পরিযায়ী শ্রম ও মেয়েরা

উপার্জনের তাগিদ। সংসারের ঝামেলাঅশান্তি এড়িয়ে থাকার রসদ। সন্তানপালনের দায়ভার। এ সব নিয়েই পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনচর্যা। লিখছেন জিনাত রেহেনা ইসলাম।

না রীর অন্দর যাপন নিরাপদ। এমনটাই দাবি অভিভাবক সমাজের। ঘরের আসবাব হিসেবে নারীর জুড়ি মেলা ছিল তাই ভার। এক কালে ঘরের লক্ষণরেখা পার করা নারীদের পেশা পরিচিতি ছিল অভিনেত্রী বা গণিকা হিসেবে। প্রতিষ্ঠা, অর্থ, যশে যা-ই হোক না কেন, সামাজিক পদ ও মর্যাদায় তাঁরা ছিলেন শূন্য। এবং বিচ্ছিন্ন। এভাবেই নারীর ব্যক্তি উপার্জনের খাতাটি ছিল অনুপস্থিত। দেশ-পরিবার-সমাজের সম্পদ হয়ে ওঠার বদলে আত্মপরিচয়টুকুও ছিল পরাধীন। তবে সংসারের গণ্ডি পেরিয়ে আর্থিক উপার্জনের জন্য ভিন রাজ্যে কাজ করা মহিলার সংখ্যা কত, সেই হিসেবে বিস্তর গরমিল! তবুও তাঁদের যাপন চিত্র অন্য ইতিহাস খুলে দেয়। যেমন হঠাৎই পরিযায়ী নারী শ্রমিক রিম্পার জীবনে নেমে এল অশনিসংকেত। রিম্পা তখন মুর্শিদাবাদ থেকে লুধিয়ানায় টায়ার ফ্যাক্টরিতে কাজ করত। তিন মাস হতে না হতেই লকডাউনের খাঁড়া। ঘরে ফেরার জন্য দলনেতা হাঁকলেন হাজার দুয়েক টাকা। আর সে টাকা না দিলে রাতে ঘরে তলব। মেয়েদের সম্বল তখন কানের দুল আর বাড়ির চারটি ছাগল-গরু। রিম্পা স্কুলের ফার্স্ট গার্ল ছিল। ক্লাস এইটে পড়ার সময়ে বিয়ে। মোবাইল খুলে সে খবর পায়, বাসে করে ফেরানো হবে মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিকদের। এবং বিনামূল্যে। রিম্পা দল বাঁধে বাকি মহিলা শ্রমিকদের নিয়ে। দাবি করে মিথ্যা বলে আদায় করা টাকা। গ্রামে ফিরেও সেই কাজ চালিয়ে যায় রিম্পা। দীর্ঘ দিন গ্রামে থাকার পর রিম্পা আবার পাড়ি দেয়। ঘরে দুই বাচ্চা। ক্লাস টু আর ফাইভ। সাত হাজার টাকার মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার বাড়িতে পাঠায় রিম্পা। সকাল আটটা থেকে সন্ধে ছটা পর্যন্ত কাজ। ঘরে ফিরে রান্না। একার সংসার। সন্তানদের ভাল করে পড়াশোনা করানোই লক্ষ্য রিম্পার। রিম্পার বাইরে থাকায় দুটি সমস্যা। এক, ভাষাগত। এবং অন্যটি হল ঘর