উত্তর কাশ্মীরের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলি ঘুরে এ বছর জুনের মাঝামাঝি পৌঁছলাম আপেলের শহর সোপিয়ানে। শ্রীনগর থেকে একান্ন কিলোমিটার দূরে এই শহর সোপিয়ান জেলার সদর শহর। মুঘল আমল থেকেই এই শহরটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল নানান কারণে।
বাসস্ট্যান্ডের খুব কাছে আমাদের গাড়িটা এসে থামল। সামনে মস্ত এক চারতলা বাড়ি। নীচের তলায় তলায় দোকানপাট, দোতলায় রেস্তোরাঁ, তিনতলা ও চারতলায় সারি সারি থাকার ঘর, নাম টিউলিপ রেসিডেন্সি।
বেশ ঠান্ডা সোপিয়ানে, পনেরো-ষোলো ডিগ্রি হবে। বিকেল হয়ে এসেছে। গরম জলে হাত-মুখ ধুয়ে, দোতলার রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেয়ে নিলাম। সে রাতে আর বেরলাম না। পরের দিন ভোরে উঠতেই আশাতীত একটা ব্যাপার ঘটল। তিনতলার বারান্দা থেকে দেখি, বিরাট বিরাট তুষারশুভ্র পীরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি হেলান দিয়ে আছে আকাশে। দেখে দেখে আর আশ মেটে না আমাদের।
প্রাতরাশ করে বেরনো হল। গাড়িচালক ইশাকের বোলেরো গাড়িতে শহর ছাড়াতেই মাইলের পর মাইল জুড়ে আপেল বাগান, ঝিলামের উপনদী উপনদী রাম্বী-আরা আর পীরপাঞ্জাল, আমাদের যাত্রাপথ ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু'পাশে যেন সৌন্দর্যের খনি! সোপিয়ানের একটা দিক আগলে রেখেছে পীরপাঞ্জাল।
সোপিয়ান শহর থেকে পথ গেছে শ্রীনগর, অনন্তনাগ ও পুলওয়ামায়। মসৃণ হাইওয়ে ধরে আমরা কান্যিপুর আর চৌঘাম পেরিয়ে এসে পড়লাম মুঘল রোডে। ন্যাশনাল হাইওয়ে ছেড়ে এক ঐতিহাসিক পথে।
আমাদের আজকের গন্তব্য পীর কি গলি হলেও প্রথম আগ্রহ এই মুঘল রোডকে ঘিরেই। অনেক কাল আগে, কাশ্মীরের সোপিয়ান অঞ্চলের হীরাপুর থেকে জম্মুর পুঞ্চ পর্যন্ত এক মেঠো পথ ধরে ভেড়াওয়ালা, বকরাওয়ালা, গুজ্জররা যাতায়াত করত। পীরপাঞ্জাল পর্বত পেরিয়ে আসা এই দুরূহ মাটির রাস্তা বাইরের কারও কাছে বিশেষ পরিচিত ছিল না। চতুর্দশ শতকে, কাশ্মীর সুলতানি রাজত্বে রাস্তাটি আজকের পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের জেলাশহর ভীমপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়। এর পরে ষোড়শ শতাব্দীতে, মুঘল সম্রাট আকবর, কাশ্মীর জয়ের পর নজর দেন এই রাস্তায়। তিনি এটিকে একটি রাজপথে উন্নীত করে এই রুটে জুড়ে দেন লাহোর এবং কাশ্মীরকে। রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে সেনাবাহিনীর যাতায়াত, সাধারণ মানুষের চলাচল এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, সব কিছুই এর ফলে বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী কালে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গির এবং শাহজাহানও রাস্তাটিকে যথেষ্ট ভালো ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করেছিলেন।
This story is from the September - October 2024 edition of Bhraman.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the September - October 2024 edition of Bhraman.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
আদি কৈলাসের পথে
একটা হোমস্টে। অনন্ত আকাশে কেবল দুটো চিল উড়ছে। প্রায় পনেরো হাজার ফুটে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমায় ঘিরে রেখেছে অসীম, উদার প্রকৃতি।
ত্রিপুরার ডম্বুর দীর্ঘ জলপথ পেরিয়ে এক আশ্চর্য দ্বীপে
আকাশের চাঁদ আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। অন্ধকার সর্বব্যাপী নয়, আলো আছে। আলোর কথা ভেবে আনন্দ হয়।
মারাটুয়ার জলে-জঙ্গলে
বোটচালক একবার মেঘের দিকে দেখছে, একবার জেটির দিকে! আগে আমরা জেটি ছোঁব? না, আগে বৃষ্টি আমাদের ছোঁবে ? রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায় দেখতে থাকি, বোটটা যেন জলের উপর দিয়ে উড়ছে!
তপোভূমি তপোবন
দেখলে মনে হবে, গিরিশিরা ধরে হাঁটতে হাঁটতে শিবলিংয়ের মাথায় চড়া বুঝি সম্ভব। তবে, বাস্তবে শিবলিংয়ের শীর্ষারোহণ অন্যতম কঠিন অভিযান।
পালাসের বিড়ালের খোঁজে মোঙ্গোলিয়া
শহরে এসেও বার বার মনে পড়ে যাচ্ছে উদার, অসীম প্রান্তরে পেয়েছিলাম এক অপার স্বাধীনতার অনুভূতি আর প্রকৃতির সঙ্গে এক প্রত্যক্ষ সংযোগের বোধ।
আন্টার্কটিকা পৃথিবীর শেষ প্রান্তে অভিযান
মাদ্রিদের হোটেলে রাত কাটিয়ে পরদিন আমস্টারডাম ঘুরে নামলাম ব্রিস্টলে।
ড্যানিশ রিভিয়েরা
আর আছে ড্যানিশ ঐতিহ্যের ছোঁয়া। আশেপাশে জেলেদের গ্রাম। জেলেডিঙি ছড়িয়েছিটিয়ে রাখা থাকে সমুদ্রতটেই। সোজা সোজা রাস্তা একেবারে নিরালা !
পাহাড়ি গরিলা আর শিম্পাঞ্জির খোঁজে
গাইডের আশ্বাস পেলাম, একটা না একটা নিশ্চয়ই নীচে নামবে। তাঁর কথা কিছুক্ষণ পরই সত্যি হল।
মুঘল রোডে পীর কি গলি
আমরা দেখলাম বহু স্থানীয় মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে এই দরগার চাতালে বসে প্রার্থনা করছেন।
কানাডার জলে জঙ্গলে
লিসা কখন নিজের হাতে এনে দিয়ে গেছেন জলের বোতল, আপেলের রস আর ওয়েফার। লাঞ্চ প্যাকেট খোলাই হয়নি। পড়েই রইল সেসব।