মেয়েটির নাম ইয়ংচু। খুব ছোটবেলায় বইয়ের সঙ্গে ভালবাসা হয়েছিল তার। বাবার কাছে কেবলই বায়না করত, গল্পের বই চাই। পেলেই গোগ্রাসে পড়ে ফেলবে, তার পরে সাজিয়ে রাখবে তার বইয়ের তাকে। ঘরের দেওয়ালে বইয়ের সারিগুলো ডানা মেলতে মেলতে গোটা দেওয়াল জুড়ে ফেলবে, যখন যাকে মন চায় টেনে নিয়ে পাতা ওল্টাবে, এই ছিল তার স্বপ্ন। বায়নাধারী মেয়েকে বাবা বকতেন, ‘কোনও জিনিসের জন্য লোভ ভাল নয়, বইয়ের জন্যও নয়, আবার বই এনেও দিতেন ঠিক।
মেয়ে বড় হয়, চাকরি পায়, পায় ভালবাসার মানুষও। তার পর বিয়ে। ব্যস্ত দম্পতির আধুনিক জীবনযাপন এগিয়ে চলে সফল কেরিয়ারের সিঁড়ি বেয়ে। এবং ক্রমশ মেয়ের মনের মধ্যে জমতে থাকে অস্থিরতা, অতৃপ্তি, অশান্তি। সেই জমে ওঠা অ-সুখ অবশেষে গ্রাস করে তার মন এবং মগজ, এক দিন সকালে সে জানিয়ে দেয়, ‘আর চাকরি করব না।' নিজের কাজে অতিব্যস্ত এবং সদামগ্ন জীবনসঙ্গী তার এই মনোবৈকল্যের অর্থ বোঝে না। সে বুঝতে পারে না, এত ভাল অফিসে দশ বছরের বেশি সময় ধরে গড়ে তোলা এমন সফল কেরিয়ার কেউ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেয়? কিন্তু সে তো আর সাফল্য চায় না, নিজের মতো করে বাঁচতে চায়। সে বলে, ‘চলো না, আমরা এ বার অন্য ভাবে জীবন কাটাই, নিজেদের মতো।' তার সঙ্গী তেমনটা চায় না। অতএব, সে একা হয়ে যায়। ঘরে ও বাইরে একেবারে একা। কেবল দাম্পত্য ভাঙে না, অবুঝ এবং খামখেয়ালি মেয়ের প্রতি অপার বিরক্তিতে মুখ ঘুরিয়ে নেন তার মা-ও। এবং, এত দিন পরে, সেই ইচ্ছেটার মুখোমুখি দাঁড়ায় সে, যা তার মন জুড়ে রেখেছিল, ছোটবেলার দেওয়াল-জোড়া বইয়ের সারির মতো, কিন্তু যাকে সে এতকাল মনের মধ্যেই ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিল। নিজের একটা বইয়ের দোকান করার ইচ্ছে। এখন, ঝাড়াহাত-পা জীবনে মধ্যবয়সের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে সেই সাধ মেটানোর সময় হয়েছে তার, এবার শুরু করতেই হবে। সুতরাং, একটা ঠিকঠাক জায়গার খোঁজে শহরের পথে নামে ইয়ংচু, ইতিমধ্যে কফি বানানোর প্রশিক্ষণও নিয়ে রাখে— বইয়ের সঙ্গে কফির ব্যবস্থাও রাখতে হবে বইকি। দেখতে দেখতে জায়গা পছন্দ হয়, দোকানের জন্য মনের মতো বাড়িও মিলে যায় সেখানে, ইন্টিরিয়রের কাজ, আসবাব, বইপত্র কেনাকাটা, অন্য নানা আয়োজন, সব সেরে এক দিন শান্ত নিরুত্তাপ মধ্যবিত্ত এক এলাকার একটি রাস্তার উপরে শুরু হয় তার নিজস্ব পুস্তক বিপণি। পাড়ার নাম হিউনাম-দং, সেই নামেই দোকানের পরিচয়।
Esta historia es de la edición January 17, 2024 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor ? Conectar
Esta historia es de la edición January 17, 2024 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor? Conectar
ভূতের বাড়ি
প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।
চার দশকের মেট্রো
কলকাতায় মেট্রো রেলের চার দশক পূর্তি এই শহরের গতিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য এক মাইলস্টোন।
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত
ঘরের মাঠে এমন পর্যুদস্ত হওয়া নতুন হলেও প্রত্যাশা থাকুক, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারতীয় দল।
ফিরলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। তাঁর \"আমেরিকা ফার্স্ট\" নীতি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারত, চিন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আনবে তাঁর নতুন প্রশাসন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দর্পণে প্রতিবিম্বিত তাসের ঘর
ওয়াশিংটন ডিসি প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার \"হাউস অফ কার্ডস\"। ফ্র্যাঙ্ক আন্ডারউড ও তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী ক্লেয়ারের ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প, যেখানে ক্লেয়ার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হন।
মেরুকৃত এক সমাজের নির্বাচন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিসের পরাজয় ও ট্রাম্পের জয় গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজের মূল প্রশ্নগুলো নিয়ে নাগরিকদের হতাশা প্রকাশ করে।
বহুরূপী কৃত্তিকা
হেমন্ত আর শীতের সন্ধ্যায় মাথার ওপর কৃত্তিকাকে দেখায় উজ্জ্বল প্রশ্নচিহ্নের মতো। তাকে ঘিরে প্রশ্নও কম নেই।
দিগন্তের আলো
মাদল কুহকের অদ্ভুত টানাপোড়েনের গল্পের প্রতিটি ভাঁজে কেবল একটাই প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে—কুহক কি কখনও তাকে ডেকেছিল? জীবনের আলো-ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, মাদল সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বারবার হারিয়ে ফেলে নিজের পথ। তবু ভিড়ের মাঝে, তার পিছু হেঁটে, কমলা আঁচলের টানে, কুহকের উপস্থিতি যেন বারবার তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
অসমাপ্ত গল্পের পাতা
একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: \"করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে ভোরের মিষ্টি রোদ আড়মোড়া ভাঙছে, চায়ের ধোঁয়া আর পায়রার ঝাঁক জীবনের সাদামাটা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে। ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতি ও স্মৃতির মিশেলে উঠে আসে এক টুকরো রোমাঞ্চকর অনুভূতি।\"
চৈতি-ঝরা বেলায়
মুহূর্তের ছোট্ট বিবরণ ডোরবেলের দিকে হাত বাড়িয়ে রুহানি হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে রাখা একজোড়া মহিলা জুতো দেখে তার মনের ভেতরে কিছু ভাবনা খেলে গেল। সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নেওয়ার পরও বেলটা বেজে উঠল। মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, \"কী রে, এত হাঁপাচ্ছিস কেন?\" রুহানি ঢুকেই ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, \"কে এসেছে মা?\" মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, \"ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।\" মনে হচ্ছে, স্মৃতিকণা কিছু লুকোচ্ছে। মনের ঝড় থামাতে রুহানি একা একা মায়ের ঘরে ঢুকে। ততক্ষণে ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে আর তার পুরনো দিনের কথাগুলো মিলে এক নতুন গল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছে।