প্রাণ ভরিয়ে

হঠাৎ করে রাস্তায় এক সিনেমাওয়ালা তাঁকে খুঁজে পেলেন। তবে নিজের ভাগ্যকে সেদিন বিশ্বাস করেননি প্রাণ। তাই ফিরিয়ে দিলেন আহ্বান। তবে তাই বলে সিনেমা তাঁর পিছু ছাড়বে কেন! প্রাণের জীবনের অদ্ভুত কাহিনির দ্বিতীয় কিস্তি লিখছেন অংশুমিত্রা দত্ত

- দ্য জেন্টলম্যান

লাহৌরের হীরা মন্ডিতে পান খেতে গিয়ে যে আকস্মিক এক ফিল্মওয়ালার কাছ থেকে বায়োস্কোপে অভিনয়ের ডাক পেয়েছিলেন প্রাণ সিকন্দ, তাকে তিনি মোটেও পাত্তা দেননি। হীরা মন্ডির রঙিন রাতে ঈষৎ অসংলগ্ন অবস্থায় কত লোক কত কথা বলে! ফলে পরের দিন তিনি পঞ্চোলি স্টুডিওয় যাননি। ভুলেই গিয়েছিলেন ওই রাতের কথা। কিন্তু ওয়ালি মহম্মদ ওয়ালি ভোলেননি। সপ্তাহান্তে প্লাজ়া সিনেমায় হঠাৎ ওই প্রাণ নামের ছোকরার সঙ্গে ওয়ালির দেখা! হীরা মন্ডির ভদ্র লেখক তখন উধাও! ওয়ালির রুদ্রমূর্তি দেখলেন প্রাণ। সকলের সামনে পঞ্জাবিতে বাছা বাছা শব্দতে প্রাণকে স্টুডিওয় না যাওয়ার জন্য তুলোধোনা করেছিলেন ওয়ালি সাব! প্রাণের গাফিলতির জন্য স্টুডিও মালিক ডালসুখ পঞ্চোলির কাছে মুখ ছোট হয়েছিল যে। তাঁর রুদ্রমূর্তি দেখে প্রাণ বুঝেছিলেন ব্যাপারটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। পরেরদিনই তিনি স্টুডিওতে গিয়েছিলেন। তাঁকে মেক-আপ করিয়ে ছবি তোলা হয়েছিল বিভিন্ন দিক থেকে। ওই ফোটোশুটটি আজীবন মনে ছিল প্রাণের। শেষ বয়সের একটি সাক্ষাৎকারে প্রাণ বলেছিলেন, 'সারা জীবন ক্যামেরার ফ্ল্যাশের সামনে থেকেছি আমি। কিন্তু ওই প্রথমবারের যে ফোটোগুলো... আমি নিজেকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। খুব ভাল মেক-আপ, দারুণ ছবি, নাকি আমি এত সুদর্শন? এসব ভাবছিলাম। তবে আমার মধ্যে যে আকর্ষণ আছে, সেটা সেই প্রথম বুঝলাম।' ওই ছবি দেখেই ডালসুখ পঞ্চোলি প্রাণকে ‘ইয়ামলা জট’ ছবিতে পার্ট দিয়েছিলেন। ভিলেনের পার্ট।