয়াশিংটন ডিসি প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার \"হাউস অফ কার্ডস\"। ফ্র্যাঙ্ক আন্ডারউড ও তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী ক্লেয়ারের ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প, যেখানে ক্লেয়ার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হন।
মেরুকৃত এক সমাজের নির্বাচন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিসের পরাজয় ও ট্রাম্পের জয় গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজের মূল প্রশ্নগুলো নিয়ে নাগরিকদের হতাশা প্রকাশ করে।
বহুরূপী কৃত্তিকা
হেমন্ত আর শীতের সন্ধ্যায় মাথার ওপর কৃত্তিকাকে দেখায় উজ্জ্বল প্রশ্নচিহ্নের মতো। তাকে ঘিরে প্রশ্নও কম নেই।
দিগন্তের আলো
মাদল কুহকের অদ্ভুত টানাপোড়েনের গল্পের প্রতিটি ভাঁজে কেবল একটাই প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে—কুহক কি কখনও তাকে ডেকেছিল? জীবনের আলো-ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, মাদল সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বারবার হারিয়ে ফেলে নিজের পথ। তবু ভিড়ের মাঝে, তার পিছু হেঁটে, কমলা আঁচলের টানে, কুহকের উপস্থিতি যেন বারবার তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
অসমাপ্ত গল্পের পাতা
একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: \"করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে ভোরের মিষ্টি রোদ আড়মোড়া ভাঙছে, চায়ের ধোঁয়া আর পায়রার ঝাঁক জীবনের সাদামাটা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে। ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতি ও স্মৃতির মিশেলে উঠে আসে এক টুকরো রোমাঞ্চকর অনুভূতি।\"
চৈতি-ঝরা বেলায়
মুহূর্তের ছোট্ট বিবরণ ডোরবেলের দিকে হাত বাড়িয়ে রুহানি হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে রাখা একজোড়া মহিলা জুতো দেখে তার মনের ভেতরে কিছু ভাবনা খেলে গেল। সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নেওয়ার পরও বেলটা বেজে উঠল। মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, \"কী রে, এত হাঁপাচ্ছিস কেন?\" রুহানি ঢুকেই ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, \"কে এসেছে মা?\" মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, \"ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।\" মনে হচ্ছে, স্মৃতিকণা কিছু লুকোচ্ছে। মনের ঝড় থামাতে রুহানি একা একা মায়ের ঘরে ঢুকে। ততক্ষণে ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে আর তার পুরনো দিনের কথাগুলো মিলে এক নতুন গল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছে।