নৌ "কো পাড়ে এসে লাগতে না লাগতেই, সুষমা ঝপাৎ করে নেমে পড়ল। একটু হলেই পা ফস্কে একেবারে জলকাদা মেখে উঠতে হত আর কী! আশি বছর বয়স হল, তবু সুষমার হড়বড় করার স্বভাব আর গেল না। দাঁড়িয়ে একবার পিছন ফিরে তাকাল সুষমা। মাঝি ততক্ষণে নৌকো নিয়ে এক মুহূর্তে উধাও। তারও বড় তাড়া। কোনও যাত্রী হয়তো অপেক্ষা করছে। আজকাল সবার তাড়া। সময়ের বড় অভাব। সুষমা ভুরু কুঁচকে তাকাল। দূর থেকে বাপনের মুখটা আবছা দেখা যাচ্ছে। বাপন নদীর ওই পাড়ে দাঁড়িয়ে। আহা রে! সারা দিন পেটে কিছু পড়েনি। মুখটা একেবারে শুকিয়ে গেছে। বাপন সুষমার নাতি। খুব ভালবাসে ঠাকুরমাকে। সুষমাকে দু'হাতে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিল। কিছুতেই ছাড়বে না সুষমাকে। বলছিল, ঠাকুরমা, আমাকেও নিয়ে যাও। শুনেই তো আঁতকে উঠেছিল সুষমা, “ছেলে কয় কী! গুপাল! তুমার না বউ পোয়াতি, আট মাস! তয় তুমার বাপ মা'রও তো বয়স হইছে। তুমি জুয়ান ব্যাটা। তুমারে ছাড়া এগর চলব? তুমি অহন বাড়ি ছাইড়া এক পাও নড়বা না। তুমি ভাবলা কী কইরা,আমার লগে তুমারে নিমু! হায় হায়! কী সব্বনাশা কথা!” মোটে কান দেয়নি সুষমা নাতির কথায়। একাই চলে এসেছে।
নাতিটা বড্ড ঠাকুরমার ন্যাওটা। শেষমেশ বাপনই তো নৌকোয় তুলে দিয়েছে সুষমাকে। ঠাকুরমার সঙ্গে ঘাট পর্যন্ত এসেছে, যতক্ষণ থাকা যায় ঠাকুরমার সঙ্গে। ধীরে ধীরে বাপনের মুখটা অদৃশ্য হল। প্রায় জোর করেই সুষমা এসেছে, নিজের গরজে। কোনও উপায় না দেখে শেষমেশ নিজের হাতেই দায়িত্ব নিয়ে চলে এসেছে। নাতি বাপন, ছেলে তপন খুব চেষ্টা করেছিল মাকে ধরে রাখার। সুষমার একমাত্র ছেলে তপন কেঁদে কেঁদে বলছিল, ক'দিন পরেই তোমার নাতবৌয়ের বাচ্চা হবে। এই সময় তুমি থাকবে না মা! আর ক'টা দিন পরে গেলে কী আর এমন হত! কারও কথায় কান দেয়নি সুষমা। সারা শরীরে কষ্ট! হাঁটু ব্যথা, পেটে ব্যথা, অসহ্য যন্ত্রণা সারা শরীরে। শুনেছে অনেকেই নাকি এসেছে। এখানে এলে সব অসুখের নিরাময় হয়। সুষমার আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব অনেক আগেই এসে পৌঁছেছে। সুষমাই বেশ দেরি করে ফেলেছে। অবশ্য কেউ তো আর বলেকয়ে আসেনি! যখন যার ইচ্ছে হয়েছে, তখন সে এসেছে। একটা খবর পর্যন্ত দেয়নি কেউ ।
Esta historia es de la edición April 17, 2024 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor ? Conectar
Esta historia es de la edición April 17, 2024 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor? Conectar
ভূতের বাড়ি
প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।
চার দশকের মেট্রো
কলকাতায় মেট্রো রেলের চার দশক পূর্তি এই শহরের গতিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য এক মাইলস্টোন।
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত
ঘরের মাঠে এমন পর্যুদস্ত হওয়া নতুন হলেও প্রত্যাশা থাকুক, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারতীয় দল।
ফিরলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। তাঁর \"আমেরিকা ফার্স্ট\" নীতি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারত, চিন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আনবে তাঁর নতুন প্রশাসন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দর্পণে প্রতিবিম্বিত তাসের ঘর
ওয়াশিংটন ডিসি প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার \"হাউস অফ কার্ডস\"। ফ্র্যাঙ্ক আন্ডারউড ও তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী ক্লেয়ারের ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প, যেখানে ক্লেয়ার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হন।
মেরুকৃত এক সমাজের নির্বাচন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিসের পরাজয় ও ট্রাম্পের জয় গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজের মূল প্রশ্নগুলো নিয়ে নাগরিকদের হতাশা প্রকাশ করে।
বহুরূপী কৃত্তিকা
হেমন্ত আর শীতের সন্ধ্যায় মাথার ওপর কৃত্তিকাকে দেখায় উজ্জ্বল প্রশ্নচিহ্নের মতো। তাকে ঘিরে প্রশ্নও কম নেই।
দিগন্তের আলো
মাদল কুহকের অদ্ভুত টানাপোড়েনের গল্পের প্রতিটি ভাঁজে কেবল একটাই প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে—কুহক কি কখনও তাকে ডেকেছিল? জীবনের আলো-ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, মাদল সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বারবার হারিয়ে ফেলে নিজের পথ। তবু ভিড়ের মাঝে, তার পিছু হেঁটে, কমলা আঁচলের টানে, কুহকের উপস্থিতি যেন বারবার তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
অসমাপ্ত গল্পের পাতা
একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: \"করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে ভোরের মিষ্টি রোদ আড়মোড়া ভাঙছে, চায়ের ধোঁয়া আর পায়রার ঝাঁক জীবনের সাদামাটা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে। ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতি ও স্মৃতির মিশেলে উঠে আসে এক টুকরো রোমাঞ্চকর অনুভূতি।\"
চৈতি-ঝরা বেলায়
মুহূর্তের ছোট্ট বিবরণ ডোরবেলের দিকে হাত বাড়িয়ে রুহানি হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে রাখা একজোড়া মহিলা জুতো দেখে তার মনের ভেতরে কিছু ভাবনা খেলে গেল। সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নেওয়ার পরও বেলটা বেজে উঠল। মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, \"কী রে, এত হাঁপাচ্ছিস কেন?\" রুহানি ঢুকেই ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, \"কে এসেছে মা?\" মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, \"ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।\" মনে হচ্ছে, স্মৃতিকণা কিছু লুকোচ্ছে। মনের ঝড় থামাতে রুহানি একা একা মায়ের ঘরে ঢুকে। ততক্ষণে ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে আর তার পুরনো দিনের কথাগুলো মিলে এক নতুন গল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছে।