ইতিহাস, ঐতিহ্য আর এক পুণ্যভূমি

ফল্গুনদীর একইপাশে অনতিদূরে অবস্থিত দুই পুণ্যভূমি গয়া এবং বোধগয়া। নদী পেরলেই রাজগির। এদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অনেকখানি ধারণ করে রেখেছে বিহারের এই অঞ্চল। ঘুরে এসে কলম ধরলেন সৌরভ দাশশর্মা।

কথিত আছে, রাজা দশরথের পিণ্ডদান করতে স্বয়ং রামচন্দ্র এসেছিলেন ফল্গুতীরের এই পবিত্র ভূমিতে। এবং মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার অপরাধে সীতার অভিশাপে ফল্গুর স্থান হয় মাটির নীচে। আজও সেই ধূ-ধূ বালির চর কিছুটা খুঁড়লেই বেরিয়ে পরে লুকোনো জলধারা। এই ফল্গুতীরের পবিত্র ভূমির নামই গয়া। আপামর ভারতবাসীর কাছে এক পুণ্যস্থান। সারাবছর ধরে হাজার হাজার মানুষ এই পুণ্যভূমিতে এসে তাদের পুর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানান, তাঁদের পিণ্ডদান করেন। এই একই উদ্দেশ্যে আমরাও বেড়িয়ে পড়েছিলাম গয়ার উদ্দেশ্যে। তবে বাঙালি তো, শুধু রথ দেখেই আমরা খুশি হই না, কলাটিও বেচা চাই। তাই সেই ভাবেই সাজিয়েছিলাম পুরো ট্রিপটা। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রাতের ট্রেনে করে পরের দিন সকালে নামব গয়া স্টেশনে। আমাদের ঠিক পাশের রো-তেই একই গন্তব্যে যাচ্ছিলেন তিন বৃদ্ধা। ভোরবেলা গয়ার আগের স্টেশন কোডারমা আসতেই তারা একসঙ্গে একের পর এক কীর্তন ধরলেন। ভোরের ঠাণ্ডা হাওয়া এসে আমাদের চোখমুখ ধুইয়ে দিচ্ছে আর সঙ্গে অপূর্ব সেই কীর্তন! প্রায় ঘণ্টাখানেকের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলাম সম্পূর্ণ অন্য এক জগতে। এক অসম্ভব শান্ত ঠান্ডা নিরুদ্বেগ মন নিয়ে এসে নামলাম গয়া স্টেশনের পবিত্র ভূমিতে।