চিনাপাড়ার এলডার্স ডে

কলকাতার চিনা পাড়ায় ঢুঁ মেরেছেন কখনও? শহরের একটুকরো চিনাপল্লিতে এলডার্স ডে পালনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন কুশল রায়।

কি ছু বছর আগে কলকাতার পুরনো চিনাপাড়ার বর্ষীয়ান বন্ধু এবং অবসরপ্রাপ্ত দন্তচিকিৎসক হাইয়িংচ্যাং প্রশ্ন করেছিলেন, “কাফুসিয়াস তো খানিকটা জান, তবে হিউয়েন সাং সম্বন্ধে ধারণা কতদূর?” আমার হাতে থাকা মোবাইলের দিকে আঙুল নাড়িয়ে নঞর্থক ইঙ্গিত করে বললেন, “গুগুল-টুগুল না দেখে চটজলদি বলো দেখি ব্রাদার!” আমি নার্ভাস পরীক্ষার্থীর দ্বিধা কাটিয়ে বললাম, “উনি ছিলেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী, ১৪০০ বছর আগে হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে ভারতে এসেছিলেন বৌদ্ধলিপি সংগ্রহ করতে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ শীলভদ্রের কাছে পড়াশোনাও করেছিলেন। তারপর চিন দেশে ফিরে গিয়ে ভারত ভ্রমণ নিয়ে যা লিখেছিলেন, তার নাম ‘সি-ইউ-কি’, যা প্রাচীন ভারতকে জানতে অত্যন্ত মূল্যবান লেখা বলে মনে করা হয়। তিনি ভারতে এসেছিলেন অনেক কষ্ট করে। ল্যান্ড রুট ধরে। অনেকটা ঘুরে, মঙ্গোলিয়া হয়ে। পথে ডাকাতের খপ্পরেও পড়েছিলেন। তারপর সোজা তাম্রলিপ্ত বন্দর হয়ে চললেন চিনের উদ্দেশে। যা এখন তমলুক। এমনকি শোনা যায় রাজা হর্ষবর্ধনও তাঁকে যথেষ্ট খাতির-যত্ন করেছিলেন,” এইটুকু বলে দম নিলাম। আর বিশেষ কিছুই মনে পড়ল না। বন্ধু চ্যাং খুশি হয়ে বলেছিলেন, “বাহ্, ভাল বলেছ। প্রথম পরীক্ষায় ভালভাবেই পাশ করেছ। কিন্তু, তুমি কি জান, হিউয়েন সাঙের নামে কলকাতায় একটা মনাস্ট্রি আছে? এটা তোমার জানা উচিত। এতদিন ধরে ছবি তুলছ...।” আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম! এবার ডাহা ফেল। তবে চ্যাং অবাক হননি। বলেছিলেন, কয়েকদিন বাদে সস্ত্রীক যাবেন সেখানে।