রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে হোমিওপ্যাথি

পারদস্তম্ভের মিলিমিটারের এককে (এমএম অব এইচজি) রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়। সাধারণত ১২০/৮০ এমএম অব এইচজি-এর চেয়ে কম রক্তচাপকে স্বাভাবিক রক্তচাপের মাত্রা ধরা হয়, যেখানে ১২০ সিস্টোলিক এবং ৮০ ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ।

- ডাঃ স্বর্ণদীপ ভট্টাচার্য

সি: -স্টেমিক হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ হল একটি সাধারণ কার্ডিওভাসকুলার রোগ, যা আমাদের দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। ৩০ বছরের বেশি বয়সি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই রোগের আনুমানিক ঘটনা ১২-১৮ শতাংশ হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় খুব ন্যূনতম লক্ষণ নিয়ে এই রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে। তবে দেরিতে শনাক্ত হলে প্রায়শই মারাত্মক জটিলতা তৈরি হয়। তাই উচ্চ রক্তচাপকে যথাযথভাবেই ‘নীরব ঘাতক’ বা ‘সাইলেন্ট কিলার’ বলা হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশে, প্রায় ৫ কোটি আমেরিকান উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে ভুগছেন। আজকের তারিখে দাঁড়িয়ে এর বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাব অনুমান করলে দেখা যাবে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় আক্রান্ত এবং প্রতি বছর প্রায় ৭১ লক্ষ মানুষের প্রাণহানির জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ। ভারতীয় গবেষকদের করা নানা সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রাদুর্ভাব প্রায় ১২-১৫ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান সমস্যার তীব্রতা এবং রোগের গুরুত্বকে বোঝার জন্য যথেষ্ট।

এই রোগের অন্য দিকটি হল যে শুধুমাত্র খুব অল্প সংখ্যক মানুষ এই রোগ সম্পর্কে সচেতন। ফলে এই রোগটি দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে বাসা বেঁধে থাকলেও সময়ে শনাক্ত হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জেনারেল হেলথ চেকআপ করাতে গিয়েই রোগ ধরা পড়ে। মুশকিল হল, যাঁরা এই অসুখ সম্পর্কে সচেতন, তাঁদের অনেকেও সঠিক প্রক্রিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা করান না। আসুন, এবার সংক্ষিপ্তভাবে রোগের বিভিন্ন দিক, এর শ্রেণিবিভাগ, অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলি যা আমরা উচ্চ রক্তচাপ নির্ণয় করার সময় বিচার করি এবং রোগের জটিলতাগুলি, আর উচ্চ রক্তচাপের হোমিওপ্যাথিক আরোগ্য সম্পর্কে আলোচনা করি।

হৃৎপিণ্ড সারা শরীরেই রক্ত পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে একই সঙ্গে অক্সিজেন এবং শক্তির জোগান দেয়। রক্তবাহী নালীর দেয়ালে রক্তের চাপকেই রক্তচাপ বা ব্লাডপ্রেশার বলে। বর্ধিত রক্তচাপ রক্তবাহ এবং হৃৎপিণ্ডে নানান জটিলতার সৃষ্টি করে, যা আমাদের হার্ট অ্যাটাক এবং অন্যান্য হৃদরোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। হার্টে রক্ত পাম্প করার সময়ের চাপকে বলে সিস্টোলিক প্রেশার ও হার্টে রক্ত ফিরে আসার সময়ের চাপকে বলে ডায়াস্টোলিক প্রেশার।