স্মৃতির কারসাজি ও সময়ের দলিল

এই প্রবল রাজনৈতিক অস্থিরতার দিনে মঞ্চে নাট্যের নারী চরিত্রগুলি চিরাচরিত ও কাঙ্ক্ষিত শর্ত, যাপন, ভঙ্গিমা, প্রত্যাশার বিপ্রতীপে দাঁড়িয়েছে।

- শুভব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়

এক-একটি বইয়ের ভিতর আস্ত কৈশোর লুকিয়ে থাকতে পারে। সময়ের ডানাওয়ালা রথ অন্তহীন ছুটতে ছুটতে অনেক কিছু ভুলিয়ে দেয় ঠিকই, কিন্তু ওই—ফুরায় যা তা ফুরায় শুধু চোখে, তাই স্থান-কাল-পাত্র মেপেজুপে নিয়ে স্মৃতি হঠাৎ ধুলো সরিয়ে মনের ভিতর ঝাঁপিয়ে পড়ে দক্ষিণামোহন ঠাকুরের তারসানাইয়ের মতো। বোঝা যায়, না ভুলিনি তো, দিব্যি মনে আছে কাহিনিকাঠামো, বইয়ের ছবি-শব্দ-গন্ধ, এমনকি প্রথম পাঠের সন্ধেটাও ফিরে আসে। সংস্তব প্রযোজিত গৌরের কবচ মঞ্চে দেখতে-দেখতে স্মৃতির এইসব কারসাজির কথাই মনে এল প্রথমে।

গৌরের কবচ উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৬ সালে, কিন্তু সেই কবচের ভিতর যে লুকোনো শক্তি, তার বিদ্যুৎ-ঝিলিক তো দেখা যায় সব সময়ই, তাই এই ২০২৪-এও গান-গল্পসংলাপে নাটক হয়ে ওঠে ‘জমজমাট’, যদিও এই বিশেষণটি বিশেষ কিছু বোঝায় না, অন্তত ফেলু মিত্তির তো একবার এই আপত্তি জানিয়েই ছিল। বই পড়ার অভ্যেস নাকি একেবারেই কমে যাচ্ছে, রীতিমতো হাতেকলম পরীক্ষানিরীক্ষা সে-কথাই জানাচ্ছে, শীর্ষেন্দুর এই আশ্চর্য উপন্যাস থেকে কিশোর-কিশোরীরা যদি দূরেই থাকে, অন্তত নাটকটি দেখে শব্দের স্বাদ দৃশ্যে মেটাক! অথবা দৃশ্য-শ্রাব্যের চড়ুইভাতির পর ফিরে যাক শব্দের নিবিড়তায়।