সাফল্য লাভে একাগ্রতার প্রয়োজন হয় কেন? --

মানুষ শান্তির জন্য চাতকের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ তীব্র অতৃপ্তির দহ ক্রমশ তাদের টেনে নিচ্ছে অনিশ্চিত অতলে! পরম আনন্দময় জীবনে ফেরার আলোকবিন্দু কোথায় তবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই শুরু হয়েছে নতুন বিভাগ। এবারে দিশা দেখালেন প্রব্রাজিকা আপ্তকামপ্রাণা।

• একাগ্রতার অর্থ কী? •• একাগ্রতার অর্থ হল মনকে স্থির করে একটি কাজেই মনোনিবেশ করা। অর্থাৎ যে ছাত্র পড়াশোনা করছে সে শুধু পড়ার প্রতিই সেইসময় মনোযোগ দেবে। যে ভাস্কর মূর্তি গড়ছেন তিনি শুধু ওই মূর্তি গড়াতেই মনোনিবেশ করবেন। যিনি গান করছেন তিনি গানেই তন্ময় হবেন। যিনি বাদ্য বাজাচ্ছেন তিনি শুধু বাদ্যই বাজাবেন! এই প্রসঙ্গে একটি প্রচলিত গল্প বলি। এক পাহাড়ের নীচেই একটি মনোরম গ্রাম ছিল। সেই গ্রামে থাকত একটি ছেলে। সে ছিল ভীষণ দুরন্ত। পড়াশোনার ধার ধারত না। সর্বক্ষণ খেলে বেড়াত তার প্রিয় ষাঁড়ের সঙ্গে। মাঠেঘাটে বেড়িয়ে, পাঁচিলে চড়ে কাটিয়ে দিত বেলা। ছেলেটির বাবা-মা তাই নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত ছিলেন। তাঁরা পাঠশালার গুরুমশাইকে গিয়ে ধরলেন আর একটা বিহিত করতে। তা একদিন পাঠশালার গুরুমশাই ছেলেটিকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন— ‘তুই ঠিক কী করতে বেশি ভালোবাসিস বল তো?’ ছেলেটি উত্তর দিল, আমার শুধু পোষা ষাঁড়ের সঙ্গে থাকতেই বেশি ভালো লাগে। ওর সঙ্গেই থাকতে চাই।' সেই শুনে গুরুমশাই বললেন, ঠিক আছে। তাই হবে। ওই সামনের পাহাড়ের গায়ে এক গুহা আছে। তুই সেই গুহায় ঢুকে একজায়গায় বসে চোখ বুজে শুধু ষাঁড়টার কথা ভাব। শুধু মাঝে মধ্যে খাবার দাবার গুহার মুখে দেওয়া হবে। তুই তাই খাবি।

আগেকার দিনের ব্যাপার। গুরুর কথা মান্য করাই ছিল রীতি। তাই ছেলেটির বাবা-মাও সেকথা মেনে নিলেন। এভাবেই গুহার অভ্যন্তরে ছেলেটি কাটিয়ে দিল তিনচারদিন। গুরুদেব এবার গুহার বাইরে থেকে ছেলেটির নাম ধরে ডাকতে থাকলেন। বললেন ‘বেরিয়ে আয় এবার।' I গুহার অন্দর থেকে উত্তর এল— ‘গুরুদেব, বেরিয়ে তো আসব, কিন্তু আমার শিং জোড়া যে গুহার দ্বারে আটকে যাবে!' অর্থাৎ ওই ছেলেটি সর্বক্ষণ প্রিয় ষাঁড়ের কথা ভাবতে ভাবতে ষাঁড়ের সত্তার সঙ্গে আপন সত্তাকে মিশিয়ে ফেলেছে। অর্থাৎ গুরুমশাই এভাবে ওই বালককে এমন এক