বম্বে টকিজ....স্বপ্নের অপমৃত্যু

দেবিকা রানিকে স্টার তৈরি করেছিল এই স্টুডিয়ো। যা তৈরি করেছিলেন হিমাংশু রাই। কিন্তু কেন ঘটল ভাঙন? সেই সময়ের গল্প লিখছেন সায়ক বসু

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাছাকাছি এনেছিলেন তাঁদের। না, প্রত্যক্ষভাবে নয়। কিন্তু বিশ্বভারতীর একদা ছাত্র হিমাংশু রাই যখন জানতে পেরেছিলেন, দেবিকা রানি সম্পর্কে গুরুদেবের বংশের, তখন প্রাথমিকভাবে একটা ভাল লাগা তৈরি হয় তাঁর মনে। যদিও হিমাংশু তখন স্টার। ভারতের নির্বাক ছবির। প্রথম ভারতীয় নায়ক, পরিচালক ও প্রযোজক, যিনি নির্বাক ভারতীয় চলচ্চিত্রকে বিশ্বের আঙিনায় নিয়ে গিয়েছেন। 'প্রেম সন্ন্যাস, দ্য লাইট অফ এশিয়া’ তখন পাশ্চাত্যে হইহই করে চলেছে। অন্যদিকে দেবিকা লন্ডনে আর্কিটেকচারের ছাত্রী ছিলেন, একটি বিউটি পার্লারে মেকআপ করতেন অবসরে। দেবিকাও যে আকর্ষিত হয়েছিলেন, সে কথা তাঁর এক সাক্ষাৎকার থেকেই জানা যায়। হিমাংশু তখন মহাভারতের গল্প নিয়ে তৈরি করতে চলেছেন 'আ থ্রো অফ ডাইস’ নামে একটি ছবি। সেই ছবির পোশাকের ডিজ়াইন করেছিলেন দেবিকা। আসলে তার আগে সহকর্মী নিরঞ্জন পালের বাড়িতে প্রথম দেবিকাকে দেখেই তাঁর এত পছন্দ হয়ে যায় যে, নিজের স্ত্রী মেরি হেনলিনের কথা মনেও হয়নি তাঁর। তিনি দেবিকাকে বলেন, এই ছবির প্রোডাকশনে তাঁকে সাহায্য করতে। দেবিকাও রাজি। কারণ তিনি তখন মুক্তি খুঁজছিলেন। ভারতে পিতা-মাতার কঠোর শাসনের কারণে লন্ডনে পালিয়ে এসেছিলেন।

সেখানে পড়তে পড়তে হিমাংশুর সঙ্গে আলাপ যেন তাজা এক ঝলক বাতাসের মতো! কে জানত এই বাতাসই একদিন তাঁদের এনে দাঁড় করাবে আরব সাগরের পাড়ে? যাই হোক, এই ছবির প্রোডাকশনের কাজ করতে করতে হিমাংশু এবং দেবিকার প্রেম খুব স্বাভাবিকভাবেই ঘটে। যেন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। হিমাংশু দেবিকার প্রেমে এমনভাবে পড়েন যে, প্রথম স্ত্রীর জীবন থেকে হঠাৎ যেন উধাও হয়ে যান। ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেন তাঁদের সন্তান