মাথার ওপর রোম উঠে আছে। কাঁপছে একটু একটু। ডানা ঝাড়ল একবার। ছোট দুটো ডানা নরম হয়ে আছে। নীলচে সবুজ রং। ডানায় এখনও উড়ান লাগেনি। শরীরের হালকা সোনালি আভা ডানাতেও ছড়িয়ে গেছে। চোখের মধ্যে ক্লান্তি আছে। খানিক দুঃখও। পিঠের কাছে আগুনের লাল রং। তথাগত পাখিকে যত্ন করে হাতে তুলে নিল। বেশ রাত। গঙ্গা থেকে ঝিরঝিরে হাওয়া ছেড়েছে। বাঁ দিকে হাওড়া ব্রিজের জুগজুগে আলো। রাস্তাঘাটে লোকজন নেই। শুধু এই পাখি আছে। কিন্তু পাখিকে চেনা যাচ্ছে না। শালিক টিয়া চড়াই ময়না ফিঙে ছাতারে—কোনওটাই নয়, তবে কে ও!
পাখিটার কি খিদে পেয়েছে? তথাগত পাখিকে কোলে রেখে ব্যাগ খুলল। ল্যাপটপের নীচে চাপা পড়ে থাকা বিস্কিটের প্যাকেট থেকে বিস্কিটের গুঁড়ো নিয়ে ধরল পাখির মুখের কাছে। পাখি তথাগতর দিকে তাকাল একবার। তার পর বিস্কিটের গুঁড়ো খেতে শুরু করল। তথাগতর মনে হল বিস্কিটের গুঁড়ো না খেলেও পাখির চলে যাবে। কিন্তু তথাগতর মনে দুঃখ দেবে না বলেই পাখি গুঁড়ো বিস্কিট খাচ্ছে। খেতে খেতে পাখি আর-একটু বড় হল। পিঠের লাল আরও জ্বলজ্বল করে উঠল, চোখ দুটোর ক্লান্তি মুছে গেল, পাখি নীল ঠোঁট বেঁকিয়ে তথাগতকে দেখে যেন একটু হাসল। পাখি কি হাসতে পারে! তথাগত বিভ্রান্ত হল। এই পাখিকে নিয়ে তথাগত কী করবে? সাত নম্বর বাড়ি এখন ঘুমিয়ে পড়েছে। রঘুদা মেন দরজার কাছে চাটাই বিছিয়ে শুয়ে। তথাগত দরজায় আলতো টোকা দিলেই রঘুদা লাফ দিয়ে উঠবে। রঘুদার ঘুম খুব পাতলা। সামান্য শব্দেও ঘুম ভেঙে যায়। রঘুদা গভীর কিন্তু চাপা গলায় জিজ্ঞেস করবে, কে? রঘুদার গলার এই গভীর ভাব আরোপিত। রাত বাড়লে রঘুদা গলার স্বর বদলে ফেলে। রঘুদা মনে করে রাতে চোরডাকাত এলে গলার এই গভীরতা শুনে কিছুটা
থমকাবে। দিনের বাকি সময়ের মিনমিনে স্বর থেকে রঘুদা রাতে ছুটি নেয়। রঘুদার প্রশ্নের উত্তরে এর পর তথাগতও চাপা গলায় বলবে, আমি রঘুদা, দরজা খোলো। রঘুদা এক মুহূর্তও দেরি না করে দরজা খুলবে। কিন্তু তার পর কী হবে! তথাগতর হাতে এই রংবেরঙের পাখি দেখে রঘুদা ঠিক কী বলবে? পাখি এই সময় তথাগতর হাতে নড়েচড়ে উঠল। তারও হয়তো কথা আছে কিছু। যদিও পাখি জানে সব কথা বলতে নেই। নিজে নিজে টের পাওয়া ভাল। তথাগত ভাবল ঝামেলা করে কী হবে, তার চেয়ে পাখিটা যেখানে ছিল সেখানেই থাক।
একে বাড়ি নিয়ে গিয়ে লাভ নেই। তথাগত অফিসে বেরিয়ে যাবে, তখন পাখির দেখাশোনা করবে কে!
This story is from the August 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the August 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
সন্দেহ প্রশাসককেই
গণক্ষোভের মূলে আছে এই ধারণা যে, সরকার তড়িঘড়ি কিছু একটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এত বিদ্রোহ কখনও দেখেনি কেউ
এ দেখা সহজে ভোলার নয়। আগুন ছাইচাপা থাকে, কিন্তু জ্বলে ওঠার কারণ অপসারিত না-হলে তা নিঃশেষে নেভে না—ইতিহাস সাক্ষী।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা
তাই আজ বলতে হবে, গ্রাম থেকে নগর পর্যন্ত, প্রতিটি মানুষের জন্য স্বাস্থ্য-প্রযত্নের ব্যবস্থার দাবি হোক আন্দোলনের অভিমুখ।
নজরদারি-খবরদারি-ফাঁসির দাবি পেরিয়ে
যে-মেয়েটি গাড়ি চালান, তাঁর শেষ প্যাসেঞ্জার নামিয়ে বাড়ি ফিরতে রাত দুটো বাজলে বা যে-মেয়েটি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন, তাঁকে কি বলা হবে যে, রাতে আপনি কাজ করলে প্রশাসন আপনাকে সুরক্ষা দেবে না?
অন্ধকার রাতের দখল
তালিকা আরও প্রলম্বিত হয়ে চলবে, যাঁদের কেউ কর্মক্ষেত্রে অত্যাচারিতা হননি। তাঁদের নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা হবে?
বিচার, বিবেক এবং রাষ্ট্র
সমষ্টি যেখানে সৎ বুদ্ধিসম্পন্ন, কয়েকজন মানুষরূপী অমানুষের জন্য আমরা কি আবার আমাদের কষ্টার্জিত সভ্যতা ভেঙেচুরে অসভ্যে পরিণত হব? নাকি আস্থা রাখব রাষ্ট্রের ওপর? এ ছাড়া আর কি কোনও দ্বিতীয় পন্থা আছে?
এবার সরাসরি বাক্যালাপ হোক
এই রাজ্যের যাঁরা উপদেষ্টা, তাঁরা হাওয়ায় পা দিয়ে চলেন। নারীর অধিকার, নারীর বিচরণের ক্ষেত্র, নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা এগুলো সম্বন্ধে তাঁরা ওয়াকিবহাল নন, তাঁরা অনাধুনিক। মানুষ কী চাইছে, পশ্চিমবঙ্গবাসীর প্রয়োজনগুলি কী, মেয়েদের দরকারগুলি কী—এসব নিয়ে তাঁরা ভাবিত নন।
পারাবারে সংসার
দূর মহাদেশের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে দেয় জাহাজ, কিন্তু সেটি নিজেই এক ভাসমান মহাদেশ। সেখানে সংসার গড়ে তোলার অভিজ্ঞতাও যেন এক গল্প।
পারম্পরিক প্রবাহের সুনির্মিত প্রয়াস
ভবানীপুর বৈকালী অ্যাসোসিয়েশনের এই প্রয়াস ‘অজানা খনির নূতন মণি'-র আবিষ্কারের মতো ভাল লাগার আবেশ সৃষ্টি করে।
শমীবৃক্ষের নীচে
আলোচ্য বইয়ের পুরোটা জুড়েই লেখক মাধব গ্যাডগিল উপযুক্ত বারুদ ছড়িয়ে রেখেছেন।