দিনের শেষে সূর্যের পড়ন্ত আলো কাটা ঘুড়ির মতো আটকে আছে মাঠের ওপারের আর অশ্বত্থ গাছের ডালটায়। এই বুঝি খসে পড়ে। মাধুকরী সেরে ঘরে ফিরছে বাংলার অবশিষ্ট এক রংচটা বহুরূপী। পুকুর ঘাটে বসে এবার সে সাবান-তেল দিয়ে তুলবে শরীরের রং। সংগৃহীত চাল-টাকা কিছু গেছে নেশার খাতে। আর বাকিটুকু দিয়ে চলবে সংসার। ইতিহাসের এক দীর্ঘ আখ্যান তার আছে। তবে তা কেবল আছেই। ওই কাটা ঘুড়ি বা পড়ন্ত রোদের মতোই, দীর্ঘশ্বাসের ভিতর। বিনোদনের বিচিত্র উদ্যাপনে বহু রূপের এই শিল্প নিভতে নিভতে আজ যেটুকু বেঁচে রয়েছে, তা-ই নিয়েই উত্তরআধুনিক সময়ের কাছে এই প্রতিবেদন।
বহুরূপকথা এককালে পূর্ববঙ্গে ‘কালীনাচ’-এর উৎসব হত। শেষ হত চৈত্র সংক্রান্তির দিনে। সেখানে শিব-শক্তি কাহিনি অবলম্বনে নানারকম গান ও শিবের বন্দনা গাইতেন পূর্ববঙ্গের বহুরূপীরা। মুখোশ পরে সাজতেন কালী । মহাদেব সেজে ঘুরে বেড়াতেন গ্রাম থেকে গ্রামে। ব্যারিস্টার বা সুদখোর মহাজনেরও রূপ ধরতেন তাঁরা। দুধের কলসি নিয়ে গয়লানী সেজে গান ধরতেন— ‘সোয়ামী বেটা ফতুর, মরেও গেছে, মেরেও গেছে— তাই জাত-ব্যবসা না করলেও চলে না। এক সের দুধে পাঁচ সের পানি, জ্বাল দিলে সর পড়ে না, খেতেও স্বাদ লাগে না, তবুও আমার খাঁটি দুধ না খেলে হয় না বাবুয়ানি।” বহুরূপীর ইতিহাস অনেক প্রাচীন। পুরাণ, উপপুরাণ, রামায়ণ, মহাভারত সবেতেই এঁদের উল্লেখ পাওয়া
যায়। পুজো-পার্বণে নানা ছদ্মবেশে কিঞ্চিৎ অর্থের বিনিময়ে আট থেকে আশি সকলকে আনন্দ দিতেন বহুরূপীরা। এঁরা যে সকলেই শিক্ষিত ছিলেন, এমন নয়। কিন্তু পেশা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ছিল সম্পূর্ণ। রঙ্গমঞ্চের কুশীলবদের মতো সাজসজ্জা করার সামর্থ্যও তাঁদের ছিল না। কিন্তু সেই স্বল্প সামর্থ্য দিয়ে তৈরি সাজই অনেকসময় খুব পরিচিত ব্যক্তির পক্ষেও চেনা কঠিন হত। কথায় বলে, ‘বহুরূপীর বাহা রূপ’। ‘বাহান্ন' এখানে 'বহু'-র প্রতিশব্দ। তা এই বাহান্ন রূপধারী বহুরূপী কেবল বাংলাতেই নয়, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশেও এঁদের দেখা যেত। সেখানে তাদের নাম 'বহুরূপিয়া'। একসময় এঁদের নাকি দেখা যেত জম্মু-কাশ্মীরেও। তবে অন্যান্য জায়গার তুলনায় বাংলায় 'বহুরূপী' ছিল একেবারে স্বতন্ত্র এক নাট্যকলা।
This story is from the {{IssueName}} edition of {{MagazineName}}.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the {{IssueName}} edition of {{MagazineName}}.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
আমি জীবনকে ভালবাসি। জীবনের প্রত্যেকটা দিন ভালবাসি
সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন শিল্পী মল্লিকা সারাভাই। নৃত্য উপস্থাপনার মাধ্যমে দিলেন একাধিক জরুরি বার্তা। পারফরম্যান্সের পরে তাঁর মুখোমুখি মধুরিমা সিংহ রায়।
আইন
আপনাদের পাঠানো আইনি প্রশ্নের সদুত্তর দিচ্ছেন বিশিষ্ট আইনজীবী দ্যুতিমালা বাগচী।
সমাধান যখন আইভিএফ
আইভিএফ করালে জীবনধারায় কেমন পরিবর্তন আনা জরুরি? এ নিয়ে ভুল ধারণা কী কী? জানাচ্ছেন ইনফার্টিলিটি ও আইভিএফ স্পেশ্যালিস্ট ডা. সুজয় দাশগুপ্ত। লিখছেন উপমা মুখোপাধ্যায়।
ঘরোয়া রূপটান
বাড়িতেই হতে পারে রূপটান। টিপস দিলেন রূপ বিশেষজ্ঞ শেহনাজ হুসেন।
কাঠচম্পা সাক্ষী
মনের গভীরে একটা দুঃখ চেপে বসে থাকে কমলার। বড় ছেলের বিয়ে হয়েছে। আর বাড়ির বৌ এক রাতও এ বাড়িতে থাকেনি। এক বার ‘মা’ বলেও ডাকেনি। ছোট ছেলের বিয়ে তো নিজেই দেখে দিলেন। তফাত তেমন কিছু হয়নি। শান্ত স্বভাবের। কম কথা বলে মেয়েটি। আসলে সমাজে পরিবর্তন এসেছে।
স্বাদ-এ শেফ ১
চিকেন বা মাছের যে কোনও পদ বহুল জনপ্রিয় বাঙালিদের মধ্যে। চিরায়ত সেই স্বাদকেই নতুন আঙ্গিকে ধরেছে ডাইনার ৪৯বি। বিভিন্ন রেসিপির মধ্যে থেকে চারটি এক্সক্লুসিভ পদ সাজিয়ে দিলেন কাফের কর্ণধার সপ্তক মান্না।
হার্টের চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতি: ট্যাভি
বয়স্কদের ক্ষেত্রে অ্যাওটিক স্টেনোসিসের চিকিৎসায় ওপেন হার্ট সার্জারির বদলে জনপ্রিয় হচ্ছে নতুন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি—‘ট্যাভি’। বিশদে আলোচনা করলেন বিশিষ্ট কার্ডিয়োলজিস্ট ডা. শুভানন রায়। লিখছেন মধুরিমা সিংহ রায়।
প্রসঙ্গ পপ-আপ
কোনটা প্রদর্শনী, কোনটা পপআপ? পপ-আপ করতে গেলে কী মাথায় রাখা উচিত? বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জানলেন সংবেত্তা চক্রবর্তী।
হাইএন্ড পপ-আপ সংস্কৃতি
দোকান, শপিং মল বা অনলাইন কেনাকাটাকে কয়েক গোলে পিছনে ফেলে দেবে লাইফস্টাইল পপ-আপের ক্রেজ। শহর জুড়ে বছরভর আয়োজিত হচ্ছে একাধিক হাইএন্ড পপ-আপ। যেখানে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় সম্ভ্রান্ত রুচিবোধ ও সাধবিলাসের স্বপ্ন। শহুরে এই নতুন ট্রেন্ডের খোঁজ করলেন অনিকেত গুহ
পপ-আপে সফল যাঁরা
নিজেদের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাঁদের ধ্যান-জ্ঞান। পপআপ তাঁদের সেই সাফল্যের পথে অন্যতম জরুরি মাধ্যম। পপআপে সফল এমন ৮ জন নারীর গল্প শুনলেন উপমা মুখোপাধ্যায়।