মুঘল রোডে পীর কি গলি
Bhraman|September - October 2024
আমরা দেখলাম বহু স্থানীয় মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে এই দরগার চাতালে বসে প্রার্থনা করছেন।
লেখা ও ছবি: ইন্দ্রাণী গুপ্ত
মুঘল রোডে পীর কি গলি

উত্তর কাশ্মীরের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলি ঘুরে এ বছর জুনের মাঝামাঝি পৌঁছলাম আপেলের শহর সোপিয়ানে। শ্রীনগর থেকে একান্ন কিলোমিটার দূরে এই শহর সোপিয়ান জেলার সদর শহর। মুঘল আমল থেকেই এই শহরটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল নানান কারণে।

বাসস্ট্যান্ডের খুব কাছে আমাদের গাড়িটা এসে থামল। সামনে মস্ত এক চারতলা বাড়ি। নীচের তলায় তলায় দোকানপাট, দোতলায় রেস্তোরাঁ, তিনতলা ও চারতলায় সারি সারি থাকার ঘর, নাম টিউলিপ রেসিডেন্সি।

বেশ ঠান্ডা সোপিয়ানে, পনেরো-ষোলো ডিগ্রি হবে। বিকেল হয়ে এসেছে। গরম জলে হাত-মুখ ধুয়ে, দোতলার রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেয়ে নিলাম। সে রাতে আর বেরলাম না। পরের দিন ভোরে উঠতেই আশাতীত একটা ব্যাপার ঘটল। তিনতলার বারান্দা থেকে দেখি, বিরাট বিরাট তুষারশুভ্র পীরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি হেলান দিয়ে আছে আকাশে। দেখে দেখে আর আশ মেটে না আমাদের।

প্রাতরাশ করে বেরনো হল। গাড়িচালক ইশাকের বোলেরো গাড়িতে শহর ছাড়াতেই মাইলের পর মাইল জুড়ে আপেল বাগান, ঝিলামের উপনদী উপনদী রাম্বী-আরা আর পীরপাঞ্জাল, আমাদের যাত্রাপথ ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু'পাশে যেন সৌন্দর্যের খনি! সোপিয়ানের একটা দিক আগলে রেখেছে পীরপাঞ্জাল।

সোপিয়ান শহর থেকে পথ গেছে শ্রীনগর, অনন্তনাগ ও পুলওয়ামায়। মসৃণ হাইওয়ে ধরে আমরা কান্যিপুর আর চৌঘাম পেরিয়ে এসে পড়লাম মুঘল রোডে। ন্যাশনাল হাইওয়ে ছেড়ে এক ঐতিহাসিক পথে।

আমাদের আজকের গন্তব্য পীর কি গলি হলেও প্রথম আগ্রহ এই মুঘল রোডকে ঘিরেই। অনেক কাল আগে, কাশ্মীরের সোপিয়ান অঞ্চলের হীরাপুর থেকে জম্মুর পুঞ্চ পর্যন্ত এক মেঠো পথ ধরে ভেড়াওয়ালা, বকরাওয়ালা, গুজ্জররা যাতায়াত করত। পীরপাঞ্জাল পর্বত পেরিয়ে আসা এই দুরূহ মাটির রাস্তা বাইরের কারও কাছে বিশেষ পরিচিত ছিল না। চতুর্দশ শতকে, কাশ্মীর সুলতানি রাজত্বে রাস্তাটি আজকের পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের জেলাশহর ভীমপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়। এর পরে ষোড়শ শতাব্দীতে, মুঘল সম্রাট আকবর, কাশ্মীর জয়ের পর নজর দেন এই রাস্তায়। তিনি এটিকে একটি রাজপথে উন্নীত করে এই রুটে জুড়ে দেন লাহোর এবং কাশ্মীরকে। রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে সেনাবাহিনীর যাতায়াত, সাধারণ মানুষের চলাচল এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, সব কিছুই এর ফলে বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী কালে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গির এবং শাহজাহানও রাস্তাটিকে যথেষ্ট ভালো ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করেছিলেন।

This story is from the September - October 2024 edition of Bhraman.

Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.

This story is from the September - October 2024 edition of Bhraman.

Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.

MORE STORIES FROM BHRAMANView All
উমরুকুঠির অতিথি
Bhraman

উমরুকুঠির অতিথি

শীতের মুখে শিকারি পাখি আমুর ফ্যালকন সাইবেরিয়া থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাড়ি দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে। দীর্ঘ উড়ালপথে তারা খানিক বিশ্রাম নেয় আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুরের নানা জায়গায়। আসাম-মেঘালয় সীমান্তের উমরুকুঠি গ্রাম গত পনেরো বছর ধরে তাদের বিশ্রামের এমনই এক আস্তানা। নভেম্বরের অভিজ্ঞতা।

time-read
4 mins  |
November 2024
পথের বাঁকে তিলওয়ারা
Bhraman

পথের বাঁকে তিলওয়ারা

তিলওয়ারার মন্দাকিনী রিসর্টের চত্বরের গাছে গাছে ফুল, ফল আর তার টানে পাখিদের আনাগোনা। মন্দাকিনীর বয়ে চলার নিরন্তর কুলুকুলু ধ্বনিটিও মনে রয়ে যায়। রুদ্রপ্রয়াগ থেকে তিলওয়ারা যেতে আধঘণ্টা লাগে। উখিমঠ থেকে তিলওয়ারা ৩৭ কিলোমিটার।

time-read
1 min  |
November 2024
কাঠমান্ডুতে পাঁচ দিন
Bhraman

কাঠমান্ডুতে পাঁচ দিন

কাঠমান্ডুর প্রাসাদ, মন্দির, স্তূপ, জলপ্রপাত, পাটনের অপরূপ প্রাচীন সব স্থাপত্য আর নাগরকোটের আকাশজোড়া হিমালয় তুষারশৃঙ্গ— পাঁচদিনের এক জমজমাট ভ্রমণকথা । বর্ষার দিনগুলি বাদে যাওয়া চলে সারাবছর।

time-read
10+ mins  |
November 2024
নিস্তরঙ্গ ম্যাকলাস্কিগঞ্জ
Bhraman

নিস্তরঙ্গ ম্যাকলাস্কিগঞ্জ

পথের ধারে বিস্তীর্ণ শালবন, জঙ্গলের মধ্য দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তিরতিরে নদী চাট্টি আর ডুগাডুগি, স্থানীয় মানুষের সরল জীবনযাত্রা, অ্যাংলো সাহেবদের ছেড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি, সব মিলিয়ে শীতের ম্যাকলাস্কিগঞ্জে এক নিস্তরঙ্গ অবসর যাপন করতে ভালো লাগে।

time-read
3 mins  |
November 2024
সন ট্রা পাহাড় ঘুরে পুরনো শহর হোই আন
Bhraman

সন ট্রা পাহাড় ঘুরে পুরনো শহর হোই আন

বিপন্ন প্রজাতির বানর রেড-শ্যাংকড ডুকের বাসস্থান সন ট্রা পাহাড় ভিয়েতনামের দানাং শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার। প্রাচীন বর্ণময় শহর হোই আন যেতে দানাং থেকে লাগে ৪০ মিনিট। বেড়ানোর সেরা সময় শীতকাল। তবে, এপ্রিলে গেলে সদ্যোজাত ডুকছানাদের দেখা মিলবে।

time-read
3 mins  |
November 2024
ওমানের মরুতে মরূদ্যানে
Bhraman

ওমানের মরুতে মরূদ্যানে

ডেজার্ট ক্যামেল সাফারি, জিপ সাফারি, ডেজার্ট ট্রেকিং, স্যান্ড বাইকিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।

time-read
6 mins  |
November 2024
ওড়িশার জলে জঙ্গলে
Bhraman

ওড়িশার জলে জঙ্গলে

নৌকো নিয়ে মংলাজোড়ির জংলাজলায় পাখি দেখে ভিতরকণিকার খোলা থেকে নৌবিহারে একের পর এক কুমিরদর্শন করে সিমলিপাল অরণ্যসফর। ওড়িশার জলে-জঙ্গলে বেড়ানোর সেরা সময় নভেম্বর থেকে মার্চের শুরু পর্যন্ত।

time-read
5 mins  |
November 2024
গাঢ় সবুজ ওয়েনাদ
Bhraman

গাঢ় সবুজ ওয়েনাদ

দিগন্তবিস্তৃত সমভূমি, পাহাড়ের গায়ে একদিকে চা-বাগান, অন্যদিকে জঙ্গল, অরণ্যে ঘেরা হ্রদ— সব কিছু নিয়ে সজল সবুজ ওয়েনাদ। বেড়ানোর সেরা সময় শীতকাল।

time-read
6 mins  |
November 2024
কানাকাটা পাস
Bhraman

কানাকাটা পাস

কুমায়ুন হিমালয়ের সুন্দরডুঙ্গা উপত্যকার দক্ষিণে কানাকাটা পাস। পথের শুরুতেই পেরতে হয় পিণ্ডার আর সুন্দরডুঙ্গা নদী। হাঁটাপথের সাক্ষী থাকে ভানোটি, থারকোট, মৃগথুনি, মাইকতোলি শৃঙ্গেরা। পথে পড়ে পাহাড় ঘেরা দেবীকুণ্ড, নাগকুণ্ড সরোবর। পথের ধারে ফুটে থাকে ব্রহ্মকমল, ফেনকমল ফুল। সাতদিনের এই হিমালয় পদযাত্রা ২০২৩-এর সেপ্টেম্বরের।

time-read
8 mins  |
November 2024
ইন্ডিয়ান স্পট-বিলড ডাক
Bhraman

ইন্ডিয়ান স্পট-বিলড ডাক

আপনিও লেখা-ছবি পাঠাতে পারেন 'বনের পাখি' বিভাগে। পাখিটি কোথায় দেখলেন, পাখিটির বৈশিষ্ট্য ২০০ শব্দের মধ্যে লিখে ছবি-সহ আমাদের দপ্তরে পাঠান। লেখা হতে হবে ওয়ার্ড ফাইলে, ইউনিকোড ফন্টে। পাখির ছবির রেজলিউশন হতে হবে ৩০০ ডিপিআই। মাপ হতে হবে ৮\"x১২\"। সাবজেক্ট লাইনে 'বনের পাখি' (পাখির নাম) লিখে ই-মেল করুন এই ঠিকানায়: bhraman.pix@gmail.​com একসঙ্গে দু'টির বেশি ই-মেল পাঠাবেন না।

time-read
1 min  |
November 2024