চলচ্চিত্ৰ স্বতন্ত্র বীর সাভারকর কারাগার থেকে বেরিয়ে আসছেন সদ্য চল্লিশ পেরোনো একজন পুরুষ। যদিও তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে তাঁর বয়স আরও বেশি। মাথার চুল মাঝখান থেকে বিলীয়মান, দু'পাশের গাল বসে গিয়েছে। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। রুগ্ণ, ভগ্ন দেহ। তিনি কারাগার ছেড়ে বেরোচ্ছেন। হেঁটে, একা। তাঁর কানে ভেসে আসছে, বাইরে উচ্ছ্বসিত জনতা তাঁর নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছে। ঠোঁটের কোণে দেখা দিল হালকা হাসি। তখনই দেখা গেল, তাঁর দাঁতেও ক্ষয় ধরেছে। ধরবে না-ই বা কেন। তিনি যত্নহীনতায় আছেন প্রায় দেড় দশক। সেই ১৯১০ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ১৯১১ থেকে ১৯২১ কারারুদ্ধ ছিলেন আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেলে। তারপর ভারত ভূখণ্ডে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হলেও কারান্তরালেই কাটিয়েছেন আরও তিন বছর। ১৯২৪-এর গোড়ায় অবশেষে মুক্তি হচ্ছে তাঁর। তিনি, বিনায়ক দামোদর সাভারকর। এখন বেরিয়ে আসছেন তিনি জেল থেকে, তা শর্তসাপেক্ষে হলেও—নিজের এলাকা ছেড়ে অন্যত্র কোথাও তিনি যেতে পারবেন না। একপ্রকার হাউস অ্যারেস্ট। তাও, কারাবাস তো নয়। বাইরে তাঁকে ঘিরে উত্তেজিত অনুরাগীঅনুগামীদের ভিড়, তাঁদের আনন্দরব, ‘বিনায়ক দামোদর সাভারকর কি জয়!' জেলের দরজা খুলল। হাসিমুখে সাভারকর বেরোলেন। অভিনন্দিত হবেন এবার সমর্থকদের দ্বারা। সে-প্রত্যাশাতেই তিনি তাকালেন সামনের দিকে। তাকাতেই, মুহূর্তে তাঁর মুখের হাসি শুকিয়ে গেল। কই, কেউ তো নেই! চারদিক ফাঁকা। কেবল দূরে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা গণেশ দামোদর সাভারকর, যিনি তাঁরও আগে থেকে সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন, সেখান থেকে ভারত ভূখণ্ডে এসেছিলেন বিনায়কের সঙ্গেই মুক্তি পেয়েছিলেন কনিষ্ঠ ভ্রাতার চেয়ে বছর দুয়েক আগে। সে-দাদাই এসেছেন ভাইকে নিতে।
আর কেউ নেই কোথাও। তা হলে, এই কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত সাভারকর যা শুনছিলেন, তা সবই ছিল আসলে তিনি যা শুনতে চাইছিলেন, দেখতে চাইছিলেন, কামনা করছিলেন। বাস্তব অন্য চিত্র ধরল তাঁর সামনে, তিনি নিঃসঙ্গ। যোগ্য, তবু নন্দিত নন। একজন আত্মীয় ব্যতীত আর কেউ নেই তাঁর প্রতীক্ষায়। ইতিহাসও দাঁড়িয়ে নেই তাঁর কথা শোনার জন্য। এই দৃশ্য রণদীপ হুডা পরিচালিত ও অভিনীত স্বতন্ত্র বীর সাভারকর ছবির। দৃশ্যটি ইঙ্গিতবাহী সাভারকর জীবনের ধ্রুবসত্যর — তিনি সমান্তরাল, মূলের নন। তিনি অভাজন। ইতিহাস তাঁর হাত ধরেও ধরেনি, এখানেই সাভারকরের ট্র্যাজেডি।
Esta historia es de la edición April 02, 2024 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor ? Conectar
Esta historia es de la edición April 02, 2024 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor? Conectar
বিশ্বাসভঙ্গের রাজনীতি
মণিপুরের যথার্থ পরিস্থিতি নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দল একসঙ্গে বসে কথা না-বললে সমাধান অসম্ভব।
দেখি ফিরে ফিরে
বামপন্থী ইন্টেলেকচুয়াল, নাক উঁচু প্রগতিশীল মহল থেকে সেই বার্তা রটি গেল ক্রমে যে, বিবর শুধু অশ্লীল নয়, সাহিত্য-সমাজের জন্য অতি ক্ষতিকর। অতএব এই বই বর্জন, এই বই যে-পড়বে তাকেও বর্জন! তবে শুধু বর্জন নয়, অন্যদিকে প্রশংসাও ছিল।
মুক্তিপণ
শহরটা এই দিকটায় বেড়েছে কম।
সমরেশ বসুর সন্ধানে
‘কালকূট’ ছদ্মনামে সমরেশ বসু লিখলেন দীর্ঘ উপন্যাস কোথায় পাবো তারে। সে-ই উপন্যাসে পুরনো ঢাকার একরামপুর, নারিন্দার পুল, ডালপট্টি, দোলাইখাল, কলুটোলা, সূত্রাপুর বাজার, দোলাইখালের ওপর লোহারপুল আর গেণ্ডারিয়ার কথা আছে। বুড়িগঙ্গার কথা তো আছেই।
বিধ্বংসী পৌরুষের ভাষ্যকার
সমরেশ বসুর \"বিবর,\" \"প্রজাপতি,\" এবং \"পাতক\" উপন্যাসের অনামা নায়কদের মাধ্যমে বিষাক্ত পৌরুষের গভীর দিকগুলি উন্মোচিত হয়েছে। নারীর শরীরের উপর আধিপত্য, আগ্রাসী আচরণ, এবং সমাজের তৈরি পৌরুষের ছাঁচে পুরুষ-নারীর সম্পর্কের জটিলতা—সবই এই উপন্যাসগুলিতে জীবন্ত। আজকের টক্সিক ম্যাস্কুলিনিটির আলোচনার সঙ্গে এই চরিত্রগুলি যেন আরও প্রাসঙ্গিক।
যে-হাতের খোঁজ মেলেনি
গামার চোখে স্তালিনের প্রতিকৃতি কেবল একজন নেতার ছবি নয়; তা ছিল সাম্য, সংগ্রাম ও স্বপ্নের প্রতীক। এই আখ্যান বস্তির নিঃশ্বাসহীন ঘর থেকে বিপ্লবের মশাল জ্বালানো এক সাধারণ মজদুরের অসাধারণ গল্প।
টিকিট
এই গল্পটি একটি দূর গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সদ্য যোগ দেওয়া একজন হেডমাস্টারের অভিজ্ঞতা নিয়ে। তিনি গ্রামে এসে স্কুলের অবস্থান ও দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে গিয়ে স্থানীয় চরিত্রদের বিভিন্ন রকম আচরণ, হাস্যরস, এবং বাস্তব চিত্রের সম্মুখীন হন। একদিকে নীহারবাবুর মতো মহৎ ব্যক্তি, অন্যদিকে তার স্বার্থপর ভাই দিবে। এই দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় শিক্ষার অবস্থা এবং ব্যক্তিগত লড়াইয়ের একটি রূপক চিত্র ফুটে উঠেছে।
বিচারের অন্তরাল: প্রত্যাশা ও প্রশ্ন
আইনের দেবীর চোখের পট্টি খুলে গেলেও আইনের দৃষ্টি আদৌ সক্রিয় কি, সন্দেহ সেখানেই
কবিতায় প্রেমে, প্রতিরোধে শাশ্বত
আধুনিকতাকে কাটিয়ে কবি এরিখ ফ্রিড প্রবেশ করেছেন উত্তরাধুনিক চিন্তার আনাচেকানাচে।
জলবায়ুর কথা ভাবছে কে? রাজনীতির অনুপ্রবেশ, আন্তর্জাতিক ক্ষমতায়ন প্রবেশ করেছে পরিবেশ-ভাবনার বিভিন্ন দিক ও উন্নয়নে।
প্যারিস চুক্তিতে সই করা দেশগুলোর আলোচনার ভিত্তিতেই জাতিসংঘের তত্বাবধায়ক একটি সংস্থা পূর্বেই বসে ঠিক করেছিল কার্বন অপসারণ ও মূল্যায়ন প্রকল্পের মান কীভাবে নির্ধারণ করা হবে।