বয়সকালে চলতে ফিরতেও পারত না। অক্ষম জড়ের মতো শুয়ে-বসে দিন কাটাত। তবু লেঠেল শব্দটি তার নামের সঙ্গে আজও জুড়ে আছে। মৃত্যুর এত বছর পরেও। গ্রামে হরেক গল্প তাকে নিয়ে। কোনটা যে ঠিক আর কোনটা আজগুবি, বুঝে ওঠা যায় না। বাংলা চোদ্দোশো সালের কাছাকাছি সময়ে ভবতারণের বয়স তিরাশি-চুরাশি। আটচালা ঘরের একটি পুরনো খুঁটিতে পিঠ ঠেকিয়ে হাততালি দিত আর বকবক করত সারা দিন। তার হাতে প্রায় সময়েই দেখা যেত একটা বাঁশের লাঠি। তেলতেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে ঘরের মেঝেতে চটাসচটাস শব্দ করত। পাশ দিয়ে কেউ গেলে এক সঙ্গে অনেক প্রশ্ন ছুড়ে দিত হুড়মুড়িয়ে। উত্তর না পেলে আক্ষেপ করত। আবার কেউ যদি মুখ বাড়িয়ে কুশল জিজ্ঞেস করত, আশীর্বাদ ঝরে পড়ত মুহুর্মুহু। মাটির মেঝেতে জীর্ণ মাদুরের উপর গায়ে আধময়লা কাঁথা জড়িয়ে শুয়ে-বসে দিন কাটাত।
দেখে কেউ বিশ্বাস করতে পারত না যে, এই মানুষটা এক কালে সুন্দরবনের আবাদমহলে কৃষকবাহিনীর সেনাপতি ছিল। কেউ ভাবতে পারত না যে, এই মানুষটার নেতৃত্বে জমিদারের গোলার ধান লুঠ করেছিল বুভুক্ষু চাষিরা। তবে এ সবের জন্য যে ভবতারণকে লেঠেল বলত লোকে, তা কিন্তু নয়। এই পরিচয়টি চাউর হয় তার মৃত্যুর পর। লেঠেল ভবতারণের জীবনের শেষ প্রান্তে সে এক অদ্ভুত ঘটনা। ভবলেঠেলের নাতি চন্দর ছুতোর মিস্ত্রি। তার ভাব-ভালবাসা হয় খ্রিস্টান পাড়ার সেবাস্তিয়ান সর্দারের মেয়ে জুলিয়েটের সঙ্গে। এরা বেদিয়া সমাজের মানুষ। রাঁচি থেকে আবাদমহলে এসে সেবাস্তিয়ানের বাপ খ্রিস্টান হয়েছিল। ঘোরতর আপত্তি আসে চন্দরের বাড়ি থেকে। খ্রিস্টান পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক! ছ্যা ছ্যা ছ্যা! বাড়ি শুদ্ধ লোক বেঁকে বসে বিয়েতে। চন্দরের সমস্যাটা হল, ও একটু নরমসরম। পালিয়ে বিয়ে করবে, এরকম মেরুদণ্ডের জোর ছিল না। ফলে বিয়ে নিয়ে সমস্যাটা বাড়তেই থাকে। প্রথম দিকে দুটো পরিবারের মধ্যে অশান্তিটা চাপা থাকলেও পরে অনেক দূর গড়িয়ে যায়।
দুই শতাব্দর সন্ধিক্ষণের এই সময়টায় খানিকটা উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করে যেন মানুষ। ধর্ম, জাতপাত নিয়ে সমস্যা বাড়তে থাকে গ্রামসমাজে। দেশভাগের পর জীবনের দায়ে যে সব সংস্কার মানুষ হারিয়ে ফেলেছিল, সেগুলি আবার খুঁজে খুঁজে জড়ো করা শুরু হয়। নিজেদের আধুনিক পরিচয়ের উপর তাি দেওয়া গৌরবের নকশা সেলাই যেন। চন্দর এবং জুলিয়েটের প্রেম-ভালবাসা রাজনৈতিক গোলযোগের কারণও হয়ে ওঠে। ভবতারণ
この記事は Desh の June 17, 2024 版に掲載されています。
7 日間の Magzter GOLD 無料トライアルを開始して、何千もの厳選されたプレミアム ストーリー、9,000 以上の雑誌や新聞にアクセスしてください。
すでに購読者です ? サインイン
この記事は Desh の June 17, 2024 版に掲載されています。
7 日間の Magzter GOLD 無料トライアルを開始して、何千もの厳選されたプレミアム ストーリー、9,000 以上の雑誌や新聞にアクセスしてください。
すでに購読者です? サインイン
ভূতের বাড়ি
প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।
চার দশকের মেট্রো
কলকাতায় মেট্রো রেলের চার দশক পূর্তি এই শহরের গতিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য এক মাইলস্টোন।
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত
ঘরের মাঠে এমন পর্যুদস্ত হওয়া নতুন হলেও প্রত্যাশা থাকুক, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারতীয় দল।
ফিরলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। তাঁর \"আমেরিকা ফার্স্ট\" নীতি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারত, চিন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আনবে তাঁর নতুন প্রশাসন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দর্পণে প্রতিবিম্বিত তাসের ঘর
ওয়াশিংটন ডিসি প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার \"হাউস অফ কার্ডস\"। ফ্র্যাঙ্ক আন্ডারউড ও তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী ক্লেয়ারের ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প, যেখানে ক্লেয়ার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হন।
মেরুকৃত এক সমাজের নির্বাচন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিসের পরাজয় ও ট্রাম্পের জয় গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজের মূল প্রশ্নগুলো নিয়ে নাগরিকদের হতাশা প্রকাশ করে।
বহুরূপী কৃত্তিকা
হেমন্ত আর শীতের সন্ধ্যায় মাথার ওপর কৃত্তিকাকে দেখায় উজ্জ্বল প্রশ্নচিহ্নের মতো। তাকে ঘিরে প্রশ্নও কম নেই।
দিগন্তের আলো
মাদল কুহকের অদ্ভুত টানাপোড়েনের গল্পের প্রতিটি ভাঁজে কেবল একটাই প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে—কুহক কি কখনও তাকে ডেকেছিল? জীবনের আলো-ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, মাদল সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বারবার হারিয়ে ফেলে নিজের পথ। তবু ভিড়ের মাঝে, তার পিছু হেঁটে, কমলা আঁচলের টানে, কুহকের উপস্থিতি যেন বারবার তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
অসমাপ্ত গল্পের পাতা
একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: \"করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে ভোরের মিষ্টি রোদ আড়মোড়া ভাঙছে, চায়ের ধোঁয়া আর পায়রার ঝাঁক জীবনের সাদামাটা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে। ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতি ও স্মৃতির মিশেলে উঠে আসে এক টুকরো রোমাঞ্চকর অনুভূতি।\"
চৈতি-ঝরা বেলায়
মুহূর্তের ছোট্ট বিবরণ ডোরবেলের দিকে হাত বাড়িয়ে রুহানি হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে রাখা একজোড়া মহিলা জুতো দেখে তার মনের ভেতরে কিছু ভাবনা খেলে গেল। সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নেওয়ার পরও বেলটা বেজে উঠল। মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, \"কী রে, এত হাঁপাচ্ছিস কেন?\" রুহানি ঢুকেই ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, \"কে এসেছে মা?\" মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, \"ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।\" মনে হচ্ছে, স্মৃতিকণা কিছু লুকোচ্ছে। মনের ঝড় থামাতে রুহানি একা একা মায়ের ঘরে ঢুকে। ততক্ষণে ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে আর তার পুরনো দিনের কথাগুলো মিলে এক নতুন গল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছে।