সম্বলপুরের জল জঙ্গল

স্টেশন চত্বর প্রশংসা করার মতো। যথাসময়ে ট্রেন এল। রওনা দিলাম কলকাতার পথে। ছবি: লেখক

- পারমিতা বসু

পশ্চিম ওড়িশার অনেক জায়গা এখনও অফবিট আখ্যা | পেতে পারে। সম্বলপুর থেকে ৪০ কিমি দূরে ডেব্রিগড় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এমনই এক জায়গা, যা ভ্রমণে এনে দেয় এক ভিন্ন স্বাদ।

সম্বলপুর যাওয়ার সুবিধাজনক ট্রেন সমলেশ্বরী এক্সপ্রেস, রাত ১০.২০ মিনিটে হাওড়া থেকে ছাড়ে। পৌঁছয় পরদিন সকাল ৯টায়। সম্বলপুর থেকে ডেব্রিগড় যেতে সময় লাগে এক ঘণ্টা। ওড়িশা বনদপ্তরের অধীনে জঙ্গলে বেশ কিছুদিন ধরেই শুরু হয়েছে ইকো-ট্যুরিজম। এর মধ্যে ডেব্রিগড় অন্যতম। ওড়িশার বরগড় জেলার অন্তর্ভুক্ত ডেব্রিগড় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। মহানদীর তীরে ৭৪৩ বর্গ কিমি অঞ্চল জুড়ে এই জঙ্গলের ব্যাপ্তি। ১৯৮৫ সালে ডেব্রিগড় অভয়ারণ্য আখ্যা পায়। বনস্পতির সবুজ ছায়ায় ঢাকা অভয়ারণ্যের কটেজগুলোর নামগুলো বেশ অন্যরকম। বায়ু, অগ্নি, আকাশ, ভূমি, জল। আর ডাইনিং হলের নাম পঞ্চতত্ত্ব। আর একটু দূরে রয়েছে বাইসন ব্লক। এখানে মোট তেরোটি বিলাসবহুল থাকার ব্যবস্থা আছে। আমাদের কটেজের নাম বায়ু। ঘরগুলো বেশ ভালো। ঘরের আকৃতি একটা তাঁবুর অনুভূতি দেয়। ব্যালকনি থেকে মহানদী দৃশ্যমান। দেখে সমুদ্রের মতো মনে হয়। প্রকৃতির নৈঃশব্দিক সৌন্দর্যে বুঁদ হয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। শহরের কোলাহল থেকে দূরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন আর মনোলোভা প্রকৃতির টানে বারবার এখানে আসা যায়। দুপুর ১-৩০ মিনিট নাগাদ ডাইনিং হলে ডাক পড়ল। বলতে গেলে জলাধারের মাঝেই এই হল। বিস্তৃত জলরাশি দেখতে দেখতে সুস্বাদু মধ্যাহ্নভোজন, আমাদের মতো শহুরে মানুষের কাছে বিশাল প্রাপ্তি। এই ডাইনিং হলের আর একটা বৈশিষ্ট্য হল এখানে একটা লাইব্রেরি আছে। বই পড়ার আদর্শ জায়গাও আছে। লাইব্রেরিতে একটা পাখির বই পাওয়া গেল। নভেম্বর মাসের শেষ থেকে পরিযায়ী পাখিরা এখানে ভিড় জমায়। খাওয়া শেষে প্রকৃতি কেন্দ্র ঘুরে দেখলাম। জঙ্গল ভরে আছে শাল গাছে। এখানে একটা ওয়াচটাওয়ার আছে। সেটাতে উঠে নেচার ক্যাম্পের গোটা দৃশ্য দেখা যায়।