• তখন ‘সন্ন্যাসী রাজা' ছবির শ্যুটিং চলছে। শ্যুটিং চলাকালীন উত্তমকুমার একদিন রাতে তাঁর বাড়িতে খাওয়াদাওয়া ও গানবাজনার আয়োজন করেন। আমিও নিমন্ত্রিত। কিন্তু পার্টি চলাকালীন হঠাৎ লক্ষ করলাম যে, উত্তমদা মাঝে মাঝে খুব গভীরভাবে কিছু ভাবছেন। কী হয়েছে ঠিক বুঝতে না পেরে সোজা চলে গেলাম যেখানে উনি চুপ করে বসেছিলেন। জিজ্ঞাসা করলাম— তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে দাদা? উত্তমদা মুখ তুলে বললেন, “না রে বিশু, তেমন কিছু নয়। শরীর ভালোই আছে। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছিস। একটু আনমনা হয়ে আছি।' বললাম, এনি আদার প্রবলেম দাদা? হোয়াই আর ইউ লস্ট? ( দাদা আর কোনও সমস্যা? কেন আনমনা হয়ে আছ?) এর উত্তরে দাদা তাঁর মুখটা আমার কানের কাছে এনে প্রায় ফিসফিস করে বললেন, 'বিশু, কাল সন্ন্যাসী রাজার খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা সিন আছে। সেসব নিয়েই ভাবছি। সিনগুলো কনসিভ করার চেষ্টা করছি। তাই আমাকে হয়তো একটু অন্যমনস্ক লাগছে। ডোন্ট মাইন্ড, তোরা সবাই এনজয় কর। আমি আজ একটু তাড়াতাড়ি শুতে যাচ্ছি।' কথা শেষ করেই সবাইকে 'গুডনাইট' বলে শুতে চলে গেলেন। আসলে তিনি ঘরে গিয়ে সম্পূর্ণ একলা হয়ে ওই দৃশ্যগুলোর মধ্যে তলিয়ে যেতে চাইলেন। প্রবেশ করতে চাইলেন চরিত্রের গভীরে। এই হলেন অভিনেতা উত্তমকুমার। 'দ্য গ্রেট মহানায়ক'।
একের পর এক ছবিতে এই নিষ্ঠার গুণেই উত্তমদার প্রকাশ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। সেসব নিয়ে এই নিবন্ধের স্বল্প পরিসরে বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব নয়। বাংলা ছবিতে অভিনেতা হিসেবে উত্তমদার যা অবদান, তার ধারেকাছে কখনও কেউ পৌঁছতে পারবে না। শুধু উত্তম নন, তিনি সর্বোত্তম। ৩ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিন। বেঁচে থাকলে উত্তমদা এবার ৯৮ বছরে পা রাখতেন। পরিচয়ের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই
উত্তমদার সঙ্গে আমার খুব সুন্দর একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অভিনয়ের ব্যাপারে উনি অনেকবার আমাকে সুপরামর্শ দিয়েছেন। এমনকী আমার ব্যক্তিগত জীবনের কিছু কিছু সমস্যার সমাধানেও তাঁর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। উত্তমদার ভবানীপুরের গিরীশ মুখার্জি রোডের বাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করতাম। মাসিমা মেসোমশাই (উত্তমদার মা-বাবা), ভাইরা এবং পরিবারের প্রায় সকলের সঙ্গেই আমার পরিচয় ছিল। মাসিমা ও মেসোমশাই খুব স্নেহ করতেন আমাকে। উত্তমদার বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো ও নানা অনুষ্ঠানে গিয়েছি। খাওয়াদাওয়া, গানবাজনা হতো। উত্তমদা রবীন্দ্রসঙ্গীত ভালো গাইতেন। শুনতেও ভালোবাসতেন।
Denne historien er fra September 2024-utgaven av Sukhi Grihakon.
Start din 7-dagers gratis prøveperiode på Magzter GOLD for å få tilgang til tusenvis av utvalgte premiumhistorier og 9000+ magasiner og aviser.
Allerede abonnent ? Logg på
Denne historien er fra September 2024-utgaven av Sukhi Grihakon.
Start din 7-dagers gratis prøveperiode på Magzter GOLD for å få tilgang til tusenvis av utvalgte premiumhistorier og 9000+ magasiner og aviser.
Allerede abonnent? Logg på
‘উত্তমকুমার দুঃখে কেঁদে ফেলেছিলেন’
মহানায়ক ছিলেন তাঁর বিয়ের বরকর্তা। তাছাড়াও বিভিন্ন ছবিতে নায়ক নায়িকার ভূমিকাতেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। তাই তিনি খুবই কাছ থেকে দেখেছেন উত্তমকুমারকে। মজা করতেন, খেপাতেন তবু মহানায়ক কখনও রুষ্ট হননি তাঁর আচরণে। উত্তমকুমারকে নিয়ে নানা ব্যক্তিগত ঘটনার কথা জানালেন মাধবী মুখোপাধ্যায়।
‘প্রতিভাকে ঘষেমেজে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতেন উত্তমদা’
মহানায়কের সঙ্গে তাঁর অভিনীত বহু ছবি দর্শকমনে প্রবল দাগ কেটেছে। সমালোচকরা বলেন, তাঁর মতো অভিনেত্রী সে যুগে আর কেউ ছিল না। স্বয়ং উত্তমকুমারও তাঁকে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বলে স্বীকার করতেন। মহানায়কের প্রসঙ্গ উঠলেই আজও নস্টালজিক হয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খোলেন উত্তমকুমারের প্রিয় ‘সাবু’ ওরফে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়।
আমার উত্তমদা
মহানায়ক তাঁকে ভীষণ স্নেহ করতেন। ভাইয়ের মতো দেখতেন। শাসন ও করতেন অভিভাবকের মতোই। প্রথম সাক্ষাতে তবু উত্তমকুমারের সঙ্গে কথা বলার সাহস হয়নি তাঁর। পরবর্তীতে একসঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে মহানায়কের স্নেহচ্ছায়ায় এসে সমৃদ্ধ হয়েছেন। মহানায়কের জন্মমাসে তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানালেন মিঠুন চক্রবর্তী।
‘একজন বড় মনের মানুষ '
উত্তমকুমারকে ঘিরে তাঁর স্মৃতির অন্ত নেই। মহানায়কের স্নেহ না পেলে নাকি নিজের ফিল্মি কেরিয়ারই গড়ে তোলা হতো না তাঁর। এছাড়া উত্তমকুমারকে নিয়ে পারিবারিক বিভিন্ন গল্পও রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। সেইসব কথাই জানালেন বিশ্বজিৎ।
‘গানটা ভীষণ ভালো বুঝতেন '
উত্তমকুমারের নিজের গাওয়া গান পরে রেকর্ড করার সুযোগ পান তিনি। তাঁর পছন্দের সারিতে ‘হিরো' হিসেবে উত্তম-ই সেরা। রেকর্ডিং স্টুডিওয় তাঁর গান শুনে খুব খুশি হয়েছিলেন মহানায়ক। ‘ধন্যি মেয়ে'-র গানের মাঝে সংলাপ কীভাবে বলবেন, তাও হাতেকলমে তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন উত্তম। প্রিয় নায়কের জন্মদিনে স্মৃতিতর্পণে গায়িকা আরতি মুখোপাধ্যায়।
বাংলা ছবির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক নায়ক
উত্তমকুমারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল সন্তানতুল্য। মেকআপ রুমের আলাপ-আলোচনা থেকে ব্যক্তিগত স্তরে কথাবার্তা সবই হতো তাঁর সঙ্গে। আজও প্রেমের নায়ক বললে ‘উত্তমকাকু’-তেই ভোট পড়ে তাঁর। মহানায়কের স্মৃতিতে অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়।
‘দাদার ওই বউঠান ডাকটা আজও আমার কানে বাজে’
উত্তমকুমারের সঙ্গে ছবি করতে গিয়ে তাঁর নতুন নামকরণ হয়েছিল ‘বউঠান’। কাজের সূত্রে খুবই কাছ থেকে দেখেছেন মহানায়ককে। প্রতিভাময়, মানবদরদি, হাসিমুখের মানুষটি আজ যে আর নেই, বিশ্বাস হয় না তাঁর। স্মৃতিচারণায় লিলি চক্রবর্তী।
মহানায়ক আজও কেন অনন্য?
উত্তমকুমার এবং সুচিত্রা সেন। পরদার এই জুটিকে নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই আজও। তাঁদের সম্পর্কটা কীভাবে দেখতেন সুপ্রিয়া দেবী? মহানায়কের অন্য সব নায়িকা যেমন শর্মিলা ঠাকুর, তনুজা, অপর্ণা সেনই বা কী বলেন উত্তমকুমারকে নিয়ে? লিখেছেন সুমন গুপ্ত।
‘যত দিন যাচ্ছে বুঝতে পারছি, কী হারালাম
মহানায়ক ছিলেন তাঁদের শ্বশুরমশাই। পারিবারিক বৃত্তের বাইরে ‘বাবি’কে নিয়ে খুব কম কথা বলেন তাঁরা, অর্থাৎ উত্তমকুমারের দুই পুত্রবধূ সুমনা চ্যাটার্জি এবং মহুয়া চ্যাটার্জি। ভবানীপুরের বাড়ির একতলার ঘরে বসে এক ফুরিয়ে আসা বিকেলে স্মৃতির ঝাঁপি মেলে ধরলেন দুই পুত্রবধূ। যে বাড়ির দেওয়াল, ছাদ, কড়িবরগা আজও উত্তমময়।
'জ্যাজান ছিলেন বটগাছের মতো'
মহানায়ক তাঁদের জ্যাঠামশাই। শ্রদ্ধার, আবদারের, ভালোবাসার ‘জ্যাজান’। চ্যাটার্জি পরিবারের বটবৃক্ষ উত্তমকুমারকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন তাঁর দুই ভাইঝি— বরুণকুমারের কন্যা মৌসুমী দত্ত এবং তরুণকুমারের কন্যা মনামী বন্দ্যোপাধ্যায়।