মায়াবি রিনচেনপং

সিকিমের য়ের মায়াবী সৌন্দর্য আর ইতিহাসে মোড়া। লিখছেন ডা. অর্পণ রায় চৌধুরী। রিনচেনপং

দটা মেঘে ঢেকে যেতেই আলোগুলো জ্বলজ্বল করে চা উঠল। ওই পাহাড়টাই পেলিং। সেজে রয়েছে দীপাবলীর | রাত যেন! এতক্ষণ চাঁদের আলোয় বোঝাই যায় নি। আজ সন্ধ্যা থেকেই জ্যোৎস্না ঝরছিল নিরিবিলি এই গ্রামের গৃহস্থ বাড়ির উঠোনে, রাস্তায়, ধাপচাষের জমিতে, এলাচ বনের মাথায়। নিদ্রাতুর কাঞ্চনজঙ্ঘার মেঘ জড়ানো শরীরে চাঁদের আলপনা আঁকা দেখতে দেখতে রাত গড়িয়েছিল বেশ। আচমকা মেঘ কুয়াশায় ছেয়ে গেল চারপাশ। সঙ্গে হাওয়ার ঝাপটা আর ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি। ঘুম আসছিল না। তাই বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছিলাম। বৃষ্টির তোড়ে ঘরে ঢুকতে হল। ভোর হতে দেখলাম, দিনের প্রথম আলো চলকে পড়ছে কাঞ্চনজঙ্ঘার গায়ে। জলখাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম পথে। শুনশান রাস্তাঘাট। রঙিন প্রজাপতির মতো এক ঝাঁক শিশু চলেছে ইস্কুলে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে প্রার্থনা পতাকা। একটু হেঁটে এলাম নির্জন রবীন্দ্র-স্মৃতিবনে। স্থানীয় গুম্ফা মেগিদাঁড়ার একপাশে পাথরের ফলকে লেখা “Where the mind is without fear...’ রবিঠাকুর কি আদৌ এসেছিলেন রিনচেনপংয়ে? তাঁর স্মৃতিতেই গড়া এই স্মৃতিবন। খাদের ধারে নিঃসঙ্গ বেঞ্চির হাতছানিতে এসে বসলাম একাকী। সামনের রোদঘেরা পাহাড়ে মেঘেদের আলসেমি দেখতে দেখতে আমার বাউল মনে রবিকবির হানাদারি ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি...'। গতকাল শিলিগুড়ি থেকে জোরথাং, লেগশিপ হয়ে দুপুরবেলা এসে পৌঁছেছি রিনচেনপংয়ে। উঠেছি বাসস্ট্যান্ডের কাছেই এক হোটেলে। ঘরের জানলা দিয়েই সারাদিন দেখা যায় পাহাড়ের মাথা টপকে কাঞ্চনজঙ্ঘার রুপোলি শরীর। ধীরে ধীরে নীচে ঝুমচাষের জমি আর এলাচের ক্ষেত ছুঁয়ে দিনের শেষ আলো গুটি গুটি পায়ে চলে গেল নীল পাহাড়ের ওপারে। আঁধার নামলো