বরফমোড়া. পাহাড় যেখানে সাদা চাদর গায়ে দিয়ে থাকে। মুখে ঝাপটা মারে ঠান্ডা হাওয়া। মাসোত্রায় প্রাণ জুড়নো ঝটিকা সফরের গল্প, ঝুমা মুখোপাধ্যায়ের কলমে।

পাহাড়ের কোলে ছোট্ট এক জনপদ মাসোব্রা। সিমলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে এক টুকরো স্বর্গ।

উত্তর ভারতের যে জায়গায় থাকি সেখানে —ডিসেম্বর, জানুয়ারি এই দু’মাস ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থা হয়। দিনের তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাঘুরি করে... রাতে ৩-৪ ডিগ্রি। কখনও আরও কমে যায়। সারা দিন ঘরবন্দি, রুম হিটার চালিয়ে ঘর গরম রাখতে হয়। এমনকি ব্যালকনিতে দাঁড়াতেও ইচ্ছা করে না।

দিন গুনতে থাকি সূর্যদেবের সাক্ষাতের জন্য! অবশেষে এল এক ঝলমলে সকাল। নরম রোদ গায়ে মেখে ব্যালকনিতে বসেই ঘরের কাছে জায়গাগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া শুরু। ২০২০ থেকে সব কিছু ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। আগে বছরের কোন সময়ে কোথায় যাব, তার ছক কষা থাকত। এখন পরিস্থিতি অনুকুল থাকলে দু’একদিনের সফরে বেরিয়ে পড়া ছাড়া উপায় নেই। এভাবেই সমস্ত সুরক্ষা বিধি মেনে, সতর্কতা পালন করে কাছাকাছি ঘুরে আসি। এবার বেছেছিলাম পাহাড়ের কোলে ছোট্ট এক জনপদ মাসোব্রা— বাড়ি থেকে ২৯০ কিলোমিটার আর সিমলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে লোকারণ্যের আড়ালে এক টুকরো স্বর্গ। শনিবার রাতেই হোটেল বুকিং আর রাস্তার হালচাল জেনে নেওয়া হয়েছিল। রবিবার সকাল নটায় ‘আমাদের ছুটি ছুটি’ বলে বেরিয়ে পড়লাম! গাড়ির ড্যাশবোর্ডে তাপমাত্রা দেখাচ্ছে ৬ ডিগ্রি। রোদ থাকলেও সোয়েটার, জ্যাকেট, মোজা-জুতোয় মুড়ে আছি। জাতীয় সড়ক ধরে গাড়ি পানিপথ, কারনাল,

কুরুক্ষেত্র ছাড়াল। আম্বালায় চা পানের বিরতি। রাস্তার দু’ধারে সুসজ্জিত ধাবা... বিভিন্ন রকমের পরোটা, ঘন দুধ-চায়ের জন্য প্রসিদ্ধ। জিরাখপুর থেকে ডান দিকের রাস্তা চলে গিয়েছে হিমালয়ান এক্সপ্রেসওয়ের দিকে। সেই রাস্তা ধরা হল। কিছুটা যাওয়ার পর দৃশ্যপট ক্রমশ পাল্টাচ্ছে। ঢেউ খেলানো পাহাড় আর সবুজের সমারোহ বাড়ছে।