মা ন্ডু, মান্ডব, নাকি মণ্ডপিকা! দুর্গনগরীর পথ আমাদের টেনে নিয়ে চলেছে সমতল পেরিয়ে পাহাড়ের উচ্চতায়। বিন্ধ্যাচল বলে কথা! যাচ্ছি আর দেখছি দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত দুর্গে অরণ্য-প্রকৃতির বাড়াবাড়ি। হালফিলের এগারো হাজার মনুষ্য বসতিতে তেমন জাঁক নেই। চাষের মাঠ। পাতাপুতি সহ সয়াবিন মেশিনে ঢুকছে, খোসা আলগা হয়ে বেরিয়ে আসছে, সদ্য তোলা ভুট্টার সঙ্গে খেতের মাঝে স্তূপাকারে জমছে। পাহাড়ি পথে দু-তিনটি ভগ্নপ্রায় গেট পেরিয়ে দুর্গে ঢোকার পর গলি-সদৃশ একটিই মূল রাস্তা এঁকেবেঁকে চলেছে। পেরিয়ে যাচ্ছে কখনও মুদিখানা আর ওষুধের সব-পেয়েছির দোকান, বিউটি পার্লার, বোতলবন্দি জল, লোহার নিচু প্রাচীরে ঘেরা প্রাসাদোপম সৌধের বাইরে পুরাতত্ত্ব বিভাগের সাইনবোর্ড। খোয়া ওঠা রাস্তার বাঁদিকে ঘিঞ্জি বাজারের সামনে আলু বোন্ডা আর লঙ্কার চপের ঠেলার গায়ে ধ্যানস্থ কোনও বাবাজি, আর তাঁর পাশেই কাকোরি মামলার শহিদ আসফাকউল্লার সাদা কালো ছবি। আবার রাস্তার উল্টোপিঠে তখন পিছনে সরে যাচ্ছে মাহমুদ শাহ খিলজির তৈরি আবাসিক শিল্প-কলাবিদ্যা চর্চাকেন্দ্র, মান্ডু স্কুল অফ আর্টের স্তম্ভ, ভগ্নপ্রায় আশরফি মহল। দেখতে দেখতে জনবসতি কমে দু-পাশে শুরু হল খেত। চেনা আর অচেনা দশাসই বিসদৃশ বৃক্ষ আর প্রাচীন মকবরা, মাজার, প্রাসাদ। এ সব পেরিয়ে চতুষ্কৌণিক প্রায় হ্রদসদৃশ সাগর তালাও-এর পাড়ে সরকারি অতিথি নিবাসে পৌঁছনো গেল। আয়তাকার লেকের অপর পাড়ে সবুজ অনুচ্চ পাহাড়ের ঢাল এসে মিশেছে। চালক মহাশয় জানালেন, “খলজি সুলতানরা এই সাগর তালাও খনন করিয়েছিলেন। টলটলে জলে ভরা লেকের বয়স কম করে পাঁচশো।” মান্ডু জুড়েই এই তালাও আর কূপ, বাউলির ছড়াছড়ি। ভোপাল হয়ে ইন্দোর ছুঁয়ে আসতে আসতে দেখেছি পাড় উপচানো জল বহুদূর অবধি আমবাগান, অর্ধনির্মিত লোহার খাঁচা বেরোনো বাড়িঘর ডুবিয়ে রেখেছে। পর্যটন স্থলে গাড়ির চালকরা গাইডদের মতোই খবরাখবর রাখেন। আমাদের গাড়ি-চালক ধরম রাই বললেন, “গত কুড়ি বছরে এমন বৃষ্টি হয়নি এদিকে।” বলতে বলতেই মান্ডুর পথে উঠল ঝোড়ো হাওয়া, বৃষ্টি শুরু হল। পর্যটন বিজ্ঞাপনেও সর্বত্র বৃষ্টিস্নাত মান্ডুর ছবিই। হবে নাই বা কেন? স্বয়ং বাদশা জাহাঙ্গির দিল্লি থেকে মান্ডু এসে বলেছিলেন, বৃষ্টির সময়ের সৌন্দর্য ও আবহাওয়া এমন অপরূপ ভাবে তিনি অন্য কোথাও দেখেননি! তখন অবশ্য মণ্ডপিকার নাম শদিয়াবাদ।
هذه القصة مأخوذة من طبعة June 02, 2024 من Desh.
ابدأ النسخة التجريبية المجانية من Magzter GOLD لمدة 7 أيام للوصول إلى آلاف القصص المتميزة المنسقة وأكثر من 9,000 مجلة وصحيفة.
بالفعل مشترك ? تسجيل الدخول
هذه القصة مأخوذة من طبعة June 02, 2024 من Desh.
ابدأ النسخة التجريبية المجانية من Magzter GOLD لمدة 7 أيام للوصول إلى آلاف القصص المتميزة المنسقة وأكثر من 9,000 مجلة وصحيفة.
بالفعل مشترك? تسجيل الدخول
ভূতের বাড়ি
প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।
চার দশকের মেট্রো
কলকাতায় মেট্রো রেলের চার দশক পূর্তি এই শহরের গতিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য এক মাইলস্টোন।
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত
ঘরের মাঠে এমন পর্যুদস্ত হওয়া নতুন হলেও প্রত্যাশা থাকুক, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারতীয় দল।
ফিরলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। তাঁর \"আমেরিকা ফার্স্ট\" নীতি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারত, চিন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আনবে তাঁর নতুন প্রশাসন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দর্পণে প্রতিবিম্বিত তাসের ঘর
ওয়াশিংটন ডিসি প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার \"হাউস অফ কার্ডস\"। ফ্র্যাঙ্ক আন্ডারউড ও তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী ক্লেয়ারের ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প, যেখানে ক্লেয়ার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হন।
মেরুকৃত এক সমাজের নির্বাচন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিসের পরাজয় ও ট্রাম্পের জয় গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজের মূল প্রশ্নগুলো নিয়ে নাগরিকদের হতাশা প্রকাশ করে।
বহুরূপী কৃত্তিকা
হেমন্ত আর শীতের সন্ধ্যায় মাথার ওপর কৃত্তিকাকে দেখায় উজ্জ্বল প্রশ্নচিহ্নের মতো। তাকে ঘিরে প্রশ্নও কম নেই।
দিগন্তের আলো
মাদল কুহকের অদ্ভুত টানাপোড়েনের গল্পের প্রতিটি ভাঁজে কেবল একটাই প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে—কুহক কি কখনও তাকে ডেকেছিল? জীবনের আলো-ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, মাদল সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বারবার হারিয়ে ফেলে নিজের পথ। তবু ভিড়ের মাঝে, তার পিছু হেঁটে, কমলা আঁচলের টানে, কুহকের উপস্থিতি যেন বারবার তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
অসমাপ্ত গল্পের পাতা
একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: \"করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে ভোরের মিষ্টি রোদ আড়মোড়া ভাঙছে, চায়ের ধোঁয়া আর পায়রার ঝাঁক জীবনের সাদামাটা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে। ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতি ও স্মৃতির মিশেলে উঠে আসে এক টুকরো রোমাঞ্চকর অনুভূতি।\"
চৈতি-ঝরা বেলায়
মুহূর্তের ছোট্ট বিবরণ ডোরবেলের দিকে হাত বাড়িয়ে রুহানি হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে রাখা একজোড়া মহিলা জুতো দেখে তার মনের ভেতরে কিছু ভাবনা খেলে গেল। সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নেওয়ার পরও বেলটা বেজে উঠল। মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, \"কী রে, এত হাঁপাচ্ছিস কেন?\" রুহানি ঢুকেই ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, \"কে এসেছে মা?\" মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, \"ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।\" মনে হচ্ছে, স্মৃতিকণা কিছু লুকোচ্ছে। মনের ঝড় থামাতে রুহানি একা একা মায়ের ঘরে ঢুকে। ততক্ষণে ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে আর তার পুরনো দিনের কথাগুলো মিলে এক নতুন গল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছে।