১৫০ বছরে মিস গওহরজান কলকাত্তাওয়ালি

কারও কাছে শুধুই বাইজি৷ আবার কারও কাছে গুণী সঙ্গীতশিল্পী। হাজারো ইতিহাসের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে গওহরজানের। জন্মশতবর্ষ পার হয়ে আজ তিনি দেড়শোর ঘরে। গওহর-ম্যাজিক তবু অক্ষত। লিখছেন অনিরুদ্ধ সরকার।

ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ অধ্যুষিত শহর কলকাতা। সেখানে সন্ধের দিকে বাবুদের ফিটন গাড়ি চড়ে হাওয়া খেতে বের হওয়ার শখ ছিল বেশ প্রাচীন। সন্ধের কলকাতার রাস্তায় প্রায়শই দেখা যেত তেমনই একখানা সুসজ্জিত দামি ফিটন গাড়ি। কিন্তু সেই গাড়িটায় কোনও বাবু থাকতেন না। থাকতেন এক সুন্দরী। যাকে মাঝেমধ্যেই গাড়ি থেকে নামতে দেখা যেত। সুন্দরীর রূপের জৌলুসে মুগ্ধ আমজনতার তারিফ যেন থামতে চাইত না। তাঁর সাজপোশাক আর গয়নাও ছিল দেখার মতো। ছ’টি ঘোড়ায় টানা দামি ফিটন গাড়িতে চড়ে শুধুমাত্র ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করার জন্য রাস্তায় বেরনো এই স্বাধীন নারীই ছিলেন ‘মিস গওহরজান, কলকাত্তাওয়ালি’। কারও কাছে শুধুই বাইজি, আবার কারও কাছে তিনি গুণী সঙ্গীতশিল্পী। হাজারো ইতিহাসের সঙ্গে নাম জুড়েছে গওহরজানের।

গওহরজানের ফিটন গাড়ি চড়ার আরও একটি কাহিনি বলি। একবার খোদ গভর্নর ফিটন গাড়ি চড়ে বের হয়েছেন রাস্তায়। হঠাৎ তাঁর গাড়ির সামনে চলে আসে গওহরের ফিটন। রাজপরিবারের কোনও সম্ভ্রান্ত মহিলা ভেবে গভর্নর গাড়ি থেকে নেমে টুপি খুলে অভিবাদন জানান গওহরকে। যদিও পরে গভর্নর জানতে পেরেছিলেন যে গওহর একজন বাইজি। ব্যস! তাঁর মেজাজ গেল বিগড়ে। গওহরের বিরুদ্ধে এক হাজার টাকা জরিমানা করলেন তিনি। কারণ সেযুগে গভর্নর বা রাজপরিবারের কোনও সদস্য ছাড়া অন্য কেউ ফিটন গাড়িতে চেপে যাতায়াত করতে পারতেন না। গহওর একজন বাইজি হয়ে কি না ফিটন চড়েন! জরিমানা দিতে হবে শুনে