সাধুসঙ্গে পান্থনিবাসে

‘সারগাছির স্মৃতি’ বইটি স্বামী প্রেমেশানন্দজি মহারাজের সঙ্গে তাঁর সেবক স্বামী সুহিতানন্দজির আধ্যাত্মিক আলোচনা ও অভিজ্ঞতার একটি অনন্য সংগ্রহ। এটি শ্রীরামকৃষ্ণের নির্দেশিত সারগাছি কেন্দ্রের মহত্ব এবং তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে। বইটি জীবনের আধ্যাত্মিক যাত্রা, ব্রহ্মতত্ত্ব এবং সন্ন্যাসী-গৃহস্থ জীবনের তফাতের উপর নানা প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ তুলে ধরে। প্রেমেশ মহারাজের জীবনদর্শন ও শ্রীশ্রীমার আশীর্বাদে লেখা এই বই পাঠকদের আধ্যাত্মিক জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করবে।

- গুঞ্জন ঘোষ

এ সুখ জাগতিক নয় দৈবিক। যে সুখে আত্মার সঙ্গে | পরমাত্মার আলিঙ্গন এ হল সেই সুখ। যা স্মৃতিরূপে ধরা আছে দুই মলাটে। বৈদান্তিক সন্ন্যাসী স্বামী প্রেমেশানন্দজি মহারাজের সঙ্গে তৎকালীন তাঁর সেবক স্বামী সুহিতানন্দজির সঙ্গ-সাক্ষাৎকার নিয়ে ‘সারগাছির স্মৃতি' আন্তরজীবন গঠনের এক আশ্চর্য অভিধান। সারগাছি হল শ্রীরামকৃষ্ণ নির্দেশিত ও স্বামী বিবেকানন্দ রোপিত শিবজ্ঞানে জীব সেবার ‘এপিসেন্টার'। শ্রীরামকৃষ্ণ জ্যোতির্মণ্ডলের দ্বাদশ নক্ষত্রের অন্যতম পূজ্যপাদ স্বামী অখণ্ডানন্দজির হাত ধরে যার সূচনা। অখণ্ডানন্দজি স্বামী আমৃত্যু এই কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর মহাসমাধির পর স্বামী প্রেমেশানন্দজি প্রয়াত মহারাজের স্থলাভিষিক্ত হন। পরে বৃদ্ধাবস্থায় সারগাছি কেন্দ্রেই থাকেন তিনি। টানা ১০ বছর পূজনীয় প্রেমেশ মহারাজের দুর্লভ সঙ্গসুধা ডাইরিতে লিখে রেখেছিলেন পূজনীয় স্বামী সুহিতানন্দজি মহারাজ। বর্তমানে তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্যতম সহ-সঙ্ঘাধ্যক্ষ। তাঁর সেই আশ্চর্যলিপি ‘উদ্বোধন' পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঠক মহলে সাড়া পড়ে যায়। সম্প্রতি রচনাগুলি একত্রে বৃহৎ কলেবরে প্রকাশিত হয়েছে, আরও অনেক তথ্য প্রযুক্ত হয়েছে। আছে শ্রীশ্রীমাকে কাছ থেকে দেখা ভক্তের কথা, প্রেমেশ মহারাজের লেখা বিখ্যাত কালজয়ী সব গানের ইতিহাস ও শ্রীরামকৃষ্ণ সঙ্ঘের বরিষ্ঠ সন্ন্যাসী স্বামী বিশুদ্ধানন্দজি মহারাজের স্মৃতিকথা। এককথায় বলা যায় মহাজীবনের আতস কাচে ফেলে গণজীবনের শুদ্ধিকরণের মহাগ্রন্থ। যা মানুষের হুঁশ ফেরানোর ‘রুট ম্যাপ'। কী আছে এই বইতে? বলাবাহুল্য জন্ম থেকে মৃত্যু— এর মধ্যবর্তী অংশ জুড়ে চলে লাগাতার লড়াই।