লিউপাস ও সচেতনতা

লিউপাস রোগের কারণ ও তার সম্ভাব্য প্রতিকার নিয়ে সবিস্তার আলোচনায় কনসালট্যান্ট ফিজ়িশিয়ান ডা. নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কনসালট্যান্ট রিউম্যাটোলজিস্ট ডা. অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়। লিখছেন অনিকেত গুহ।

সি স্টেমেটিক লিউপাস এরিথেম্যাটোসাস বা সংক্ষেপে লিউপাস একটি দীর্ঘস্থায়ী অটো-ইমিউন রোগ, যা ব্যক্তির দেহে প্রদাহজনিত (ইনফ্ল্যামেটরি) ব্যথার সৃষ্টি করে। সহজ ভাষায় বলা যায়, লিউপাস এক ধরনের ইনফ্ল্যামেটরি আর্থ্রাইটিস। সাধারণত দু'ধরনের আর্থ্রাইটিস দেখা যায়। ইনফ্ল্যামেটরি বা প্রদাহজনিত আথ্রাইটিস, যার মধ্যে লিউপাসও পড়ে। অন্য ভাগটি হল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস। যেখানে কিছু বিশেষ কারণে বোন ডেনসিটি কমতে থাকে। ফলে হাড় ক্ষয়ে যায়। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতে প্রতি ১০,০০০ জনে ৫ জন লিউপাস আক্রান্ত। দুঃখের বিষয় যে, এখনও গাঁটে ব্যথার সমস্যায় লোকজন প্রথমে অর্থোপেডিস্টের কাছেই যান। ফলে ব্যাথাটা লিউপাসের কারণে হলেও অনেক সময় চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়ে যায়।

লিউপাস কী? যে কোনও রোগ প্রতিরোধে দেহের নিজস্ব ইমিউনিটি সিস্টেম ভীষণ কার্যকরী। অটো-ইমিউন ডিজ়িজ শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতার বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠে। দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমকে ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। ফলে নামমাত্র উপসর্গেও হতে পারে

কোনও গুরুতর শারীরিক ব্যাধি। লিউপাস এক প্রকার অটো-ইমিউন রোগ। বলা ভাল, সব অটো-ইমিউন রোগের মধ্যে লিউপাস সবচেয়ে ক্ষতিকারক। বাহ্যিক উপাদান (ফরেন কম্পোনেন্ট) ও নিজস্ব উপাদান (ওন কম্পোনেন্ট), এই দুইয়ের সম্মিলনে গড়ে ওঠে দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। অটো-ইমিউন রোগে দেহে এই দুই উপাদানের অসঙ্গতি দেখা যায়। যার ফলে ইমিউনিটি সিস্টেম তার কার্যক্ষমতা হারায়। লিউপাস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের একাধিক অর্গ্যান এক এক করে বা একসঙ্গে নিষ্ক্রিয় হতে শুরু করে। ব্যক্তির মাথা থেকে পা পর্যন্ত যে কোনও অঙ্গই এই রোগের শিকার হতে পারে। যেহেতু দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে, তাই প্রাথমিকভাবে খুব স্পষ্ট কোনও উপসর্গ দেখা যায় না। পুরো প্রক্রিয়াটিই হয় কার্যত নিঃশব্দে।

লিউপাসের ধরন ও উপসর্গ