কুমায়ুনের সাততালের কাছে কাঠগোদামে এইচএমটি ঘড়ির পরিত্যক্ত কারখানার সর্বাঙ্গে ঝোপঝাড়, বড় বড় গাছের গা বেয়ে পরজীবী লতা-গুল্মের বাড়বাড়ন্ত। কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়েছে কবেই! এখন আর চলে না যন্ত্র। সেই চত্বরে এখন নেচে বেড়ায় পাখির ঝাঁক। শিশিরভেজা পথ দিয়ে এগোতেই চোখে পড়ল রেড-বিলড ব্লু ম্যাগপাই, হিমালয়ান রুবিথ্রোট আর হোয়াইট-ক্যাপড রেডস্টার্ট সমানে নেচে বেড়াচ্ছে। আমাদের বার্ড-গাইড সন্দীপ নায়াল বলেছিল, কপাল ভালো থাকলে ব্ল্যাক-চিনড ইউহিনারও দেখা মিলতে পারে। প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করে সন্দীপকে অনুসরণ করি। রোদ্দুরে ক্রিমসন সানবার্ডের বাহারি পালক ঝলমল করে। সন্দীপ হাতছানি দিয়ে ডাকে। দ্রুত পা চালাই। সামনেই ঝুলন্ত লতায় দোল খাচ্ছে ব্ল্যাক-চিনড ইউহিনা!
বিকেলে পাওয়া গেল কালিজ ফেজ্যান্ট দম্পতি, নাটহ্যাচ, রুফাস -চিনড লাফিংথ্রাশ, হিল পার্ট্রিজ, ব্ল্যাক-চিনড ব্ল্যাক-চিনড ব্যাবলারদের লাফালাফির মুহূর্তের ছবি। হাইড সেশনে পাখিদেখা পর্বের শেষে আমরা এলাম চাফি নদীর ধারে। শীতকালে নদী প্রায় জলহীন। সেই অল্প জলেই শিকারের জন্য অপেক্ষা করছে ক্রেস্টেড কিংফিশার। কয়েকটি ব্রাউন ডিপার তখনও স্নান করে যাচ্ছে। আলো ক্রমশ কমছে, সন্ধে নামছে, আমরাও ডেরায় ফিরলাম।
পরদিন সকালে আবার এক ঘণ্টার হাইড সেশন সেরে আমরা মানিলার পথ ধরি। মানিলা যাওয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য বিপন্ন চির ফেজ্যান্টের খোঁজ করা। পড়ন্ত বিকেলে পৌঁছে সময় নষ্ট না করে নেমে পড়ি লক্ষ্য পূরণে। কিন্তু তার দেখা পেলাম না। রাত আটটা নাগাদ মাউন্টেন স্কপস আউলের খোঁজে বেরলাম। জঙ্গলের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা পথ ধরে ধীর গতিতে গাড়ি এগোল। শুধু হেডলাইটের আলোয় যতটুকু দেখা যায়, বাদবাকি সব অন্ধকার। এমন সময় আলো আর গাড়ির শব্দে হতচকিত এক লেপার্ডকে হঠাৎই রাস্তার পাশে দেখে গাড়ি থেমে পড়ে। গাড়ির ভিতর থেকে এই অপ্রত্যাশিত দৃশ্য দেখে আমরাও বিস্ময়বিমূঢ়! মিনিট খানেকের বিরতি। তার মধ্যেই চিতাবাঘটি লাফ দিয়ে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। গাড়ি কিলোমিটার খানেক যাওয়ার পর থামল। গাড়ি থেকে নামলাম। সদ্য চিতাবাঘ দেখেছি, তাই মনে কিছুটা ভয়। টর্চের আলো জ্বলছে মাউন্টেন স্কপস আউলের খোঁজে। অবশেষে দেখা মিলল। ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ সত্যিই যেন পর্যটক জীবনের একটা বড় দিন হয়ে থাকল!
This story is from the {{IssueName}} edition of {{MagazineName}}.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the {{IssueName}} edition of {{MagazineName}}.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
বসন্তে মানাং
নেপালের বেসিশহর থেকে মার্সিয়াংদি নদীর তীর ধরে মানাং ৯৮ কিলোমিটার। এখন ফোর হুইল গাড়িতে পৌঁছনো যায়। যাত্রাপথের আকাশ জুড়ে নামি নামি তুষারশৃঙ্গ আর মার্সিয়াংদির বয়ে চলা নিবিড়ভাবে দেখতে চাইলে মাঝপথে খানিক আনন্দময় পদযাত্রাও করতে পারেন। বসন্তে মানা গেলে ফোটা ফুলের শোভা বাড়তি পাওনা।
কর্ণাবতীর পাড়ে
কর্ণাবতী বা কেন নদী বয়ে গেছে পান্না অরণ্যের মধ্য দিয়ে। ঘন সবুজ বন, নীল নদী, পাথুরে নদীতট, গভীর গিরিখাত, ঝরনা আর অরণ্যের রাজা-প্রজাদের নিয়ে পান্নার জঙ্গলের কোর অঞ্চল খোলা থাকে অক্টোবর থেকে জুন। বাফার অঞ্চলে যাওয়া চলে বছরভর। খাজুরাহো থেকে পান্না ৩০ কিলোমিটার।
পৌষ সংক্রান্তির শিলাই পরব
পুরুলিয়ার হুড়া থানার বড়গ্রামে শিলাই নদীর উৎপত্তি। প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তিতে নদীর উৎসস্থলে বসে টুসু বিসর্জনের মেলা। এবারের শিলাই পরব শুরু হবে ১৪ জানুয়ারি।
জয়পুর হয়ে ভানগড় মনোহরপুর সরিস্কা
রাজস্থানের জয়পুরে ঘোরাঘুরি খাওয়াদাওয়া সেরে ভূতুড়ে দুর্গ ভানগড় দেখে সরিস্কা অরণ্য। ভানগড় থেকে সরিস্কার পথে মনোহরপুরের বাড়োদিয়া গ্রামে এক মনোরম নিশিযাপন।
শিবখোলার তীরে লিঝিপুর
কার্শিয়াং থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে লিঝিপুরে এসে গোটাদিন কাটিয়ে যেতে পারেন। যাঁরা শিবখোলার ধারে লিঝিপুরে একটা রাত কাটাতে চান, তাঁরা নদীর ধারে বসে একবেলা পিকনিকও করতে পারেন।
নাচুনে হরিণের দেশে
চিরকালের শান্তির রাজ্য মণিপুর ঢেকে গেছিল অশান্তির কালো মেঘে। এখন সেই মেঘ কেটে ধীরে ধীরে শান্তির আলো ফিরছে ক্রমশ। তবে সব জায়গা পর্যটকের জন্য উন্মুক্ত হয়নি এখনও। এই অগস্টের ভ্রমণকথা ।
বরাক উপত্যকার বনবাদাড়ে
দক্ষিণ আসামের বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ জেলার দসদেওয়া গ্রাম ও তার আশপাশের জঙ্গলে পাখপাখালির ভরা সংসার। পর্যটনের পরিকাঠামো গ্রামে সেভাবে গড়ে ওঠেনি, তাই পাখি আর প্রকৃতির সৌন্দর্যের টানে যাঁরা আর সব অসুবিধা তুচ্ছ মানেন, শুধু তাঁরাই যাবেন এই আরণ্যক গ্রাম ভ্রমণে।
জামনগর
শীতের জামনগর এক বিস্ময়নগরী। একদিকে রমরমিয়ে চলছে শিল্পতালুকের কর্মকাণ্ড, অন্যদিকে একের পর এক জলাভূমি অতিথি পাখিদের ভিড়ে যেন নন্দনকানন ।
তিন সংস্কৃতি-স্পর্শী স্পেনের টলেডো
সকাল সাতটায় বেরিয়েছি, ভোরের আলো তখনও ফোটেনি। বড়দিনের ছুটিতে আধঘুমে থাকা মাদ্রিদের শুনশান রাস্তা যেন হলিউডের মার্ডার মিস্ট্রি সিনেমার সেট। লাজ-মাদ্রিদ গেস্ট হাউস থেকে বড় রাস্তায় এসে বাসের পিক-আপ পয়েন্ট খুঁজলাম। টলেডো ট্যুরে আমাদের সঙ্গী দিল্লির এক ভারতীয় পরিবার। বাস ছাড়ল মাদ্রিদ থেকে, টলেডোর দিকে। পাহাড়, নদী আর ইতিহাসে মোড়া শহরটিতে পৌঁছে দেখি ইউনেস্কোর স্বীকৃত প্রাচীন নিদর্শন। সংকীর্ণ রাস্তা, সিনাগগ, ক্যাথিড্রাল আর এল গ্রেকোর শিল্পকর্ম—টলেডো যেন ইতিহাসের এক জীবন্ত জাদুঘর।
তাইগা ফ্লাইক্যাচার
তাইগা ফ্লাইক্যাচার (Taiga Flycatcher), বৈজ্ঞানিক নাম Ficedula albicilla, একটি শীতকালীন পরিযায়ী পাখি, যা মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্ব, মধ্য এবং উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে দেখা যায়। এরা ঝোপঝাড়, চাষের জমি ও ছোট গাছপালার আশেপাশে বিচরণ করে। পাখিটির গড় দৈর্ঘ্য ১১-১২ সেন্টিমিটার। প্রজননকালে পুরুষ পাখিটির গলার গেরুয়া কমলা রঙ খুব উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। স্ত্রী পাখি এবং প্রথম বছরের পুরুষ পাখির রং অপেক্ষাকৃত হালকা। এদের প্রধান খাদ্য পোকামাকড়, যা তারা মাটি, গাছ বা শূন্য থেকে শিকার করে। লেখা ও ছবি: সৌম্যজিৎ বিশ্বাস