প্রকৃতির বিস্ময় নায়াগ্রা

নায়াগ্রার প্রবল গর্জন, ঝাঁপিয়ে পড়া জলরাশি, আর বাতাসে ছড়িয়ে পড়া রামধনুর মোহময়ী সৌন্দর্য মুগ্ধ করে পর্যটকদের। প্রকৃতির বিস্ময় এই জলপ্রপাতের সৌন্দর্য সকাল, দুপুর, রাত— সর্বদাই অপরূপ।

- সৌমিত্র চৌধুরী

উপর থেকে ধাপে ধাপে লাফিয়ে নেমে আসছে বিশাল নদী। প্রবল স্রোত আর তীব্র গতি। নদীর নাম নায়াগ্রা । নদীর বিশাল বুকে স্রোতে ভেসা আসা বিশাল গাছ। ছোট বড় পাথর খণ্ড। পাথরে ধাক্কা খেয়ে বিশাল জলরাশি গর্জন তুলে দ্রুত ছুটে চলেছে। নদীর পাশ দিয়ে পরিষ্কার রাস্তা। রাস্তা ধরে হাঁটছি। প্রবল ঠান্ডা কিন্তু উপভোগ্য। এগিয়ে যাচ্ছি ক্রমশ। নদীর গর্জন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। বুঝতে পারছি বিশ্বখ্যাত নায়াগ্রা জলপ্রপাত বেশ কাছেই। আরও একটু এগতেই জলের ছাট গায়ে এসে লাগল। বিশাল নদী ঝাঁপিয়ে পড়ছে, কোথাও একশো কোথাও দু'শো ফুট নীচে। প্রবল গর্জন। জলের কণা ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে, পথে, পর্যটকদের গায়ে মাথায়। জলের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে রামধনু। নদীর এপার ওপার জুড়ে দুই দেশের মাঝখানে গোটা একটা রেইনবো । রামধনুর একপারে আমেরিকা, অন্য পারে কানাডা।

নদী তুমি কোথা হতে আসিয়াছ? কে জোগান দিচ্ছে নায়াগ্রা নদীর এত জল? সুপিরিয়র, মিচিগান, হুরন ও ইরি হ্রদ জোগান দিচ্ছে। হ্রদগুলোর স্বচ্ছ জল মিশছে নায়াগ্রা নদীতে। নদীটির দৈর্ঘ্য ৫৮ কিলোমিটার। লেক ইরি থেকে অন্টারিও বরাবর উত্তর দিকে ছুটেছে। তারপর সেন্ট লরেন্স নদী। সেখান থেকে গিয়ে মিশেছে আতলান্তিক মহাসাগরে। ইরি হ্রদের অবস্থান উঁচুতে। ইরি হ্রদের জল তিনশো ফুট নীচে অন্টারিও লেকে ঝাঁপ দিয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে অনিন্দ্য সুন্দর বিশাল জলপ্রপাত। আমেরিকা কানাডা দুই দেশ থেকেই দৃশ্যমান। শুধু সৌন্দর্য নয়, দুই দেশের কুড়ি শতাংশ পানীয় জল সরবরাহ করে নায়াগ্রা নদী। আর এই নদীর জলপ্রবাহ কাজে লাগিয়ে তৈরি হয় প্রচুর পরিমাণ জলবিদ্যুৎ।