এক যে আছে গাছ

নীলাঞ্জনাকে কি কাউন্সেলিং করানোর দরকার? কাকে জিজ্ঞেস করবে বর্ণক? কে সঠিক ডাক্তারের হদিশ দিতে পারবে? নাহ্, বর্ণক ভেবে কোনও কুলকিনারা পায় না ৷

- মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়

নীলাঞ্জনা কাঁপছে। বৰ্ণক দু'হাত দিয়ে বুকের ভিতর তাকে আঁকড়ে রেখেছে। তারপরেও নীলাঞ্জনার কাঁপুনি কমছে না। ভয়ার্ত দৃষ্টি নিয়ে জানলার দিকে বারবার দেখছে। নীলাঞ্জনার মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বর্ণক বলে, “ওটা গাছ নীলা। তোমাকে জড়িয়ে ধরবে কেমন করে?' নীলাঞ্জনা আর বর্ণকের বিয়ে হয়েছে মাস ছয়েক। বর্ণকের বাড়ি উত্তরবঙ্গে। চাকরিসূত্রে বসবাস দুর্গাপুরে। প্রপার দুর্গাপুর নয়, টাউনশিপের বাইরে, ডাঙালে। চাকরি বেশিদিন হয়নি বলে এখনও কোয়ার্টার পায়নি। পেতে দেরি হবে। বিয়ের মাসখানেক পর বর্ণকের বাসাবাড়িতে প্রথম পা রাখে নীলাঞ্জনা। ‘এই দেখো নীলা। তোমার সাম্রাজ্য।' বর্ণকের কথায় নীলাঞ্জনা হেসে উঠে বলে, ‘এত তাড়াহুড়ো কোরো না বাপু। নিজের মতো করে একটু দেখেশুনে নিতে দাও।'

“আচ্ছা বেশ। দেখো যত খুশি। আমি ব্যাগদুটো বরং একপাশে সরিয়ে রাখি।' বর্ণক ব্যাগ রাখতে পিছিয়ে যায়। ‘জানো, নতুন জায়গা আমায় সবসময় ভালোলাগায় ভরিয়ে দেয়। বাড়ির চারপাশ আমি ঘুরে দেখি!” নীলাঞ্জনার আগ্রহের আরও একটা কারণ, বর্ণকের মুখে শুনেছিল বাসাবাড়ি হলেও বাড়িটা বেশ সাজানো-গোছানো সুন্দর। নীলাঞ্জনা নিজে খুব শৌখিন। দু'পা এগিয়ে সামনের দরজার কাছে গিয়ে নীলাঞ্জনা

‘তুমি কী গো? এত সুন্দর বাড়িতে এমন একটা বুনো গাছ রেখেছ! কেমন বাঁকানো পাতা, সঙ্গে কত আঁকড়ি! ইশ! দেখেই কেমন গা শিরশির করছে।' বর্ণক হো হো করে হেসে উঠে বলে, ‘তোমার দেখছি গাছগাছালির সঙ্গে একেবারে সখ্য নেই। ‘থামো তো! যত বাজে ইয়ার্কি।' ঝঙ্কার দিয়ে ওঠে নীলাঞ্জনা।