ট্রি ‘ই ই ই ই... শিলাঘাটের ওপর ঘোলাটে আকাশ আর ফ্যাকাসে সূর্যটাকে ঘিরে একটানা পাক মেরে চলেছিল একটা চিল। সকাল এগারোটা মতো হবে। দূরে বেলুড় ঘেঁষা গঙ্গার বুকে মোচার খোলার মতো ভাসতে থাকা দু’-চারটে টালি বওয়া নৌকো। ঘাটের সামনে পুরো রাস্তাটা জুড়ে জমে থাকা থকথকে কালচে রক্ত। একটু আগে এক পশলা টিপটিপে বৃষ্টি ধুয়ে দিতে পারেনি সে দাগকে। পচা গুমসোনো গরমে ঘাটের সামনে চেয়ারে বসে গোটাপাঁচেক ছেলে। ঘাম সপসপে জামা আর হাত মাখামাখি রক্তে। পায়ের কাছে ইতিউতি ছড়ানো কয়েকটা ভোজালি, সোর্ড, বাংলা বা রাম মেশানো বিয়ারের বোতল, মিউরেটিক অ্যাসিডের জেরিকেন আর আলকাতরার টিন। কারও কারও কোমরে উঁচিয়ে থাকা পাইপগানের বাঁটগুলোর উপস্থিতি বেশ ভালরকম টের পাওয়া যাচ্ছে। দলটার নেতা নরেশ সাহা। স্থানীয় নব ঝঙ্কার ক্লাবের পান্ডা। এলাকায় বেশি পরিচিত হোঁতকা নরু নামে। ভুসোকালো গায়ের রং। যমদূতের মতো চেহারা। বুকের তিনটে বোতাম হাট করে খোলা। একটা পা আর-একটা পায়ের ওপর তোলা। কোলের ওপর শোয়ানো একটা পয়েন্ট থ্রি টু কোল্ট রিভলভার। ঘাম জমে নুন হয়ে যাওয়া গলার খাঁজে চিকচিক করছে পাতলা সোনার চেনটা।
পায়ের কাছ থেকে রাম পাঞ্চ করা বিয়ারের বোতলটা তুলে নিয়ে একটা লম্বা চুমুক দিল নরেশ। তার পর চোখ নামিয়ে তাকাল সামনে। হাত দশেক দূরে ঘাটলার সিঁড়ির সামনে ডাঁই করে রাখা দশ-বারোটা ছেলের লাশ। কারও কপালে বুলেটের ছেঁদা, কারও বুক আড়াআড়ি ফাঁক সোর্ডের কোপে। সেদিকে তাকিয়ে চেরা চোখে হিসহিসে একটা হাসি হাসল নরেশ। গলার আওয়াজ সাউদের ওই কাঠচেরাই কলটার মতো ঘ্যাঁসঘেঁসে, “বিপ্লব করবে শুয়োরের বাচ্চারা! বিপ্লব তোদের ইয়েতে ঢোকাচ্ছি।”
নরেশের পাশে বসা হুলো। গুরু কলার পাঞ্জাবি। রাজেশ কাটিং চুল। দড়কচা চেহারা। তোবড়ানো গালে একটা লম্বাটে কাটা দাগ। নরেশের কথায় খ্যাঁকখেঁকিয়ে হেসে উঠল শেয়ালের মতো, “যা বলেছ গুরু। এলাকাটাকে ফুল চায়না বানিয়ে ফেলেছিল শালা মাওয়ের বাচ্চারা!”
This story is from the April 17, 2023 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the April 17, 2023 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
দূর বিনীত রাজনীতি
সমস্ত বয়সি মানুষের একই সঙ্গে এই ভাবে কোনও একটি ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানানো— এ এক কথায় অভূতপূর্ব।
হুমকি সংস্কৃতির অনুপ্রেরণায়
এই জনজাগরণের সময়েও শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্র কেন ধরেই নেয় যে, নাগরিক মাথা নত করে মেনে নেবে এই থ্রেট কালচার?
স্বতন্ত্র একজন রাজনীতিবিদ
১৯৭৭ সালের পাঁচই সেপ্টেম্বর। জেএনইউ-র ছাত্রনেতা সীতারাম একেবারে ইন্দিরা গান্ধীর সামনে দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন। সেই সময়ের চরম আধিপত্যবাদী, জরুরি অবস্থা জারি করা প্রধানমন্ত্রী আচার্য থাকেননি, পদত্যাগ করেছিলেন।
পথের শেষ কোথায়?
বিলের নামের পুরো ভাগে ‘অপরাজিতা' কথাটি বসানো যে এক নির্মম কৌতুক, এটা সরকারের মনে হয়নি! নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ সারা পৃথিবীতে হয়, কিন্তু আমাদের সমাজ যে ভাবে আক্রান্ত হওয়ার লজ্জা নারীর উপর চাপিয়ে তাকে আমরণ হেনস্থা করে তার কোনও তুলনা নেই।
গরিব বলে ফাঁসির দড়ি পরবে
বিভিন্ন আইন সত্ত্বেও অপরাধ কমেনি, তা হলে কি বিচার ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হবে? বরং আমাদের দেশ যেহেতু প্রাণদণ্ড বজায় রেখেছে, প্রাণদণ্ডে দণ্ডিতরা ন্যায্য বিচার পাচ্ছেন কি না সেটা দেখা যাক।
জাইজিসের জাদু-আংটি এবং শাস্তির প্রতীক্ষা
সমান হতে হবে শুধু অপমানে নয়, সমস্ত যন্ত্রণায়, সমস্ত অসহায়তায়, সমস্ত ক্রোধে। তখনই সুনিশ্চিত হবে অপরাধের শাস্তি। অন্যথায় রয়ে যাবে নীতিভ্রষ্ট পৃথিবীতে শাস্তির অনন্ত প্রতীক্ষা।
ঋজু দৃঢ় সঙ্গীতব্যক্তিত্ব
সুচিত্রা মিত্র (১৯২৪২০১১) কেবল গায়কের পরিচয়ে বাঁধা পড়েননি, পৌঁছে গিয়েছিলেন ‘শিল্পী’র আসনে।
স্মৃতিজড়ানো বকুল
তাঁর বাল্য, কৈশোর সব ধরা আছে এই গন্ধের মধ্যে। এত দিন এই গন্ধ তিনি মনে মনে কল্পনা করেছেন। কিন্তু আজ তিনি সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর হারানো বাল্য আর কৈশোরকে।
বার্লিনের ডায়েরি
বার্লিন শহরের মজ্জায় রয়েছে প্রতিবাদ। তার শৈল্পিক বহিঃপ্রকাশ দেওয়ালে ছড়ানো গ্রাফিতিতে—ব্রিজের নীচে, কাফের গায়ে, এমনকি ইউ-বান ট্রেনের দেওয়ালেও।
মিথ ও অপর বাস্তবের চিত্র
প্রকট না হয়েও অন্যরকম একটা পাঠ মিশে থাকে শুভাপ্রসন্ন-র রামায়ণ-বিষয়ক চিত্রাবলীর এই প্রদর্শনীতে।