মাইগ্রেনের সমাধান

মাথা যন্ত্রণার এই রোগ একপ্রকার দুর্বিষহ। লক্ষণ ও প্রতিকার কী? পরামর্শে বিশিষ্ট নিউরোলজিস্ট ডাঃ তৃষিতানন্দ রায়।

- লিখেছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়

গো -টা দিন অফিসে কাজে মন বসাতে পারল না নিধি। একে মনখারাপ করা মেঘলা আবহাওয়া, তার উপর সারাদিন মাথা যন্ত্রণা, বমি বমি ভাব। বাড়ি ফিরে এসে আলো নিভিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেও লাভ হল না। অথচ এই রোগের অন্যতম দাওয়াই ঘুম!

রোগটি মাইগ্রেন। চলতি বাংলায় ‘আধকপালি’। এই সমস্যায় বহু ভারতীয় নাজেহাল। মাইগ্রেনের মাথা যন্ত্রণাটি মাথার ডান বা বাম দিক ঘেঁষে হয়। মাথার ভিতর দপদপ করা, মাথার মধ্যে হাতুড়ি পেটানোর অনুভূতি, একটানা ব্যথা এসবই মাইগ্রেনের প্রধান লক্ষণ। তবে মাথার ডান বা বামদিক থেকে এই ব্যথা চোখ, মাথার পিছন দিকে ও ঘাড়ে ছড়াতে পারে। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলে মাইগ্রেন অ্যাটাক। এই ব্যথার তীব্রতা রোগীভেদে ভিন্ন হয়, অনেকের বেলায় ব্যথা প্রথমে মৃদু থাকে, পরে তীব্র আকার ধারণ করে। মৃদু অবস্থায় মাইগ্রেনের রোগীরা ব্যথা নিয়েও কাজকর্ম সারতে পারেন। কিন্তু এই ব্যথার তীব্রতা বাড়লে রোগীর কাছে তা অসহনীয় হয়ে ওঠে। সাধারণত ব্যথা হলে আলো, শব্দ, একটানা স্ক্রিনের দিকে চোখ—কিছুই রোগী সহ্য করতে পারেন না। এই অসুখ প্রাণঘাতী নয় ঠিকই, তবে এর জেরে কাজকর্মে বাধা পড়ে, জীবনধারণে সমস্যা দেখা দেয়। খুব ধীরগতিতে এই মাথা যন্ত্রণা কমে। যন্ত্রণা কমে যাওয়ার পর রোগী দিব্য সুস্থ থাকেন। তখন সব কাজও করতে পারেন। মাথা যন্ত্রণাজনিত কোনও জটিলতা বা কষ্ট ওই সময় থাকে না। ফের কয়েক দিন বাদে ফিরে আসে নাছোড় অসুখ মাইগ্রেন! ফলে বারবার একটি যন্ত্রণার অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হয় রোগীকে।

মাইগ্রেন কাদের হয় ? জীবনের সবেচেয়ে উৎপাদনশীল সময়েই এই ব্যথা থাবা বসায়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষ শিশুকাল থেকে প্রায় ৫০-৫৫ বছর বয়স অবধি এই ভোগান্তি থাকতে পারে। তারপর ধীরে ধীরে মাইগ্রেনের প্রভাব কমে।