ঝকঝকে সকাল। আকাশের গায়ে বকের পালকের মতো মেঘ লেগে আছে, জলের রং একেবারে নীল। জাহাজ এসে দাঁড়িয়েছে সিঙ্গাপুর অ্যাঙ্করেজে। কেবিনটা বড্ড অগোছালো। সাড়ে তিন মাসের সংসার গোটানোর সময় এসে গেছে। বেডরুমের এক পাশে সুটকেসটা আধখোলা অবস্থায় পড়ে আছে। আসার সময় যা এনেছিলাম প্রায় সেগুলোই আছে, যোগ হয়েছে শুধু কয়েক বাক্স ব্রাজিলের গ্যারেটো চকলেট। আমার সাত বছরের ছেলে তার অসমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে ব্যস্ত। প্রত্যেককে বাড়ির ঠিকানা দিয়ে বলছে, “কলকাতায় গেলে আমাদের বাড়িতে অবশ্যই যেও।”
সুদীপ্তও আমাদের সঙ্গে বাড়ি যাচ্ছে। আপাতত চাকরির মেয়াদ সম্পূর্ণ। রিলিভাররা স্পিডবোটে করে এসে গেল দেখতে পেলাম। আজ সমুদ্র শান্ত, তাই কোনও সমস্যা নেই। গ্যাংওয়ে নামানো হয়েছে। বোট দাঁড়িয়েছে একদম জাহাজের গা ঘেঁষে। সকলে অনায়াসে জাহাজে উঠছে নামছে। যাওয়ার সময় কিন্তু ব্যাপারটা এত সহজে হয়নি।
গন্তব্য ছিল সিঙ্গাপুর থেকে ব্রাজিল। আমার স্বামী জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার। জাহাজের কাজের দুটো ভাগ, ইঞ্জিন আর ডেক। ইঞ্জিনের দিকের প্রধান হল চিফ ইঞ্জিনিয়ার। ঐ লিস্টের ক্রু একদম শেষে আমাদের নামের পাশে লেখা ‘সুপারনিউমেরারি, অর্থাৎ অতিরিক্ত।
ছোটবেলায় আন্দামানে দেখেছিলাম একটা জাহাজ অনেকদিন ধরে পোর্টে দাঁড়িয়ে থাকার পর হঠাৎ একদিন ভোঁ বাজিয়ে হেলেদুলে চলতে শুরু করল, যেন বিশেষ তাড়া নেই। জাহাজ মানেই গদাইলস্করি চালের একটা কিছু, এটা মনের মধ্যে যেন কী ভাবে গাঁথা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রথম বার জাহাজে আসার পর ধারণাটা সম্পূর্ণ পাল্টে গেল। কী সাংঘাতিক ব্যস্ততার জগৎ এটা! এক মুহূর্তের দেরি মানে কয়েক লক্ষ টাকার লোকসান, কোম্পানির কাছে জবাবদিহির দায়। গোটা জাহাজ যেন একটা ছোটখাটো টাউনশিপ। নিকাশি ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পানীয় জল, সবকিছু সমান জরুরি। প্রথম দিন সকালে পোর্টহোলের পর্দা সরিয়ে দেখেছিলাম সামনে প্রসারিত দক্ষিণ চিন সাগর। আগের রাতের সমুদ্রের সঙ্গে এর কোনও মিল নেই। আজ সে শান্ত, মসৃণ। বিশাল জলরাশির মাঝে জাহাজটা নেহাতই ছোট্ট। চেনা জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন।
This story is from the September 02, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the September 02, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
সন্দেহ প্রশাসককেই
গণক্ষোভের মূলে আছে এই ধারণা যে, সরকার তড়িঘড়ি কিছু একটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এত বিদ্রোহ কখনও দেখেনি কেউ
এ দেখা সহজে ভোলার নয়। আগুন ছাইচাপা থাকে, কিন্তু জ্বলে ওঠার কারণ অপসারিত না-হলে তা নিঃশেষে নেভে না—ইতিহাস সাক্ষী।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা
তাই আজ বলতে হবে, গ্রাম থেকে নগর পর্যন্ত, প্রতিটি মানুষের জন্য স্বাস্থ্য-প্রযত্নের ব্যবস্থার দাবি হোক আন্দোলনের অভিমুখ।
নজরদারি-খবরদারি-ফাঁসির দাবি পেরিয়ে
যে-মেয়েটি গাড়ি চালান, তাঁর শেষ প্যাসেঞ্জার নামিয়ে বাড়ি ফিরতে রাত দুটো বাজলে বা যে-মেয়েটি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন, তাঁকে কি বলা হবে যে, রাতে আপনি কাজ করলে প্রশাসন আপনাকে সুরক্ষা দেবে না?
অন্ধকার রাতের দখল
তালিকা আরও প্রলম্বিত হয়ে চলবে, যাঁদের কেউ কর্মক্ষেত্রে অত্যাচারিতা হননি। তাঁদের নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা হবে?
বিচার, বিবেক এবং রাষ্ট্র
সমষ্টি যেখানে সৎ বুদ্ধিসম্পন্ন, কয়েকজন মানুষরূপী অমানুষের জন্য আমরা কি আবার আমাদের কষ্টার্জিত সভ্যতা ভেঙেচুরে অসভ্যে পরিণত হব? নাকি আস্থা রাখব রাষ্ট্রের ওপর? এ ছাড়া আর কি কোনও দ্বিতীয় পন্থা আছে?
এবার সরাসরি বাক্যালাপ হোক
এই রাজ্যের যাঁরা উপদেষ্টা, তাঁরা হাওয়ায় পা দিয়ে চলেন। নারীর অধিকার, নারীর বিচরণের ক্ষেত্র, নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা এগুলো সম্বন্ধে তাঁরা ওয়াকিবহাল নন, তাঁরা অনাধুনিক। মানুষ কী চাইছে, পশ্চিমবঙ্গবাসীর প্রয়োজনগুলি কী, মেয়েদের দরকারগুলি কী—এসব নিয়ে তাঁরা ভাবিত নন।
পারাবারে সংসার
দূর মহাদেশের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে দেয় জাহাজ, কিন্তু সেটি নিজেই এক ভাসমান মহাদেশ। সেখানে সংসার গড়ে তোলার অভিজ্ঞতাও যেন এক গল্প।
পারম্পরিক প্রবাহের সুনির্মিত প্রয়াস
ভবানীপুর বৈকালী অ্যাসোসিয়েশনের এই প্রয়াস ‘অজানা খনির নূতন মণি'-র আবিষ্কারের মতো ভাল লাগার আবেশ সৃষ্টি করে।
শমীবৃক্ষের নীচে
আলোচ্য বইয়ের পুরোটা জুড়েই লেখক মাধব গ্যাডগিল উপযুক্ত বারুদ ছড়িয়ে রেখেছেন।