পালমশায়ের গলার আওয়াজ মিহি ও মৃদু। কথা বলেন শূন্যে আঙুল নাড়িয়ে নাড়িয়ে। মাথার দিকে ক্রমশ সূচালো, লম্বাটে তর্জনীটা দেখে মনে হতেই পারে সযত্নে পালিশ করা গাঁটওয়ালা লতাগুল্মের ডাল দিয়ে তৈরি কোনও সরু তুলি বুঝি। সেটা দিয়ে হাওয়ায় ছবি এঁকে চলেছেন যেন।
আমার সঙ্গে অনেকক্ষণ একভাবে কথা বলতে বলতে গলা শুকিয়ে এসেছে। এই মুহূর্তে এক কাপ লাল চা হলে বেশ হতো। মুখখানা বাইরের ঘরের দিকে ঘুরিয়ে অপাঙ্গে তাকান, নীচের পাতলা ঠোঁটের চাপে স্বরটাকে খানিকটা তুলে বলেন, 'কী গো, শুনছ। দু'কাপ চা দেবে নাকি। মেয়েটা সক্কাল সক্কাল সেই কলকাতা থেকে গাড়ি করে আমাদের বাড়ি বয়ে এসেছে, এসে থেকে এতক্ষণ ধরে এই পালপাড়া নিয়ে, আমাদের পালদের নিয়ে কথা শুনেই যাচ্ছে, ওকে চা-জলখাবার কিছু দেবা তো নাকি?'
ঘরের মধ্যে থেকে ঝাঁঝাল ও কর্কশ এক নারীকণ্ঠ কানে আসে, ‘এখন হবে না, হাত জোড়া আছে। কেন গুপীর দোকান খোলা আছে তো, ওখানেই নিয়ে গিয়ে বসানো হোক না কেন?”
অপ্রস্তুত দেখায় পালমশায়কে। হাজার হোক একজন প্রবীণ মানুষ, দুনিয়াসুদ্ধু লোক ওঁর হাতের কাজ নিয়ে ধন্য ধন্য করে, তার ওপর রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাওয়া কারিগর, বাবাও ছিলেন মৃৎশিল্প জগতে নামজাদা লোক। মহানগর থেকে আসা গবেষক-অতিথির সামনে বাড়ির মহিলার এহেন আচরণে চরম অস্বস্তিতে পড়ে কাদা শামুকের মতো গুটিয়ে যান নিরঞ্জন পাল। আমার দিকে মুখ বাড়িয়ে চাপা গলায় বলেন, ‘আচ্ছা বরং তাই হোক, চলো গুপীর চায়ের দোকানেই বসা যাক। নদীর ধারের হাওয়াও আছে, গুপী পাউরুটি টোস্টটা করেও খাসা।'
পায়ে হেঁটে মিনিট তিনেক গেলেই উঁচু নদী বাঁধ, তার উপরে অগুনতি ঝুরি সমেত প্রকাণ্ড এক বটের ছায়ার এক কোলে গুপীর চায়ের দোকান। চা-বিস্কুটের সঙ্গে দুধের সর, জেলি, বাটার, ডিমের টোস্ট, এমনকী রুটি তরকারিও পাওয়া যায় এখানে। পালমশাই আমার জন্য জেলি-টোস্ট আর নিজের জন্যে এক বড় কাপ র’চা অর্ডার করে বাঁশের বেঞ্চির ওপর পা গুটিয়ে বসেন। হু হু করে হাওয়া আসছে নদীর দিক থেকে, পাটের ফেঁসোর মতো উড়ছে পালমশাইয়ের কণ্ঠা ছাড়ানো দাড়ি, ঘাড় ছোঁয়া পাতলা চুল।
This story is from the December 2024 edition of Sukhi Grihakon.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the December 2024 edition of Sukhi Grihakon.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
মাণ্ডবী নদী ও দুধসাগর
ভারতীয় সংস্কৃতিতে নদীকে ভগবান হিসেবে পূজা করা হয়। নদীর তীরে গড়ে ওঠে সভ্যতা, তাই বোধহয় এই রীতি। লিখেছেন পূর্বা সেনগুপ্ত।
কাছেপিঠে
সপ্তাহান্তের ছোট্ট ছুটিতে যাওয়ার মতো পাঁচটি গন্তব্যের খবর দিলেন তাপস কাঁড়ার।
মেলার টানে
বৈচিত্র্যময় দশটি মেলার সন্ধান দিচ্ছেন অরিন্দম ঘোষ৷
শীতের রূপকথা
শীত মানেই পিকনিক, পিঠে পরব। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এক মায়াবী রূপকথা। লিখছেন অনিরুদ্ধ সরকার।
সীমানা পেরিয়ে
সীমানা পেরিয়ে\" বইটি ঘিরে অর্ক ও রজতের গল্প একদিকে স্মৃতির মধুর পরশ, অন্যদিকে ক্ষতির মর্মব্যথা নিয়ে এক অনন্য রূপ নিয়েছে। বইটি শুধুমাত্র একটি উপন্যাস নয়, এটি অর্কর শৈশব থেকে কৈশোর, বন্ধুতা, এবং জীবনের গভীর অনুভূতির প্রতীক। বইটি হারানোর বেদনাকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর সম্পর্কের জটিলতা ও স্মৃতিচারণার মধুর দোলাচল সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। এটি পাঠককে জীবনের ক্ষণস্থায়ীত্ব এবং অতীতের মায়ার গভীরতায় ডুবিয়ে দেয়।
শেফের রেসিপি
শীতের সময়ে ঘরে তৈরি পুরভরা পরোটা খাওয়ার মজাই আলাদা। আলু বা কপির পুর দিয়ে তৈরি এই পরোটা, গরম গরম খেলে উপভোগ করা যায় একদম আলাদা। আলু পরোটা ও কপির পরোটা, দুইটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু বিকল্প, যা ঘিয়ে ভেজে কিংবা তন্দুরে সেঁকে পরিবেশন করা হয়। এই পরোটা সিজনের সেরা রেসিপি যা শীতকালীন খাবারের স্বাদ আরো বিশেষ করে তোলে।
‘সিনেমার হিরো হওয়ার জন্য ১২ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে'
বছরের শুরুতে সোজাসাপ্টা নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন চট্টোপাধ্যায়। অভিনেতা বিক্রম লিখছেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য।
কলকাতার রোল আর বিরিয়ানি সব খেতাম!
একসময়ে কব্জি ডুবিয়ে খেতেন বাংলা তথা হিন্দি ছবির প্রবীণ এবং জনপ্রিয় অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এখন অবশ্য মেপেজুপে খাওয়া। সাক্ষাৎকারে দেবারতি ভট্টাচার্য।
‘যা বলতে চাই’
কারও অভিনয় জীবন দীর্ঘ, কারও বা সবে শুরু। কেউ আবার ক্যামেরার পিছনে কাজ করতেই বেশি ভালোবাসেন। ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞতা, ভালোলাগামন্দলাগা, চাওয়া-পাওয়া মন খুলে জানাচ্ছেন তাঁরা। এবার কলম ধরলেন অনুরাধা রায়।
ফেলু বক্সী
টলিউডে বিভিন্ন ধরনের ছবি নির্মিত হচ্ছে, তার মধ্যে একটি ছবি ফেলু বক্সীর বিষয়ে কথা বলছেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য।