রাঙা পলাশের খোঁজে বড়ান্ত
Sukhi Grihakon|March 2024
পলাশের রাঙা নেশায় মন মাতিয়ে চলুন যাই পুরুলিয়া। প্রকৃতি রঙিন চিত্রপট সাজিয়ে স্বাগত জানাবে আপনাকে, লিখলেন মঞ্জিলা চক্রবর্তী।
মঞ্জিলা চক্রবর্তী।
রাঙা পলাশের খোঁজে বড়ান্ত

নিস্তব্ধ প্ল্যাটফর্মে তখন জনা চার'পাঁচেক আদিবাসী নরনারীর ইতিউতি ঘোরাফেরা। নির্জন স্টেশনের দু'পাশে রাঙা শিমূল, পলাশ, সদ্য লালচে বাদামি পাতা গজানো বট, অশ্বত্থরা যেন বসন্তের সাজে অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য প্রস্তুত।

বাইরে আমাদের অপেক্ষায় করিম মিঞার বাহন। লাল মোরামের রাস্তায় ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে টলমলে গতিতে এগিয়ে চলেছে সে। পথের দু'পাশে রাঙা পলাশরা মাথা দুলিয়ে বলছে সুস্বাগতম! দূরে মুরাডি পাহাড়ের কোলে শিমূল পলাশের চাঁদোয়া খাটানো। পাহাড়ের মাথায় আকাশের গায়ে তাদেরই রাঙা নেশা ছড়িয়ে রয়েছে!

চলছে লুকোচুরি খেলা। এই মেঘের আড়ালে লুকিয়ে পড়লেন তো পরক্ষণে বেরিয়ে এলেন আলো ছড়িয়ে। অবশেষে মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত। বড়ন্তি লেকের জলে কমলা-লাল রং গুলে সূর্যাস্তের ছবি আঁকলেন স্বয়ং সূর্যদেব! মনবাক্সে আর এক দৃশ্যরত্ন জমা পড়ল! ক্রমে সন্ধ্যার তরল অন্ধকারে ঢেকে গেল চারপাশ। লেকের পাশের সোলার বাতি জ্বলে উঠল একে একে। নিঝুম, নিস্তব্ধ, জনমানবহীন রাস্তা ধরে ফিরছি রাত ঠিকানা 'মহুলবন'-এ। আকাশে তখন দোলপূর্ণিমার পূর্ণ চন্দ্র। পথের দু'পাশে তমাল, মহুয়া, পলাশরা জ্যোৎস্না মাখছে, বাতাসে বইছে একটানা ঝিঁ ঝিঁ পোকার গান...!

শুশুনিয়া ও বিহারীনাথ পাহাড়ের ডাকে পরদিন সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লাম বাঁকুড়ার উদ্দেশে। কখনও আদিবাসী গ্রাম ছুঁয়ে, কখনও বা শাল পিয়ালের বনের মধ্যে দিয়ে যাত্রা।

বিহারীনাথ পাহাড়ের কোলে পুণ্যতীর্থ বাবা বিহারীনাথের মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরের গঠনশৈলীতে তেমন বিশেষত্ব লক্ষ করা যায় না। মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে হর-পার্বতীর অবস্থান। এছাড়া চারপাশে ছোট ছোট মন্দিরাংশে অন্যন্য দেবদেবী বিরাজমান। সবুজ পাহাড়ের ছায়ায়, ভগবানের আশ্রয়ে এমন নির্জন, নিস্তব্ধ পরিবেশে মনের প্রশান্তি মিলবে।

ইতিহাসের খোঁজে গড়পঞ্চকোটে হাজির হলাম সেদিন অপরাহ্নে। পাঞ্চেত পাহাড়ের পাদদেশে বর্গী আক্রমণের স্মৃতি বুকে জরাজীর্ণ দেহে আজও নীরবে দাঁড়িয়ে আছে পঞ্চকোট রাজাদের রাজপ্রাসাদ ও মন্দিরগৃহ। ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে সরফরাজ খানকে পরাজিত করে বাংলার মসনদে বসেন নবাব আলিবর্দি খান। পরবর্তীকালে সরফরাজ খানের আত্মীয় রুস্তম জং রাজত্ব পুনরুদ্ধারে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।

Denne historien er fra March 2024-utgaven av Sukhi Grihakon.

Start din 7-dagers gratis prøveperiode på Magzter GOLD for å få tilgang til tusenvis av utvalgte premiumhistorier og 9000+ magasiner og aviser.

Denne historien er fra March 2024-utgaven av Sukhi Grihakon.

Start din 7-dagers gratis prøveperiode på Magzter GOLD for å få tilgang til tusenvis av utvalgte premiumhistorier og 9000+ magasiner og aviser.

FLERE HISTORIER FRA SUKHI GRIHAKONSe alt
বন্যার আগে
Sukhi Grihakon

বন্যার আগে

একটা গল্প তৈরি হতে মনের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট স্থান লাগে। বিম্বা ঠিক এমন একটা মুহূর্ত খুঁজছিল। কিন্তু বাইরের বৃষ্টি যেন তার সমস্ত চিন্তাভাবনাকে ধূসর করে দিয়েছে। মাথার উপর বেগুনি রঙের ছাতা ধরে, বৃষ্টিতে ভেজা লম্বা পোশাক আর মাটির কাদা মাড়িয়ে বিম্বা এগিয়ে চলেছে। এই বৃষ্টিভেজা দিনগুলিতে তার গল্প লেখার অভ্যাস বেড়ে উঠেছে। যদিও কবিতা তার আসল ভালোবাসা—যা মনের গভীরে নিজে নিজে প্রস্ফুটিত হয়, গর্ভস্থ শিশুর মতো। বিম্বার পাশের কটেজে থাকা মালিনীও যেন এমন এক যাপনের সন্ধানে এসেছেন। একসময়ের কর্মব্যস্ত জীবন পেরিয়ে, সিনিয়র হোমের নির্জন একঘেয়েমি থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির কোলে এসে নিজেকে খুঁজছেন। ঝম, বিম্বার সাত বছরের সন্তান, এক বৃষ্টি ভেজা সকালে তার সরল আর মজার কথায় মালিনীর মনের জমে থাকা ক্লান্তি মুছে দেয়। যেন দীর্ঘদিনের একাকিত্বের পর নতুন করে কোনও সম্পর্কের উষ্ণতায় সিক্ত হচ্ছেন মালিনী। বৃষ্টি, অরণ্য আর মানুষের গল্প যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। জীবন কোথাও থেমে থাকে না। সময়ের স্রোতে সবই একদিন গল্প হয়ে ওঠে।

time-read
9 mins  |
December 2024
অপমান
Sukhi Grihakon

অপমান

এটি একটি অনুভূতির গভীরতা ও পরিবারের সম্পর্কের অস্থিরতা নিয়ে লেখা একটি গল্পের অংশ। বনলতা, একজন প্রবীণ মহিলা, তার শাশ্বতী ও অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অনেক অপমান সহ্য করছেন। তার জীবন নানা অস্থিরতার মধ্যে বিভক্ত, এবং তিনি কখনওই নিজের জন্য কিছু ভাবেননি, সবসময় অন্যদের জন্য নিজেকে সামঞ্জস্য করেছেন। তবে, শাশ্বতীর কথায় আহত হয়ে তিনি এক ধরনের মানসিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিজেকে পুনর্মূল্যায়ন করতে শুরু করেছেন, বিশেষত যখন তার আত্মবিশ্বাস এবং প্রাপ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ইরাবতী, একজন সহানুভূতিশীল বন্ধুর মতো, বনলতাকে বুঝিয়ে দেন যে নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করা জরুরি, এবং তাকে নিজের শান্তি ও সম্মান পুনরুদ্ধারের জন্য দুর্গাপুরে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

time-read
10+ mins  |
December 2024
মিস এনসাইক্লোপিডিয়া
Sukhi Grihakon

মিস এনসাইক্লোপিডিয়া

পিঙ্কি চক্রবর্তী, তেইশ বছর বয়সী, মুম্বাইয়ের একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করছেন এবং বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের জীবনপঞ্জি প্রস্তুত করতে ভালোবাসেন। তার ফেসবুক পেজে প্রতিদিনই বিখ্যাত ও অখ্যাত ব্যক্তিদের তথ্য প্রকাশ করেন, যেগুলি অনেকের জন্য অজানা থাকে। তার এই কাজের ফলে, অনেকেই তার প্রশংসা করেছেন এবং তাকে ‘মিস এনসাইক্লোপিডিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। পিঙ্কি একজন প্রামাণিক তথ্য সংগ্রাহক, যিনি অনেক সাহিত্যিক ও শিল্পীর জীবনভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং সেগুলি জনগণের সামনে তুলে ধরছেন।

time-read
9 mins  |
December 2024
সুন্দরের অন্তরমহল
Sukhi Grihakon

সুন্দরের অন্তরমহল

পালমশায়ের গলার আওয়াজ মিহি ও মৃদু, তিনি কথা বলেন আঙুল নাড়িয়ে নাড়িয়ে, যেন হাওয়ায় ছবি আঁকছেন। গলা শুকিয়ে আসায় চা খাওয়ার ইচ্ছে জানিয়ে তিনি গুপীর দোকানে যাওয়ার প্রস্তাব দেন, যেখানে চা, টোস্ট এবং অন্যান্য নাস্তাও পাওয়া যায়। তাঁর এলাকার ইতিহাসের গল্প শোনাতে শোনাতে তিনি জানালেন, তাঁদের পূর্বপুরুষরা বাংলাদেশের নাটোর থেকে এসে মৃৎশিল্প শুরু করেছিলেন এবং এখন তাঁদের তৈরি মূর্তি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। পালমশায়ের মূর্তি তৈরির শৈলী গ্রিক বা রোমান শিল্পের প্রভাবের মতো, কিন্তু সেই সঙ্গে আছে বাঙালি নারীর সহজ সৌন্দর্য। তবে তাঁর স্ত্রী এ বিষয়ে একটু ভিন্ন মত পোষণ করেন, এবং মৃৎশিল্পের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা তিক্ত।

time-read
10+ mins  |
December 2024
ভালোবাসার ফুলছাপ
Sukhi Grihakon

ভালোবাসার ফুলছাপ

ধান কাটার পরিশ্রম শেষে সন্ধ্যায় ক্লান্ত সুবল পবনের চায়ের দোকানে ঢুকেছিল। দোকানটি ঘরের কাছে, বাঁশের মাচায় বসার ব্যবস্থা। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে তিনি শান্তিতে চুমুক দিচ্ছিলেন, এমন সময় বাইরে হারান আর নিমাইয়ের গলা শুনে তার কানে এল ললিতার নাম। তারা বলছিল, ইয়াকুব মিঞার সঙ্গে ললিতার নাকি বিয়ে হবে। ললিতার মতে, সে কাউকে ভয় পায় না, নিজের কাজ করবে। তবে হারান আর নিমাই মনে করছিলেন, ইয়াকুবের পরিবারের কাছে ললিতার জন্য ভালো কিছু হতে পারে। এসব কথা শুনতে শুনতে সুবলের মন মেঘলা হয়ে গেল, বিশেষত ললিতার সিদ্ধান্তের পর।

time-read
10 mins  |
December 2024
তিন রঙের ফুল
Sukhi Grihakon

তিন রঙের ফুল

শাসুজিত বসাক শ্বেতী হাতে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বেঁধে দিতে দিতে বললেন, \"এখনও আগের মতোই ব্যথা আছে?\" সোমপ্রভা মুখ ঘুরিয়ে বললেন, \"এ শা, ব্যথা সহজে যাবে না। তাড়াতাড়ি করো...\" শাশ্বতী হাসলেন, \"কথায় কথায় এত রেগে যান কেন বলুন তো? রাগলে আপনার শরীর খারাপ হয়, বোঝেন না?\" সোমপ্রভা বললেন, \"হোক। তুমি মাথাব্যথা করো না।\" শাশ্বতী বুঝতে পারলেন, রাগ কমছে সোমপ্রভার। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাগও বেড়ে গেছে, তবে শাশ্বতী তা মেনে নিয়েছেন। শাশ্বতী জানতেন, রণজিৎ তাঁর মাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন, কিন্তু শাশ্বতী কখনও কখনও বিরক্ত হতেন। রণজিৎ মারা যাওয়ার পর শাশ্বতী কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছিলেন, কিন্তু সোমপ্রভা তাঁর পাশে ছিলেন।

time-read
10+ mins  |
December 2024
গলি
Sukhi Grihakon

গলি

নীলিমা মিত্র, একজন মনোবিদ, হাতে ধরা দামি মোবাইল ফোনটি থেকে চোখ তুলে তাকালেন এক দম্পতির দিকে। স্বামী-স্ত্রীর অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখে, নীলিমা তাঁদের সমস্যা জানতে চাইলেন। মানসিক সমস্যা বা আবেগের জটিলতা সমাধান করতে তিনি কথা বলেন, তবে কখনও পেশাগত দৃষ্টিভঙ্গি হারান না। এই পরিস্থিতি তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হলেও, তিনি তাঁর নিয়ম এবং পেশাদারিত্ব বজায় রেখে ক্লায়েন্টের সমস্যার মূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।

time-read
10+ mins  |
December 2024
মহুল ভিজা রাত
Sukhi Grihakon

মহুল ভিজা রাত

মহুলতলায় দাঁড়িয়ে আছে কাজল। বাইকটা স্ট্যান্ড দেওয়া আছে রাস্তার পাশে। অপেক্ষা করছে সে তার ভালোবাসার মানুষটার জন্য।

time-read
7 mins  |
December 2024
রুদ্রাণী রূপে মা সারদা
Sukhi Grihakon

রুদ্রাণী রূপে মা সারদা

একুশ শতকের নারী ভাবনার সঙ্গে উনিশ শতকের মা সারদার ভাবনার সাযুজ্য নিয়ে লিখছেন পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

time-read
6 mins  |
December 2024
শিব ঠাকুরের আপন দেশে
Sukhi Grihakon

শিব ঠাকুরের আপন দেশে

গাঢ় নীল আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শ্বেতশুভ্র হিমালয়। পর্বতের গহিন অন্দরে ঘুরে আসার অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিলেন কমলিনী চক্রবর্তী।

time-read
10 mins  |
December 2024