পুরুলিয়ার সনকূপি এ যে অন্য পাহাড় অন্য অরণ্য

পাহাড় জুড়ে শাল, পিয়াল, বহেড়ার মহড়া। পুরুলিয়ার সনকূপি ভেসে যায় পলাশের শোণিত স্রোতে। বনভূমে বৃক্ষ ছায়াবাসী খাঁটি মানুষের সখ্য আনে তুরীয় মত্ততা। লিখেছেন জগন্নাথ ঘোষ।

একবার পুরুলিয়ার বনাঞ্চলে বসন্ত | সফরে গিয়ে সনকূপি আবিষ্কার হল। তখন মানভূমের দিকে দিকে নবপত্রের কেতন উড়ছে, আর পলাশের ত্য ফায়ার লাইন দূর ইস্তক বিছানো। বনপথের বাঁকে ফুটে আছে কোহলি ফুল, কচি পিয়াল। মাঠা বন আবাসকে পিছে ফেলে, চড়াই ঠেলে দুয়ারসিনি থেকে দক্ষিণের ডাঁহি চাটানের পথ ধরে এগলে ঝাড়খণ্ডের

কুঁকুড়াহাটি, লাপাং, বুরুডি। আর উত্তরের মুখটায় টানটান কুকাবুরু হিল। তার পূর্ব শিয়রে মাঠা পাহাড়, অদূরে মুররা হিল। এই বন-পাহাড়ের পকেটে সনকূপি পলাশঘাঁটি। নিবিড় ফরেস্ট চেম্বারের মধ্যে অনেকটা জঙ্গল হাসিল করে গড়ে উঠল এই ফেরারি ঠিকানা ২০১৫ সালে। বন্যরা বন ছেড়ে ধরল অন্য পথ। পাহাড়ের শিরায় শিরায়

ছড়িয়ে গেল তারা। হরিণ হুড়াল শিয়াল বনের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে দেখে মানুষের হিকমত। দু’পাঁচটা বেকুফ ময়ূর মেঘ ডাকলে কলাপ মেলে এখনও মুজরো করে যায়। লেপার্ড আগেই লোপাট হল বল্লমের খোঁচায়। এখন অযোধ্যা হিলের সেন্দ্রা পরব (শিকার উৎসব) বাঁচিয়ে রেখেছে গুটিকয় শুয়োর, শশক ও কাঁটাচুয়া। ডুচুণ্ডির মোড়ে রামজীবনের চা দোকানে গহন সিং সর্দারের দেখা পেলাম। সর্দার মাঠার ঠাকুর বংশের জমিদার পবন সিং-এর উত্তরসূরি হিসেবে পরিচিত। এক বনকর্মী শুনিয়েছিলেন—গহন সর্দার তাঁদেরই দপ্তরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিল। সহজ কথায় ফরেস্ট গার্ড। সরকারি উর্দি গায়ে চাপিয়ে জঙ্গল রক্ষার খরবদারি তাঁর কাজ। হঠাৎ মনে উদয় হল তাঁর— এই জঙ্গলের মালিক