তৎকালীন রাজা ইন্দ্ররথকে, আজকের বাংলার তৎকালীন শাসক মহীপালকে এবং আজকের বাংলাদেশের চন্দ্র বংশের শেষ রাজা, গোবিন্দচন্দ্রকে। সেরকম ইউরোপেও পঞ্চদশ শতকে ফ্রান্স থেকে শুরু হল ইতালি আক্রমণ। তৎকালীন পোপ, অষ্টম ইনোসেন্টের প্ররোচনায় ফ্রান্সের রাজা, অষ্টম চার্লস নেপলস আক্রমণ করলেন।
এটা ১৪৯৪ সালের কথা। আমরা যখন ইতিহাসে এক দেশ আরেক দেশ আক্রমণের কাহিনি পড়ি, তখন স্বভাবতই ভাবা হয় যে সেই দেশের সেনা চরম জাতীয় আবেগ বুকে নিয়ে শত্রুপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ত। কিন্তু আসল ইতিহাস ছিল এর থেকে সৈন্য। রোম, নেপলস ইত্যাদি দখল তো হল। কিন্তু সেই সঙ্গে এই ফ্রেঞ্চ সেনাদের মধ্যে দেখা দিল এক অদ্ভুত অসুখ। সারা গায়ে ঘা ফুটে ওঠে, জ্বর হয়, তারপর নেমে আসে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু। তখন ইউরোপে প্লেগ, স্মল পক্স ইত্যাদি অসুখ তো ছিলই। এর ওপর শুরু হল এই নতুন মড়ক।
এর পরের বছরেই ইতালির অনেক রাজা একসঙ্গে যুদ্ধ করে ফরনভোর যুদ্ধে অষ্টম চার্লস-এর আর্মিকে হারিয়ে দেয়। স্বভাবতই প্রচুর ফরাসি সেনা বন্দি হল। ৫ জুলাই, ১৪৯৫, এই তারিখে সেই বন্দি শিবিরে রোগী দেখতে আসা এক ইতালীয় ডাক্তার দেখলেন ফ্রান্সের সেনাদের মধ্যে এক বীভৎস রোগ দেখা দিয়েছে। হাতে মুখে ছোট ছোট পুঁজ-ভর্তি দাগ, আর সেই সঙ্গে সারা দেহে চরম যন্ত্রণা। তখন সেই যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা ইতালিয়ান ডাক্তাররা ফ্রেঞ্চ সেনাদের মধ্যে এই অসুখের বাড়াবাড়ি দেখে একে নাম দিলেন ‘ফরাসি পক্স'। এই অসুখের জন্যই কিন্তু সেবারে ফ্রেঞ্চ সেনানী এই যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল। ইতিহাসে এটাই স্বাভাবিক যে বিজয়ী দল বিজিত পক্ষের নামে এক ঘৃণ্য অসুখের নামকরণ করবে। এরপর যুদ্ধ শেষ হল। এই ভাড়াটে সৈন্যরা ফিরে গেল নিজের নিজের দেশে। সঙ্গে নিয়ে গেল এই নতুন অসুখ। এই অসুখ যত ছড়িয়ে পড়তে লাগল, ততই এক গোষ্ঠীর লোক এর নাম দিল অন্য গোষ্ঠীর নামে। যেমন, ইতালীয়রা এর নাম দিল ফরাসি অসুখ, তেমনই ফরাসিরা এর নাম দিল নেপলিটান অসুখ, পোলিশরা এর নাম দিল জার্মান অসুখ। পর্তুগিজরা এর নাম দিল স্প্যানিশ অসুখ ইত্যাদি। আসলে প্রথম থেকেই এই অসুখ ঘিরে এত লজ্জা, কুসংস্কার এবং ভয় সমাজে ঢুকে গিয়েছিল যে সবাই চেষ্টা করত এর দায় অন্য গোষ্ঠীর মানুষের ওপর চাপাতে। তুর্কিরা এর নাম দিল ‘খ্রিস্টানদের অসুখ’! আবার পারস্যে এর নাম হল তুর্কিদের অসুখ!
This story is from the December 2022 edition of Sarir O Sasthya.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the December 2022 edition of Sarir O Sasthya.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
ফল রস করে খাবেন নাকি চিবিয়ে খাবেন?
পরামর্শে আর এন টেগোর হাসপাতালের ডায়েটেশিয়ান সঞ্চিতা শীল
রূপচর্চায় লেবু!
পরামর্শে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিনিয়র আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ সত্য স্মরণ অধিকারী ও রূপবিশেষজ্ঞ কেয়া শেঠ
শুচিবায়ুগ্রস্ত স্ত্রী ও অসহায় এক স্বামীর গল্প
হঠাৎ বিপদে বাড়ির পাশে ডাক্তার পান ক’জন! কিছু ক্ষেত্রে প্রতিটা সেকেন্ড হতে পারে জীবনদায়ী, মূল্যবান। ডাক্তারখানা বা হাসপাতালে যাওয়ার আগে চটজলদি কী করবেন ? পরামর্শে ডাঃ শুভেন্দু বাগ।
হাতে হাতে রোগ ছড়ানো আটকান
শরীরের অন্দরে জীবাণুর অনুপ্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ‘হাত' আমাদের হস্তযুগলের! লিখেছেন বিভাষচন্দ্র মজুমদার।
কেনিয়ার জলে জঙ্গলে
ওয়াইফাই, সভ্যতার উচ্চনাদ থেকে বহু ক্রোশ দূরে কেনিয়ার অরণ্য এখনও বেঁচে আছে আদিম নীরবতাকে আশ্রয় করে। লিখেছেন ডঃ সঞ্জীব রায়।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বয়স্ক রোগীর ত্বকের যত্ন!
পরামর্শে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজের ডার্মাটোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ অরুণ আচার।
শিল্পই তার জিয়নকাঠি
শ্রেয়া ব্রহ্মর বয়স বেশি নয়। তবু তার জীবনীশক্তি, শিল্পকে আঁকড়ে ধরে লড়াইয়ের অদম্য মানসিকতা বহু মানুষকেই হার মানার আগে একবার জেতার কথা ভাবতে বাধ্য করবে। লিখেছেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য।
মানুষকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিচ্ছে সম্পর্ক! ...
নিজেকে কিছু করতে হবে। নিজের পরিচয় তৈরি করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? সেটাই জানেন না অধিকাংশ। এদিকে বাবা-মা বা প্রিয়জনের নামে পরিচিত হতে চাইছেন না অনেকেই। চাইছেন অমুকের ছেলে, তমুকের মেয়ে নয়, তাঁর নামই ‘নাম' হয়ে উঠুক। ছটফটানির সঙ্গে বাড়ছে অস্তিত্ব সঙ্কট। কয়েক দশকের বাঙালি মনে উঁকি দিলেন বিশিষ্ট মনোবিদ ডঃ অমিত চক্রবর্তী। কথা বললেন বিশ্বজিৎ দাস।
গুন্টার ব্লোবেল
এক নাছোড়বান্দা গবেষকের বিস্ময়কর জীবনের কথা লিখেছেন বিভাস মজুমদার।
গেঁটে বাতে নাজেহাল ? সমাধান কী?
পরামর্শে বিশিষ্ট অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়