সৌধ ও সংস্কৃতির রামধনু

প্রাসাদ, স্তূপ, সৌধে সাজানো এ এক অন্য লে ভ্রমণ। সেই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ও মুগ্ধতা ভাগ করে নিলেন শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রা ত ৯টা ৩৫ মিনিটের উড়ান ধরে দিল্লি হয়ে লে। রাত পৌনে বারোটায় দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনাল ২ থেকে লে-র উড়ান ধরতে যেতে হল ৮.৫ কিলোমিটার দূরে টার্মিনাল ১-এ। ভোর ৪.৩৫-এ দিল্লি থেকে লে-র দিকে ওড়া। আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে তুষারাচ্ছাদিত হিমালয়ের চূড়াগুলোর শোভা জানালায় চোখ লাগিয়ে গিলতে লাগলাম। বাইরে এসে দেখি, আশ্চর্য! অতখানি উচ্চতায় অত সকালেও তেমন শীত নেই, গায়ে মামুলি গরম জামাই যথেষ্ট।

রোড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (RCC)-র অতিথিনিবাসে চললাম। সমতল থেকে এক লাফে ১১৪৮০ ফুট উচ্চতায় উঠে আসার পর অন্তত ২৪ ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে বলা হয়। তাই পথেই স্পিটুক মনাস্ট্রি ও ‘হল অব ফেম' দেখে আমি হাঁকপাঁক করলেও সোজা ঢুকতে হল অতিথিশালার ঘরে। মধ্যাহ্নভোজের সময় স্বামী শুভঙ্কর অক্সিজেন মাত্রা মাপতে গিয়ে দ্যাখে, আমার অক্সিজেন ৬২%। মেডিক্যাল ইনস্পেকশন ছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে রিডিং ৯২%। তবু তরুণ সেনা চিকিৎসক আমাকে স্পিটুকের সিঁড়ি ভাঙার অনুমতি দিলেন না। পরিবর্তে দিলেন ওষুধ ও সহাস্য উপদেশ, “ডোন্ট বি আ গামা ইন দ্য ল্যান্ড অব লামা!” ফেরার পথে শুভঙ্কর ও গাড়ির চালককে বলে-কয়ে অদূরে 'হল অব ফেম' দেখাতে সম্মত করালাম। হল অব ফেম আসলে লাদাখের ভূগোল, ইতিহাস, সংস্কৃতির পাশাপাশি সিয়াচেন, আক্সাইচিন থেকে কার্গিল-দ্রাস পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধাভিযানের স্মারক সংগ্রহশালা। ছবিতে দেখলাম, লাদাখিদের মধ্যে একদা পলিঅ্যান্ড্রি বা নারীর বহুবিবাহ প্রচলিত ছিল। তবে সেটা মাতৃতন্ত্র বা মাতৃবংশানুক্রমের কারণে নয়, পৈতৃক সম্পত্তি অবিভক্ত রাখার প্রয়োজনে। অধুনা এই প্রথা অপ্রচলিত। খুঁটিয়ে দেখলে লাদাখ ও তিব্বতি সংস্কৃতিকে ভিন্ন করা মুশকিল।