পথ

বেটে, কালো এবং মোটা। অদ্ভুত দর্শনের লোকটা এখনও আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। দিনের আলো প্রায় নিবুনিবু। সেই নিভন্ত আবছা আলোয় লোকটার নড়াচড়া আন্দাজ করা গেলেও, চোখ দুটো ভাল ভাবে নজর হয় না। তাঁর দৃষ্টির সঞ্চালনও আমার দৃষ্টির বাইরে। লোকটা কি বদ মতলবের ঘুঁটি সাজাচ্ছে! অনুমান করাও কঠিন। অথচ লোকটা আর আমি ছাড়া কেউ নেই এখানে।
থাকার মধ্যে তেখোচা মার্কা পথ। মাঝে ফাঁকা কিছুটা জায়গা। যেখানে যত গুচ্ছের আবর্জনা গাদ হয়ে ছোটখাটো দুর্গন্ধময় পাহাড় তৈরি হয়েছে। সেই পাহাড়ের চুড়োয় রহস্যজনক ভাবে একটা লাইট পোস্ট আছে বটে, তাতে কোনও বাতির ব্যবস্থা নেই। আর সেখানেই লোকটা দাঁড়িয়ে উসখুস করছে। পেছনে কাঁটাঝোপের জঙ্গল। তার আড়ালে জলহীন বালুহীন খন্দে ভরা নদী। নদীর মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে গেছে ব্রিটিশ আমলের রেললাইন। ওপারে নন্দীকেশ্বরী মহাসতীপীঠ। শান্ত জনপদ। যে জনপদ প্রাচীন কাল থেকে কত মহা ঘটনার সাক্ষী হয়ে এখনও বিদ্যমান। দুই হাত জড়ো করে এক বার কপালে ঠেকিয়ে আড় চোখে কিন্তুত লোকটাকে দেখে নিলাম।
অন্যদিন বাড়ি ফেরার জন্য শেষ বাসটা পেয়েই যাই। আজ পিচকুরিটালে সিগনাল না পাওয়ায় ট্রেন অনেক ক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। তাতেই যা হওয়ার হয়ে গেল। সাঁইথিয়া থেকে দুমকা যাওয়ার শেষ বাস পগারপার। কলকাতা বর্ধমান থেকে কাজ সেরে মানুষ বাড়ি ফেরে এই বাসের ভরসাতেই। স্টেশন থেকে নেমে একটু জোরে পা চালিয়ে ময়ূরাক্ষীর ব্রিজ পেরোলে আমাদের পথ। তখন যা-হোক কোনও বাস লরি কিংবা বাইক-টাইক পেলেও হুড়োহুড়ি কমে। কিন্তু আজ শুধু আমি আর ওই লোকটা।
ঝুপ করে চারপাশের আলো হারিয়ে যায়। বদলে অদূরে বিস্তৃত ধেনো মাঠ থেকে উড়ে আসা শিশিরভেজা ধানগাছের গন্ধ, আর দেহাতিদের ভৈষা-খাটাল থেকে আসা গোমূত্র মিশ্রিত গোবরের ঝাঁঝালো গন্ধ ঘোর নেশাখুরি আবেশ তৈরি করে। সেই অবসরে পথের ওপরে অদ্ভুত আঁধার লুটোপুটি খায়। কোনও স্থায়ী দোকান-পাটও নেই যে তারা আলো জ্বালিয়ে রাখবে। অন্তত কুপি-লম্ফ-হারিকেন-হ্যাজাক কিংবা হাল আমলের অন্য কিছু। ময়ূরাক্ষীর মরা গহ্বর থেকে হা-হা করে শীতের শিরশিরে হাওয়া শরীরের ভেতর পর্যন্ত ফুঁড়ে দেয়। মাফলারটা ভাল করে কানে-মাথায় জড়িয়ে আড় চোখে আরও এক বার দেখে নিই লোকটাকে। ও কি এখনও আমার দিকে তাক করে আছে!
Esta historia es de la edición January 02, 2025 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor ? Conectar
Esta historia es de la edición January 02, 2025 de Desh.
Comience su prueba gratuita de Magzter GOLD de 7 días para acceder a miles de historias premium seleccionadas y a más de 9,000 revistas y periódicos.
Ya eres suscriptor? Conectar

বাঙালির কতটুকু মনমোহন?
গত বছর আমরা হারালাম বেশ কয়েকজন গুণী রাজনীতিবিদকে, যাঁদের মধ্যে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং সীতারাম ইয়েচুরির মতো নেতাদের স্মরণ করা অত্যন্ত জরুরি। মনমোহন সিংহের মতো নেতার অবদান অমূল্য, যদিও তিনি জনগণের কাছে তেমন পরিচিত ছিলেন না।

সংস্কারক
মনমোহন খোলাখুলি জানিয়ে দিলেন, সঙ্কট থেকে মুক্তির জন্য কিছু পদক্ষেপ করতে হবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দুই থেকে তিন বছর সময় লেগে যাবে। রাজকোষ ঘাটতিতে লাগাম পরাতে, শিল্পনীতিতে আমূল পরিবর্তন, অর্থনীতির উদারীকরণের জন্য যা যা করার, সব করা হবে।

রত্নগর্ভা
প্রবালের প্রশ্নে শান্ত, স্থির কিন্তু গভীর ছিল কিছু একটা। রত্না একদমই বিরক্তি অনুভব করলেন, তবে আজ আর কিছু বললেন না।

এক মেধাবী রাজনীতিক
সাউথ ব্লকের সামনে রাইসিনা হিলে পরমাণু চুক্তি নিয়ে সাংবাদিকদের হইচইয়ের মধ্যে দেশের রাজনীতি বদলে গিয়েছিল। মনমোহন সিংহের দৃঢ় নেতৃত্বে ভারত-আমেরিকা পরমাণু চুক্তি ইতিহাস সৃষ্টি করে, যা বিশ্বমঞ্চে ভারতের অবস্থান দৃঢ় করে।

একটি প্রস্তাব এবং
গ্রীষ্মের দুপুরে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে একাকী বসে মোবাইলে ওয়েবসাইট ঘাঁটছিল বর্ষা। ইমেইলে হঠাৎ নির্ঝরের মেসেজ পেয়ে তার মনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল, যেন পুরনো প্রেম ফিরে এসেছে।

খাদকদেবতা
পৌষের হিমেল অন্ধকারে গৌড়বঙ্গের এক পল্লিগ্রামে কালকেতুর তীক্ষ্ণ চোখে ফুটে ওঠে এক ক্রূর হাসি, আর অন্ধকারে প্রবেশের অপেক্ষা। এক গভীর বাসনার প্রভাবেই তার শরীর থেকে মুক্তি পেয়ে সূক্ষ্ম অবস্থানে ধীরে ধীরে চলে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

চালচিত্র
ভাল অভিনয় ও স্মার্ট মেকিং ছবিটিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। হত্যাকারীর মনস্তত্ত্বের গভীরে প্রবেশ করেন দর্শক।

স্বাস্থ্য ক্রমশ অস্বাস্থ্যকর
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এই রাজ্যের ঘটনাপরম্পরা আবারও ইঙ্গিত করছে যে, অবস্থার অবনতি হয়েই চলেছে।

দুই সংস্কৃতির সংলাপ
আলোচ্য গ্রন্থে বাংলা গদ্যের অনুবাদ-সঙ্কলনে ধরা পড়ে ঐতিহাসিক গভীরতা, বিষয় বৈচিত্র এবং বিন্যাস-বৈচিত্র।

বাস্তুভিটে
বাস্তুভিটে নাটকে সময়ের খেলার মাঝে গজমাধব মুকুটমণির ফিরে আসার এক চিত্র। পুরনো স্মৃতি, বর্তমান বাস্তবতা আর ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার দোলাচলে গড়ে ওঠে একটি হৃদয়স্পর্শী গল্প।\"