নয়নাভিরাম কানাতাল

এমন একটা জায়গায় যেতে চাইছিলাম, যেখানে তুলনায় কম পর্যটক যায় এবং প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করা যায়। তাই ঠিক করলাম, কানাতাল যাব।

প্রিলে কলকাতার প্রচণ্ড গরমের হাত থেকে বাঁচতে, পয়লা বৈশাখের দুপুরে হরিদ্বারগামী আপ কুম্ভ এক্সপ্রেসে চড়ে বসলাম। গন্তব্য ছিল হরিদ্বার। পরের দিন নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে প্রায় চার ঘণ্টা পরে হরিদ্বারে এসে পৌঁছালাম। মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেল... ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে এলে সেদিনের গঙ্গারতি দেখতে পেতাম! অক্ষয় তৃতীয়ার দিন চারধাম যাত্রা শুরু হয়। সেই হিসাবে কেদার-বদ্রী অথবা গঙ্গোত্রী-যমুনোত্রীর দিকে যেতে হলে, আমাদের আরও কয়েকদিন হরিদ্বারেই অপেক্ষা করতে হবে। অতদিন অপেক্ষা করার সময় ছিল না। আর এমন একটা জায়গায় যেতে চাইছিলাম, যেখানে তুলনায় কম পর্যটক যায় এবং প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করা যায়। তাই ঠিক করলাম, কানাতাল যাব । পরদিন সকালে হরিদ্বার থেকে কানাতালের উদ্দেশে রওনা দিলাম। সকালের মিঠে রোদে, গঙ্গা তখন কাঁচা সোনার বরণ জল বুকে নিয়ে বয়ে চলেছে। তীব্র স্রোত উপেক্ষা করে, শিকল ধরে পুণ্যার্থীরা স্নানে ব্যস্ত। আকাশ-বাতাস মুখরিত ধুপ-ধুনোর গন্ধে, পূণ্যার্থীদের কলরবে। তারই মাঝে গঙ্গার নয়ন-ভোলানো রূপ দেখতে দেখতে চলে এলাম হৃষিকেশে। সেখানে পথের ধারের দোকানে হরেক রকমের খাবার। আমরা একটা ছোট, পরিচ্ছন্ন দোকান দেখে পরোটা, তরকারি, আচার সহযোগে জলখাবার সেরে, চলে এলাম গঙ্গার উপরের রামঝুলা ব্রিজে। পাহাড়-ঘেরা এই ছোট শহরের বুক চিরে বয়ে গিয়েছে গঙ্গা। আর নদীর দু'পারের শহরকে একসঙ্গে জুড়েছে রামঝুলা ও লক্ষ্মণঝুলা নামের দুটো ঝুলন্ত সেতু। কিছু ক্ষণ রামঝুলার ঝুলন্ত ব্রিজে দাঁড়িয়ে গগনচুম্বী হিমালয়ের সবুজ রূপ আর গঙ্গার বুকে র‍্যাফটিংয়ে যাওয়ার জন্য মানুষজনের উন্মাদনা দেখে, রওনা হলাম গন্তব্যের দিকে।