আমি নিজের কোনও গানই কখনও শুনি না:হৈমন্তী শুক্লা

গানজীবনের ৫০ বছর কাটিয়ে ফেললেন তিনি। এখনও নিজেকে দেখেন শিক্ষানবিশ হিসেবে। হৈমন্তী শুক্লার সঙ্গে কথা বলে তাঁর জীবন এবং গানের দর্শন বোঝার চেষ্টা করলেন সায়ক বসু

গানজীবনের ৫০ বছরে এসে 'হৈমন্তী শুক্লা'কে আপনার কেমন শিল্পী বলে মনে হয়? আমার মনে হয়, হৈমন্তী এমন একজন শিল্পী, যে সারাজীবন শিখে গিয়েছে। এখনও শিখছে। আমার জীবনে তো সংসার হয়নি। ভাইবোন সমেত ঘরভরা লোকজন আছে, কিন্তু স্বামী, সন্তান নিয়ে যে ঘর বোঝায়, সেটা কোনওদিন করিনি। গানকে আপন করে নিয়েছি সেই ছোট্টবেলা থেকে। গানই আমার আজীবনের সঙ্গী। আমার খুব আশা, যেদিন চলে যাব,

চলে যাওয়ার কথা শুনব না। বরং জিজ্ঞেস করি যে, সত্তরোর্ধ্ব বয়সে এখনও একীভারে গান গেয়ে তা মনে থাকবে না? তখন আমি খুব ছোট। উল্টোডাঙায় একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল। ছোটবেলা থেকেই আমি পচর গানের PINON বলা করে ে শো, এত গান... কখনও কোনও আক্ষেপ হয়নি? হয়েছে তো। কোনও গানই মনের মতো করে সেদিন যেন গান গাইতে গাইতেই চলে যেতে পারি।

চলে যাওয়ার কথা শুনব না। বরং জিজ্ঞেস করি যে, সত্তরোর্ধ্ব বয়সে এখনও একইভাবে গান গেয়ে যাওয়ার ইচ্ছেটা আপনি পান কোথা থেকে? কোনও কাজ খুব ভালবেসে করলে, সেটা আর জোর করে করতে হয় না ভাই। আমি আমার সাঙ্গীতিক জীবনে বহু প্রতিভার সংস্পর্শে এসেছি। আমার বাবা হরিহর শুক্লা ছাড়াও পণ্ডিত রবিশঙ্কর, ওস্তাদ আলি আকবর খাঁ সাহেব বা ধরুন হেমন্তদা, মান্নাদা, শ্যামল মিত্র...

এঁদের কাছে তো শুধু গান শিখিনি, জীবনে চলার পথে যে সহবৎ লাগে, সেটা শিখেছি। ওঁদের দেখে শিখেছি, গানকে কীভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে রাখা যায়। এখন নতুন প্রজন্মকে দেখলে একটু ধাক্কা লাগে বটে, কিন্তু আমি নিজের জায়গায় অটল থাকার চেষ্টা করি।

আপনার প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্সের কথা মনে আছে? তা মনে থাকবে না? তখন আমি খুব ছোট। উল্টোডাঙায় একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল। ছোটবেলা থেকেই আমি প্রচুর গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। অনেক সময় বড়দের সঙ্গে প্রতিযোগিতাতেও। এবং আমাকে বড়দের জন্য ধার্য পুরস্কারও দিয়ে দেওয়া হয়েছে গান শুনে। উল্টোডাঙায় ওই অনুষ্ঠানে আমাকে গাইতে বলা হয়েছিল। পারিশ্রমিক দিয়েছিল দশ টাকা। আমার প্রথম উপার্জন...