পুজোয় যখন হঠাৎ বিপদ! করবেন কী?

পুজোর ক’দিন রাস্তা-ঘাটে প্রচণ্ড জ্যাম, চেনা লোকেরা সব শহরের বাইরে। বিপদে দ্রুত সাহায্য পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি তো আর সময় দেখে আসে না। এই সময়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে করবেন কী? নিদান দিলেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরূপ দাসবিশ্বাস, গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট ডাঃ সত্যপ্রিয় দে সরকার, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ রুদ্রজিৎ পাল।

আপৎকালীন হার্টের সমস্যা হার্ট অ্যাটাক: হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হিসেবে আমরা সর্বপ্রথম বুকে ব্যথা এবং অস্বস্তিকে চিহ্নিত করি। এখন, বুকে ব্যথা হওয়া মানে তা হার্ট অ্যাটাক নাকি অন্য কোনও কারণে হচ্ছে, তা বুঝতে হলে কতকগুলো প্রশ্নের উত্তর পাওয়া জরুরি। ক) ব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তি কি হার্টের রোগী? আগেও কি তাঁর সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে বা অল্প পরিশ্রম করার পর বা মানসিক উত্তেজনার সময়ে বুকে অস্বস্তি, ব্যথা কিংবা শ্বাসকষ্ট হতো? খ) ওই ব্যক্তি কি মধ্যবয়সি? (এখন অবশ্য ২৫-৩০ বছর বয়সিরাও ঝুঁকির ঊর্ধ্বে নন) গ) ব্যথার প্রকৃতি কীরকম? অর্থাৎ ব্যথা কি বুকের মাঝখানের হাড়ের (স্টারনাম) পিছনে হচ্ছে? শরীরে চাপা অস্বস্তি আছে? ব্যথার তীব্রতা কতটা? বুকের ব্যথায় কি ওই ব্যক্তি ছটফট করছেন? বুক ধড়ফড় করছে? প্রচণ্ড ঘাম হচ্ছে? শ্বাসকষ্ট হচ্ছে? অন্যসময় যা ব্যথা হতো, তার চাইতে বেশি ব্যথা হচ্ছে? ব্যথা কি অনেকক্ষণ অর্থাৎ আধঘণ্টা বা তারও অধিক সময় স্থায়ী হচ্ছে? ব্যথার তীব্রতা কি বাড়ছে? ব্যথা কি বুক চেপে ধরেছে মনে হচ্ছে? ব্যথা কি ছড়িয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে? অর্থাৎ ডানদিকে, বামদিকে, চোয়ালের দিকে, পেটের দিকে, কখনও কখনও পিঠের দিকে, এমনকী আঙুলের দিকেও ব্যথা হচ্ছে? এইসমস্ত প্রশ্নের অধিকাংশের উত্তর হ্যাঁ হলে, যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু হলে রোগীর হার্টের পেশির কোষের ক্ষতি অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

মুশকিল হল, কিছু ব্যক্তি জীবনে প্রথমবারের জন্যও এমন উপসর্গের সম্মুখীন হতে পারেন। এমন ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে। উনি যেন গ্যাস-অম্বলের ব্যথা ভেবে হাত গুটিয়ে বসে না থাকেন। ওই ব্যক্তি যদি দীর্ঘদিনের সুগারের রোগী হন, আরও বেশি করে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কারণ, ডায়াবেটিসের কারণে আমাদের শরীরের নার্ভগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে তিনি ব্যথাহীন হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারেন।