রানি কাহিনির অন্তিম অধ্যায়

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এসে পৌঁছল চিরকুট, থেমে গেল কাজ। মুহূর্তে সুনসান ব্যস্ততম কাজের জায়গা। রানি নেই। কিন্তু এতদিন সশরীরে থেকেও ঠিক কোথায় ছিলেন তিনি? এও কি তবে একধরনের অস্তিত্ব-সংকট? লিখেছেন তিলোত্তমা মজুমদার।

তিনি প্রয়াত হয়েছেন। রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয়। দীর্ঘতম রাজত্বকালের নিরিখে ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুইয়ের পরে ইনি স্থান করে নিয়েছেন। ব্রিটেনে শোক পালিত হচ্ছে। সাধারণ নয় অবশ্য। রাজকীয় শোক। যেখানে সাধারণ প্রজা প্রাসাদের সামনে মৃত্যুসংবাদের অপেক্ষায় নীরবে দুখু-দুখু মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকে, চরম মুহূর্তে শোনা যায় আভিজাত্যপূর্ণ সংযত শোকসংবাদ, তিনি এখন শান্তিতে বিশ্রাম নিচ্ছেন। প্রাসাদে রাজকীয় পতাকা অর্ধনমিত হয়ে আসে। সঠিক অর্থে পতাকা রাজকীয় নয় অবশ্য। গণতান্ত্রিক রাজতান্ত্রিক স্বাধীন ইউনাইটেড কিংডমের পতাকা।

আবার এমনও হতে পারে, দেশের পতাকা যখন দেশের শাসনতন্ত্রের চূড়ায় অধিষ্ঠিত রাজসিংহাসনের ছাতে রক্ষিত হয় তখন তাকে রাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক দেশের পতাকা বলাই সঠিক। সে যাই হোক না কেন, পতাকা প্রতীক মাত্র। একটি দণ্ড ও এক টুকরো কাপড় বই কিছু তো নয়। লোকে যে অর্থ ও সম্মান তার ওপর আরোপ করে, সে সেই প্রতীকায়িত অবস্থান, ক্ষমতা ও দার্শনিক অভিব্যক্তি ও সম্যক মানের আসাবরদার হয়ে দণ্ডায়মান থাকে। সে নিজে যেমন নিজস্ব সত্তার ব্যাখ্যাকর্ত্রী নয়, তেমনই তার দুঃখ শোক আনন্দ উল্লাস সকলই অনুপস্থিত। রানির মৃত্যুতে যে তাকে নমিত করে দেওয়া হল, শোকের প্রকাশ রূপে, সেই প্রতীকসর্বস্ব পরিস্থিতি এখন গণমাধ্যমে অন্যতম আলোচ্য।