অনাহুত
Desh|October 02, 2024
শেষ বিকেলের ম্লান আলোয় বিজনের লম্বা শরীরটা মিলিয়ে যায় ধীরে ধীরে। বারান্দার গ্রিলে হাত রেখে দাঁড়িয়ে থাকে সৃজলা।
অজয় কুমার দত্ত
অনাহুত

তিনমাথা মোড়ের কাছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল সোমনাথ, মুখে আকাশ-রঙা সার্জিকাল মাস্ক। রাস্তায় মানে অটোর লাইনে। লাইন অবশ্য বেশি নয়। আজ রোববার বলে অফিসে যাওয়ার লোকজন নেই। না হলে তো বিরাট লাইন পড়ে যায় অন্যান্য দিন। সোমনাথ অবশ্য অটোর লাইনে আসে না। তার হল মেট্রো লাইন। একবার চাপলে ঠিক চব্বিশ মিনিট লাগে। তার পর দশ মিনিট পা চালালেই অফিস।

আজ ছুটির দিনে সে বেরিয়েছে বাজার করতে। মানে সব্জি বাজার, মাছ-মাংস এই সব। হয়েও গেছে কেনাকাটা। ওর হাতে ঝুলছে ভারী বাজারের ব্যাগ, ব্যাগের কানা দিয়ে উঁকি মারছে লাল কচু শাকের ডাঁটা। ইলিশ মাছ পেয়ে গেল বর্ষার শুরুতেই। তেমন বড় নয়, সাতশো আটশোর মতো। অবশ্য বড় পেলেই সে যে কিনত তা নয়। অত খরচ করার সামর্থ্য তার নেই। ওজন এক কিলো বা তার বেশি হলেই ইলিশ মাছের দামটা একটু লাফ দিয়ে ওপরে উঠে যায়। আর বড় মাছ কিনেই-বা কী হবে। খাওয়ার লোক তো মাত্র দু'জন। ও আর সৃজলা। তার চেয়ে এই ভাল। সৃজলাকে আজ ইলিশের মাথা দিয়ে কচুর শাকটা করতে বলবে। সঙ্গে চিকেন কারি। বাকি মাছটুকু থাকবে পরের দিনের জন্য।

এখন সোমনাথ যাচ্ছে যাদবপুরে। ওখানে একটা দোকানে প্রেশার কুকারটা সারাতে দিয়েছিল ক'দিন আগে। সিটি ঠিকমতো বাজছিল না। ভেপারও বেরিয়ে যাচ্ছিল কোনা থেকে। হাতে ভারী সব্জির ব্যাগ, মাছের ব্যাগ নিয়ে অসুবিধেই হচ্ছিল ওর। বাজার করার আগে কুকারটা নিয়ে এলেই ভাল হত হয়তো। কিন্তু কী করবে! দোকানটা যে সাড়ে দশটার আগে খোলেই না।

এটা ভাবতে ভাবতেই লাইন এগিয়ে অটোর একদম কাছে। সোমনাথের আগে একটা মোটাসোটা লোক, সে প্রথমে ঢুকে সাইডে ডান দিকে বসল। সোমনাথকে মাঝখানেই বসতে হবে। এই মাঝখানের সিটটা ওর বেজায় অপছন্দের। মুখ ব্যাজার করে ঢুকে বসতেই তার বাঁ দিকে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে, এরকম চেহারার একটা আদিবাসী বৌ উঠে বসল। তার কোলে একটা বাচ্চা। মোটা লোকটা দরদর করে ঘামছে। তার পরনের ময়লা জামা থেকে বের হচ্ছে বাসি ঘামের গন্ধ। খুব বিরক্তি নিয়ে সোমনাথ অন্য দিকে মুখ ফেরায়। দেখে, বাচ্চাটা চোখ গোল গোল করে তাকে দেখছে।

この記事は Desh の October 02, 2024 版に掲載されています。

7 日間の Magzter GOLD 無料トライアルを開始して、何千もの厳選されたプレミアム ストーリー、9,000 以上の雑誌や新聞にアクセスしてください。

この記事は Desh の October 02, 2024 版に掲載されています。

7 日間の Magzter GOLD 無料トライアルを開始して、何千もの厳選されたプレミアム ストーリー、9,000 以上の雑誌や新聞にアクセスしてください。

DESHのその他の記事すべて表示
কবিতার খাতা
Desh

কবিতার খাতা

দিন শেষ হয়ে যায়। অন্ধকার নেমে আসে আকাশ থেকে। কিন্তু রোজকার মতো ঝলমলিয়ে ওঠে না তাঁর পাড়া। দোকান-বাজার। শব্দ ওঠে জেনারেটরের। বড় বড় আলো পড়ে ধ্বংসস্তূপের ওপর। যেন সেটাই মঞ্চ।

time-read
8 分  |
January 02, 2025
কলের গাড়ি
Desh

কলের গাড়ি

এক দিন আবিষ্কার হল অগ্ন্যাশয়ে বাসা বেঁধেছে কর্কট ব্যাধি, অন্তিম পর্যায়। পারিবারিক আবহাওয়ায় দ্রুত পরিবর্তন দেখা দিল। রোগশয্যায় শুয়ে সবই টের পায় শান্তিলাল। এক দিন হীরালাল সামনে এসে দাঁড়ায়।

time-read
10+ 分  |
January 02, 2025
উপেনবাবুর মেয়ে
Desh

উপেনবাবুর মেয়ে

গোকুলপিঠে খেতে খেতে ছেলেবেলার স্মৃতি জাগিয়ে তোলে, যখন শীতের সকালে মায়ের হাতে বানানো গরম গরম পিঠে ছিল সবচেয়ে বড় সুখ।

time-read
10 分  |
January 02, 2025
ভালবাসার গল্প
Desh

ভালবাসার গল্প

বাদামি চুলের এলা কাঁদছিল। কিন্তু অমল যেন দেখতে পাচ্ছিল বাসবকাকার মুখ। দেখতে পাচ্ছিল আবছায়া একটা ঘর। আর তার মধ্যে ছোট্ট একটা পুঁটলির মতো পড়ে আছে ওর অসহায় বাবা।

time-read
9 分  |
January 02, 2025
তিনি নক্ষত্র হতে জানতেন
Desh

তিনি নক্ষত্র হতে জানতেন

জাকির হুসেন, তবলার অতুলনীয় জাদুকর, যাঁর স্পর্শে তবলা খুঁজে পেয়েছিল নতুন ভাষা। তাঁর প্রতিভা ও ক্যারিশমা আজও সঙ্গীতজগতে এক আলোকবর্তিকা।

time-read
4 分  |
January 02, 2025
সুখলালের কিস্সা
Desh

সুখলালের কিস্সা

সন্ধের ভিজিটিং আওয়ারে সুখলাল দেখেছিল, ফিমেল ওয়ার্ডের আঠাশ নম্বর বেডে সাদা কাপড়ে ঢাকা একটা দেহ। মন মানতে চাইছিল না। এখনও বারবার মনে হয়, ফুলমণি বলেছিল, আজ কোথাও যেয়ো না।

time-read
10+ 分  |
January 02, 2025
১৯৬৪
Desh

১৯৬৪

শৈশবের সেই যাত্রার মধ্যে মধ্যে মিশে ছিল রোমাঞ্চ; গোয়ালন্দে গাদার মাছের কাঁটা গলায় বিঁধে যাওয়ার পর দলা করে মাখা শুকনো ভাত মুখে পুরে গিলে দেওয়ার ভিতর থেকেও আনন্দই জেগে উঠেছিল সেবার।

time-read
10 分  |
January 02, 2025
রক্ষক
Desh

রক্ষক

আরিয়ানাকে নিয়ে চলে গেছে লুকাস। একা বসে আছে রাফায়েল। ভাবছে, আজ যদি ওর নিজের সন্তান বেঁচে থাকত, তবে তো কুড়ি বছর বয়স হত তার। সে হয়তো কোনও ইউনিভার্সিটিতে আন্ডার গ্র্যাড করত এখন।

time-read
10+ 分  |
January 02, 2025
ফুলের তোড়া
Desh

ফুলের তোড়া

বাবুই মায়ের দিকে বিষণ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল, “মা, তুমি তো রোজ দুটো খবরের কাগজ আদ্যোপান্ত পড়ো। বাবা সারা বিশ্বের খবর রাখে। একটি মেয়ে রাজনীতি করছে, এ কি খুবই বিস্ময়কর?”

time-read
9 分  |
January 02, 2025
সমাজের শিকড়ে
Desh

সমাজের শিকড়ে

মানুষ যে ভাবে ৯ অগস্টের পর একটা সমাজে সন্নিবিষ্ট হতে পেরেছিল, তার পিছনে ছিল হৃদয়ের জোরালো টান।

time-read
5 分  |
January 02, 2025